ঠিক যেন একশো দিনের কাজ প্রকল্পে পুকুর সংস্কার বা রাস্তা তৈরির কাজের কয়েক টুকরো দৃশ্য। মায়ের মাথায় মাটি ভর্তি ঝোড়া। কিন্তু কাঁখে রয়েছে ছোট্ট শিশুটি। পাশে এক পুরুষ শ্রমিক কোদাল হাতে মাটি কোপাচ্ছেন। কাছেই আর এক মহিলা শ্রমিক ঝোড়া থেকে মাটি ঢালছেন।
সিমেন্ট, রড-বালি দিয়ে তৈরি এই সব ছবি নজরে আসবে দুবরাজপুর ব্লক অফিসে ঢুকলেই। তবে এ ধরনের মূর্তি গড়ার উদ্দেশ্য কী? দুবরাজপুরের বিডিও গোবিন্দ দত্ত বলেন, “ব্লক অফিসের সঙ্গে এলাকার উন্নয়নের সম্পর্ক সরাসরি। সেই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার লক্ষ্য নিয়েই সিমেন্টের মূর্তিগুলি বসানো হয়েছে। এ ক্ষেত্রে একশো দিনের কাজের থেকে ভাল বিষয় আর কী হতে পারে। তবে এর জন্য প্রচুর টাকা খরচ করতে হয়নি।”
ব্লক সূত্রের খবর, মোট চারটি ছ’ফুট উচ্চতার সিমেন্ট মূর্তি এবং স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিষয়ক দু’টি ওয়াল রিলিফের কাজের জন্য স্থানীয় এক শিল্পী পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়েছেন। যা কাঁচামাল ও পরিশ্রমের দাম ছাড়া কিছু নয়। |
জেলা প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ২০১১-২০১২ আর্থিক বছরে একশো দিনের কাজের টাকা খরচের নিরিখে বীরভূম জেলা রাজ্যে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এক নম্বরে ছিল বর্ধমান। কিন্তু আয়তন ও পঞ্চায়েত ভিত্তিক টাকা খরচের পরিমান ও কর্মদিবস সৃষ্টির হিসেবে ধরলে এই জেলা এক নম্বরে আসে। দুবরাজপুর ব্লকের একশো দিনের কাজও যথেষ্ট সন্তোষজনক বলে দাবি করেছেন জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি দুবরাজপুরেরই পদুমা পঞ্চায়েত ভাল কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী দফতর থেকে পুরস্কৃত হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে দুবরাজপুর ব্লকের এমন উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এসডিও সদর চন্দ্রনাথ রায়চৌধুরী বলেন, “খুব ভাল উদ্যোগ। ব্লকে প্রচুর মানুষ আসেন। ওই মূর্তিগুলি দেখে তাঁরা একশো দিনের কাজ প্রকল্প সম্পর্কে উৎসাহী হবেন। বিশেষ করে মহিলাদের মূর্তিগুলি ওই কাজে অংশ গ্রহণে মহিলারাও সমান উৎসাহী হবেন।”
জাতীয় কর্ম সুনিশ্চিৎকরন প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার সুপ্রিয় অধিকারী বলেন, “আমি বিষয়টি জানি না। তবে এই মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের সবচেয়ে বড় প্রকল্প একশো দিনের কাজ। সেটাকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে বিডিও যদি কোনও ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন সেটা অবশ্যই প্রশংসার যোগ্য।” |