উপাচার্যের ঘরে ঢুকে ভাঙচুরের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া পাঁচ ছাত্রকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিল রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। বুধবার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃণমূল পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক-সহ ধৃত পাঁচ ছাত্রকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। বিচারক তাঁদের ১৬ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
উপাচার্য চিন্ময় গুহ জানান, এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ধৃত পাঁচ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য এ ব্যাপারে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্জিকিউটিভ কাউন্সিলে আলোচনা হবে বলে জানান উপাচার্য। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে সূত্রের খবর, বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত থেকে কর্তৃপক্ষ সরে আসবেন না। উপাচার্যের বক্তব্যেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। এ দিন তিনি বলেন, “ওই ছাত্রেরা যে ভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে, তা ক্ষমার অযোগ্য। পুলিশ তাদের গ্রেফতারও করেছে। এর পরে আর ওই ছেলেদের বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখা যায় না।”
মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনার পুরো দায় ওই পাঁচ ছাত্রের উপরে চাপিয়ে এ দিন উপাচার্যের কাছে চিঠি দিয়েছেন ছাত্র সংসদের সদস্য ছাত্রেরা। চিন্ময়বাবু বলেন, “ভাল, বিনীত, ভদ্র ছাত্রেরাও তো আছেন। তাঁরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, ওই দিন চার-পাঁচ জন ছাত্র জোর করে তাঁদের হামলা চালাতে নিয়ে এসেছিল।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন স্নাতক স্তরে ছাত্র ভর্তি চলছে। এ বছরই অনলাইনে ভর্তি শুরু হয়েছে রবীন্দ্রভারতীতে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, এত দিন মোটা টাকার বিনিময়ে নির্দিষ্ট আসনের থেকে বেশি সংখ্যক ছাত্র ভর্তির যে ‘ধারা’ চলছিল, অনলাইনে ভর্তির ফলে তা আটকানো গিয়েছে। কিন্তু ছাত্রদের একাংশের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ আসন-সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন, যাতে ছাত্রছাত্রীরা সমস্যায় পড়বেন। এই অভিযোগে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটি রোড ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালান তাঁরা। উপাচার্যের ঘরে ঢুকে টেবিলের উপরে উঠে সিসিটিভি ভাঙা হয় বলেও অভিযোগ।
এ দিনই আবার ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক, ধৃত অলিউর মণ্ডলের বাড়ি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার পাওয়া গিয়েছে বলে জানান উপাচার্য। তিনি এ দিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর কম্পিউটার। কোথা থেকে একটি উধাও হয়ে গেল, সেটা তো সঙ্গে সঙ্গে বোঝা সম্ভব নয়।” পুলিশ অবশ্য এ নিয়ে মুখ খোলেনি।
ধৃতদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সে ব্যাপারে এখনই কিছু জানাচ্ছে না তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। সংগঠনের সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “ওদের ব্যাপারটা আদালতের বিচারাধীন। আইনের বিচারে ওদের কী হয়, সেটা দেখে তার পরে সংগঠন সিদ্ধান্ত নেবে।” |