ইউরো কাপ শুরুর চার দিন আগেই বর্ণবিদ্বেষের কালো ছায়া ঢুকে পড়ল অন্যতম আয়োজক দেশ ইউক্রেনের প্রধান শহর খারকিভে। শনিবার একটি ম্যাচ চলাকালীন স্টেডিয়ামের মধ্যেই এক দল গুণ্ডার হাতে আক্রান্ত হলেন পাঁচজন এশীয় ছাত্র। লাথি, ঘুষি তো বটেই, বর্ণবিদ্বেষী গালিগালাজও দেওয়া হয় তাদের। এই ঘটনা ইউক্রেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
একটি নামী টিভি চ্যানেলের দেখানো ছবির সূত্র ধরলে দেখা যাচ্ছে, ইদানীং পোল্যান্ড আর ইউক্রেনে বর্ণবিদ্বেষের ঘটনা নতুন নয়। গত সপ্তাহেই বিবিসি-র প্যানোরমা শো-তে পরিষ্কার দেখানো হয়, কী ভাবে দু’টো দেশেই গুণ্ডারাজ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। এমনকী প্রাক্তন ইংল্যান্ড ডিফেন্ডার সল ক্যাম্পবেল সংখ্যালঘুদের সতর্ক করে বলেছেন, “বাড়িতে বসে টিভিতেই ইউরো উপভোগ করুন। মাঠে এলে কফিনে চড়ে বাড়ি ফিরতে হতে পারে।”
ক্যাম্পবেলের সতর্কবাণী পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে সম্প্রতি ওই দু’দেশের বিভিন্ন স্টেডিয়ামের মধ্যে বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনায় আতঙ্ক আরও বেড়ে গিয়েছে। যেমন খেলা দেখতে আসা নাৎসিদের বার-বার অভিবাদন জানানো কিংবা স্টেডিয়ামে উপস্থিত সংখ্যালঘু সমর্থকদের ‘বাঁদর’ বলে তীব্র ব্যঙ্গ করা। যদিও ইউরোর আয়োজক এবং পোল্যান্ড সরকারের দাবি, “ফুটবলার হোক কিংবা সমর্থক, ইউরো কাপে যারা আসবেন সবাইকে যথাযথ সুরক্ষা দেওয়া হবে। ইউরোর জন্য অনেক আগে থেকেই পোল্যান্ডের পুলিশ সুরক্ষার নীল নকশা তৈরি করে রেখেছে। আমরা যে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামলানোর জন্য তৈরি। প্রত্যেক স্টেডিয়ামে ৮০০০ স্থানীয় পুলিশ রাখা হচ্ছে।”
কিন্তু এ সবের পরেও কি ইউরো কাপ ফুটবলার কিংবা সমর্থকদের জন্য পুরোপুরি নিরাপদ? সমকামী, ইহুদি ধর্মাবলম্বী এবং জাতিবাদীদের রক্ষা করতে নেমে পড়েছেন সমাজসেবীরা। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রচুর ‘আলট্রা’ বাহিনী (ফুটবল মাঠের গুণ্ডা)-কে দেখা যাচ্ছে পোল্যান্ডের নানা স্টেডিয়ামে। যাদের মুখে নৃশংস স্লোগান, “ইহুদি জাতির মৃত্যু চাই।” ক্রাকোর ইহুদি সাংস্কৃতিক সেন্টারের অন্যতম সদস্য জোনাথন ওনস্টেইন বলেছেন, “ফুটবল স্টেডিয়ামে যে সব ঘটনা ঘটছে, তা এক কথায় নৃশংস এবং চরম লজ্জাজনক। এ সব ঘটনা গোটা দেশের পক্ষেই লজ্জার।”
ফুটবল মাঠে বর্ণবিদ্বেষমূলক ঘটনায় তীব্র বিরক্ত ফুটবলাররাও। ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র তারকা ফুটবলার মারিও বালোতেল্লি হুমকি দিয়েছেন যে, স্টেডিয়ামে বর্ণবিদ্বেষের শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে মাঠে ছেড়ে বেরিয়ে যাবেন তিনি। অন্য দিকে ইংল্যান্ডের বেশ কয়েকজন কালো চামড়ার ফুটবলারের পরিবার আতঙ্কে মাঠেই আসছেন না খেলা দেখতে। থিও ওয়ালকট এবং অ্যালেক্স অক্সলেড চেম্বারলেনের পরিবার যার মধ্যে অন্যতম।
|
রাশিয়ার কাছে তিন গোল খেল ইতালি
সংবাদসংস্থা • জুরিখ |
ইউরো কাপ শুরুর আগে বড় ধাক্কা খেল সিজার প্রান্দেল্লি-র ইতালি। একই সঙ্গে ডিক অ্যাডভোকাটের রাশিয়া আবার টুর্নামেন্টে পৌঁছবে এক বুক আত্মবিশ্বাস নিয়ে। ইউরো কাপের আগে শেষ প্র্যাক্টিস ম্যাচে জুরিখে রাশিয়া ইতালিকে ৩-০ হারাল। আলেক্সান্ডার খারজাখভের গোলে এ গিয়ে গিয়েছিল রাশিয়া। শেষ দিকে দু’গোল করেন রোমান শিরোকভ। যোগ্যতা অর্জন পর্বে ১০ ম্যাচে মাত্র দু’গোল খাওয়া ইতালির রক্ষণ এ দিন রাশিয়ার আক্রমণের কোনও জবাব খুঁজে পায়নি। |