কয়েক দিন আগেই বনহ্যামস-এর নিলামে রেকর্ড গড়েছিল ভারতীয় চিত্রশিল্পী জাহাঙ্গির সবাভালা-র ছবি ‘সান্ধ্যসঙ্গীত’ (দু’লক্ষ ১০ হাজার পাউন্ড)। অথচ সোদবি-র নিলামে অবিক্রীত রয়ে গেল সৈয়দ হায়দার রাজা, মকবুল ফিদা হুসেন এবং ফ্রান্সিস নিউটন সুজার তিনটি ছবি।
গত শুক্রবার দক্ষিণ এশীয় শিল্পকলার একটি বড় মাপের নিলাম আয়োজন করেছিল সোদবি। ৮৮টি শিল্পদ্রব্যের মধ্যে বিক্রি হয়নি ৫১টিই। ১৯৭১ সালে সৈয়দ হায়দার রাজার আঁকা বিখ্যাত ছবি ‘লা ফোর্জ’-কে এই নিলামের মুখ্য আকর্ষণ বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। আশা করা হয়েছিল, ৩-৪ লক্ষ পাউন্ড দাম পাবে ছবিটা। সঙ্গে ছিল হুসেনের ‘ইসলাম’ এবং সুজার ‘উওম্যান উইথ ফ্লাওয়ার অ্যান্ড মিররস’। সোদবি’র তরফে লেইলা ডেবেলগে বলেন, “এই তিনটি ছবি বিক্রি হয়নি ঠিকই। কিন্তু নিলামের আগে এই ছবিগুলো নিয়েই যথেষ্ট উদ্দীপনা ছিল। নিলামের পরে হয়তো এগুলো নিয়ে আবার খোঁজখবর শুরু হবে।” সুজার অন্য ছবি ‘গোয়ান ল্যান্ডস্কেপ’ অবশ্য বিক্রি হয়েছে ৬৮ হাজার ৪৫০ পাউন্ডে। |
সোদবি-তে এমন বিপর্যয় ঘটল কেন? মার্চেও এক বার সোদবি-তেই অবিক্রীত থেকে গিয়েছিল সৈয়দ হায়দার রাজার একটি ছবি ‘ভিলেজ উইথ চার্চ’। এ বার বিক্রি হল না ‘লা ফর্জে’। অথচ নব্বইয়ের কোঠায় পা রাখা এই শিল্পীর ছবির কদর বিদেশের বাজারে এমনিতে যথেষ্ট ভাল। সবেমাত্র এক বছর পূর্ণ হয়েছে হুসেনের মৃত্যুর। তাঁর ছবি নিয়েও ক্রেতাদের আগ্রহ থাকবে বলে ভাবা হয়েছিল। সোমবার ক্রিস্টি-র নিলামেও হুসেনের ১৯৫৮ সালের একটি ছবি ভাল দর পাবে বলে প্রত্যাশা ছিল। ছবিটি বিক্রি হয়নি। অথচ গত বছরের রেকর্ডের পর এ বারেও ক্রিস্টিতে সবচেয়ে বেশি দাম পেয়েছেন তৈয়ব মেটা। তাঁর ‘মহিষাসুর’ ৪-৫ লক্ষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না করলেও দু’লক্ষ ৮০ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়ে এই নিলামের শীর্ষ স্থান পেয়েছে। কিছুটা দাম কমিয়ে বিক্রি হয়েছে সৈয়দ হায়দার রাজার ১১টি ছবিও।
|
ভারতীয় ছবির বাজার তা হলে ভাল না খারাপ? নিলাম বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ২০০৬-২০০৮ বিদেশের বাজারের ভারতীয় শিল্পীদের সবচেয়ে সুসময় গিয়েছিল। গত বছর থেকে বাজার মন্দা হয়েছে। গত বছর মার্চে ভারতীয় ছবির সামগ্রিক বিক্রি ২৭ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। সেপ্টেম্বরে পড়েছে আরও ৯ শতাংশ। মাঝেমধ্যে জাহাঙ্গির সবাভালার একটা ছবি বা তৈয়ব মেটার একটা ছবি ভাল দাম পেলেও সার্বিক ভাবে বাজারের অবস্থা খুব ভাল নয়। তার মধ্যে অনেক সময়ই ছবির দাম বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিহীন ভাবে বেশি রাখা হচ্ছে বা একই ধরনের ছবি বারবার নিলামে ওঠায় উৎসাহ কমছে বলেও অভিযোগ। যেমন, সুজার যে ছবিটি এ বারে সোদবি-তে বিক্রি হল না, সেটা দু’বছর আগে ক্রিস্টিতেও বিক্রি হয়নি। অথচ এ বারেও সোদবি-তে তার দাম কমিয়ে ধরা হয়নি।
আপাতত সকলের চোখ এখন সোদবি-র নভেম্বরের নিলামের দিকে। বাজার ঘুরল কি না, সেটা তখনই বোঝা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। |