১১ দিন পরে তামিলনাড়ুতে
পথে এল বর্ষা, রাজ্য এখনও দূর
সাত দিন পরে অবশেষে কিছুটা গা-ঝাড়া দিল মৌসুমি বায়ু।
আরব সাগরের দিক থেকে বুধবার সে কিছুটা সরে এসেছে দক্ষিণ ভারতের দিকে। এর ফলে নির্দিষ্ট সময়ের ১১ দিন পরে বুধবার শেষ পর্যন্ত তামিলনাড়ুতে ঢুকল বর্ষা। স্বাভাবিক নিয়মে যা ঢোকার কথা ছিল, ২ জুন। এর পরে অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা হয়ে তবে বর্ষা পৌঁছবে দক্ষিণবঙ্গে। সেটা কবে, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আবহবিদেরা।
৫ জুন কেরলে বর্ষা ঢোকার পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা পৌঁছে গিয়েছিল কর্নাটক-গোয়া সীমানায়। কিন্তু যে পথ ধরে বর্ষা সাধারণত এগোয়, তার বিচ্যুতি ঘটেছিল দ্বিতীয় দিনেই। তামিলনাড়ুতে না গিয়ে মৌসুমি অক্ষরেখা আরব সাগর ঘেঁষে এগিয়ে যায়। এ দিন মৌসুমি বায়ু গা-ঝাড়া দিয়ে তার স্বাভাবিক পথে ফিরল বলে মন্তব্য করেছেন আবহবিদেরা। এ বার অনুকূল পরিস্থিতি পেলে সে ধীরে ধীরে উত্তরের দিকে উঠে আসবে।
মৌসুমি বায়ুর উত্তর মুখটি কিন্তু সিকিমে ঢুকে সাত দিন ধরে একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে উত্তরবঙ্গের হিমালয় সংলগ্ন জেলাগুলি বৃষ্টি পেলেও দুই দিনাজপুর এবং মালদহ এখনও বৃষ্টি পায়নি। সেখানে কলকাতার মতোই অস্বস্তিকর আবহাওয়া রয়েছে। সিকিম থেকে মৌসুমি অক্ষরেখা নীচে নেমে না এলে উত্তরবঙ্গের অন্য তিন জেলায় বর্ষা ঢুকবে না বলেই জানিয়ে দিয়েছেন আবহবিদেরা।
দিল্লির মৌসম ভবন জানাচ্ছে, মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ার পরে বর্ষা কোন পথে এগোবে তা নির্ভর করে নিম্নচাপ কিংবা সক্রিয় ঘূর্ণাবর্তের উপরে। আরব সাগরে নিম্নচাপ তৈরি হলে বর্ষার অভিমুখ পশ্চিম ভারতের দিকে ঘুরে যায়। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ তৈরি হলে বর্ষার অভিমুখ থাকে সেই দিকে। তামিলনাড়ু উপকূলের কাছে নিম্নচাপ তৈরি হলে লাভ তামিলনাড়ু এবং অন্ধ্রপ্রদেশের। অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে তা তৈরি হলে লাভ অন্ধ্রপ্রদেশ এবং লাগোয়া ওড়িশার। আর ওড়িশা উপকূলে যদি কোনও নিম্নচাপ তৈরি হয়, তার পুরো লাভ পাবে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ।
এই মুহূর্তে পরিস্থিতি কী? উপগ্রহ চিত্রে দেখা যাচ্ছে, আরব সাগরে কর্নাটক উপকূল ঘেঁষে এবং বঙ্গোপসাগরে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল ঘেঁষে দু’টি দুর্বল নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। তার উপরে কড়া নজর রেখেছেন আবহবিদেরা। তবে ওই দু’টি নিম্নচাপ বর্ষার গতিপ্রকৃতিতে কোনও প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা।
এক আবহবিদের ব্যাখ্যা, “দু’টি নিম্নচাপ রেখা এই মুহূর্তে এতটাই দুর্বল এবং তাদের অবস্থান যেখানে, তাদের পক্ষে মৌসুমি বায়ুকে কোনও ভাবেই সক্রিয় করা সম্ভব নয়। মৌসুমি বায়ুকে সক্রিয় করার জন্য দু’টি নিম্নচাপকেই স্থান পরিবর্তন করতে হবে এবং তাদের শক্তি অনেকটা বাড়াতে হবে।”
কিন্তু আরব সাগরের নিম্নচাপটি যদি মহারাষ্ট্র উপকূলের দিকে সরে গিয়ে শক্তি বাড়ায়, তা হলে কপাল আরও পুড়বে দক্ষিণবঙ্গের। কারণ সে ক্ষেত্রে জলীয় বাষ্প সব টেনে নেবে পশ্চিম উপকূল। বর্ষার অভিমুখও ঘুরে যাবে সেই দিকে। অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলের কাছে থাকা নিম্নচাপটি যদি ওড়িশার দিকে কিছুটা সরে গিয়ে শক্তি বাড়ায়, তাতে লাভ হবে দক্ষিণবঙ্গের। তবে বঙ্গোপসাগরের বায়ুপ্রবাহ দেখে সেই সম্ভাবনা অতি ক্ষীণ বলেই মনে করছেন আবহবিদেরা।
আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, মৌসুমি বায়ু অন্ধ্র-ওড়িশা সীমানায় পৌঁছলে দক্ষিণবঙ্গে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু হবে। তার আগে পর্যন্ত পশ্চিমের জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের মতো পরিস্থিতি থাকবে। পূর্বের জেলাগুলিতে থাকবে অস্বস্তিকর আবহাওয়া। আকাশে মাঝেমধ্যে মেঘলা থাকবে। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.