জমি অধিগ্রহণের সমস্যা এবং নানা জটিলতার জেরে উত্তর ২৪ পরগনায় রেলের প্রস্তাবিত তিনটি প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন থমকে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সব মহলের মধ্যে সমন্বয় রেখে সেই সব সমস্যা মিটিয়ে দ্রুত কাজ শুরু করার জন্য তিনটি পৃথক কমিটি গড়ল তৃণমূল।
বনগাঁ-চাঁদাবাজার রেলপথ, বনগাঁয় মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে স্টেডিয়াম এবং মছলন্দপুর-স্বরূপনগর রেলপথ নির্মাণ রেলের এই তিন প্রকল্প ২০০৯ সালে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বছরেরই ৫ ডিসেম্বর প্রথম দু’টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন তিনি। পরের বছর এপ্রিলে তৃতীয় প্রকল্পটির শিলান্যাস হয়। জটিলতা কাটিয়ে এবং সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে জমি অধিগ্রহণ করে প্রকল্পগুলি যাতে দ্রুত শুরু করা যায়, সে জন্য শনিবার গোবরডাঙা পুরসভায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে একটি সভা ডাকা হয়। সেখানেই সাংসদ গোবিন্দচন্দ্র নস্করের নেতৃত্বের তিনটি আলাদা কমিটি গঠন করা হয়। সাংসদ ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, উদ্বাস্তু পুনর্বাসন মন্ত্রী মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর, দলের বিধায়ক, বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারম্যান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং পঞ্চায়েত প্রধানেরা। ছিলেন পূর্ব রেলের কয়েক জন কর্তাও। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “প্রকল্পগুলির কাজ
সুষ্ঠু ভাবে করার জন্য সাংসদ গোবিন্দচন্দ্র নস্করের নেতৃত্বে ৩টি আলাদা কমিটি গড়া হয়েছে। |
কমিটিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিধায়ক, পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বা পুরসভার চেয়ারম্যানরা থাকছেন। তাঁরা সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রেল কর্তৃপক্ষের
সঙ্গেও সমন্বয় রাখবেন। কাজের অগ্রগতির বিষয়ে ৩ দিন অন্তর বৈঠকে বসবে কমিটি। রেলমন্ত্রী মুকুল রায় শীঘ্রই কমিটির সঙ্গে আলোচনা করবেন।”
তৃণমূল সূত্রের খবর, বনগাঁ-চাঁদাবাজার রেলপথ নির্মাণের জন্য ২৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন প্রস্তাবিত স্টেডিয়ামের জন্য ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেলের যে জমিতে (আর এস মাঠ) স্টেডিয়ামটি হওয়ার কথা, সেখানে বসবাসকারী ৩০টি পরিবার পুনর্বাসনের দাবি তুলেছে। এর পিছনে সিপিএমের ইন্ধন রয়েছে, এই অভিযোগ তুলে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, “ওই পরিবারগুলির পুনর্বাসনের ব্যবস্থা বনগাঁ পুরসভা করে দেবে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। জমি অধিগ্রহণের সমস্যাও দ্রুত মিটে যাবে।” প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ অমিতাভ নন্দী বলেন, “রেলের কোনও প্রকল্পের কাজেই আমরা বাধা দিচ্ছি না। আমরা শুধু চাই, রেলের জমি অধিগ্রহণের ফলে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তাঁদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।” |