ইউরো কাপ শুরুর আগে জার্মান ফুটবলারদের সাহস জোগাচ্ছেন প্রাক্তন কোচ বার্তি ফোকস। যাঁর হাত ধরে শেষ ট্রফি ঢুকেছিল জার্মানিতে। ১৯৯৬ ইউরো কাপ। সেই সঙ্গে সাবধান করছেন বর্তমান কোচ জোয়াকিম লো-কে।
ফোকস বলছেন, “আমার কাজ ছিল সে বছরের ইউরো কাপ জেতা। জার্মান কোচ হিসাবে ট্রফি জেতাটাই তো কর্তব্য।” আরও এক ধাপ এগিয়ে ফোকসের বক্তব্য, “না জেতাটাই তো বরং লজ্জার।” ফুটবলারদের উদ্দেশে বলছেন, “ইউরো কাপটা জার্মানিতে ফেরত আনার সময় এসেছে। এই মুহূর্তে আমরাই বিশ্বের সবচেয়ে ভাল দল। ছেলেদের সেটাই প্রমাণ করতে হবে।” বর্তমান কোচ লো আবার আগেই বলে দিয়েছেন, “হেরে গেলে দায়িত্ব ছেড়ে দেব।”
|
আগামী সপ্তাহে জার্মানি পুরো দল নিয়ে হাজির হবে পোল্যান্ডে। তার দিন তিনেক আগে জার্মান ফুটবল সংস্থার একটি দল ঘুরে গেল পোল্যান্ডের অসউইৎজ এবং বিরকেনাউ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি জার্মানির নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটানোর সেই কুখ্যাত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প। তার ৩ কিলোমিটার দূরে বিরকেনাউতে ছিল গ্যাস চেম্বার। হিটলারের নির্দেশে যেখানে লাখ-লাখ ইহুদিকে মারা হয়েছিল। জার্মানরা সেখানে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। জার্মানির এই দলটায় ছিলেন জার্মান ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট উলফগ্যাং নিয়ের্সবাখ, অধিনায়ক ফিলিপ লাম, কোচ লো এবং জার্মান ফুটবল দলের দুই পোল্যান্ডজাত ফুটবলার মিরোস্লাভ ক্লোসে এবং লুকাস পোদোলস্কি এবং ম্যানেজার অলিভার বিয়েরহফ।
জার্মান ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট নিয়ের্সবাখ জানিয়েছেন, তাঁদের দেশের সব ক্লাবে তরুণ ফুটবলারদের শেখানো হয় তাঁদের মধ্যে যেন কখনও না ইহুদি বা অন্য কোনও জাতি-বিদ্বেষ দেখা দেয়। যে দেশের রাষ্ট্রনেতা হিটলারের লক্ষ্য ছিল খাঁটি জার্মানদের নিয়ে দেশ গড়ে তোলা, সেই জার্মানির ফুটবল দলে এখন বেশ কিছু দেশের প্রতিনিধি। পোল্যান্ড-জাত পোদোলস্কি ও ক্লোসে তো আছেনই। তুর্কী বংশোদ্ভূত মেসুট ওজিল মাঝমাঠের অন্যতম ভরসা। স্যামি খেদিরার বাবা তিউনিশিয়ান। জেরোম বোয়াতেং-এর বাবা ঘানাইয়ান।
|
পোল্যান্ডে পুরনো নাৎসি শিবিরে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধারত জার্মান ফুটবলারররা।
অধিনায়ক লাম,
ম্যানেজার বিয়েরহফের সঙ্গে দুই পোল্যান্ড জাত জার্মান তারকা
পোদোলস্কি ও ক্লোজে। ছবি: এ এফ পি। |
টুর্নামেন্ট শুরুর আগে অন্য অনেক দলই চোটের জন্য তারকা ফুটবলারদের হারাচ্ছেন। তখন বাস্তিয়ান সোয়াইনস্টাইগারের সুস্থ হওয়ার খবর জার্মান শিবিরে পৌঁছে গেল। উচ্ছ্বসিত লো-র কথায়, “সোয়াইনস্টাইগারের কোনও চোট নেই। ও এখন টিমের সঙ্গে সোমবার বা মঙ্গলবার থেকে অনুশীলন করবে।” তাঁকে ছাড়া জার্মানি সুইৎজারল্যান্ডের কাছে হেরেছে ৩-৫। পরের ম্যাচে ইজরায়েলকে হারিয়েছে ২-০। ২০১২-তে এটাই প্রথম জয় জার্মানির। ফেব্রুয়ারিতে ফ্রান্সের কাছেও হেরেছিল লো-এর ছেলেরা। সতর্কিত লো বলছেন, “শেষ পরীক্ষার ভাল ফল দলকে উজ্জীবিত রাখবে। তবে সব কিছু খুব মসৃণ ভাবে চলছে না। আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে।” গোলকিপার নুয়েরের কথায়, “ইজরায়েলের বিরুদ্ধে জয়টা এসেছে দলের সবার ভাল পারফরম্যান্সে। ওরা সবাই মিলে রক্ষণে মন দিয়েছিল।”
|
সম্ভাব্য প্রথম দল |
গোলকিপার: নুয়ের (বায়ার্ন মিউনিখ)
ডিফেন্ডার: বোয়াতেং (বায়ার্ন), মার্তেস্যাকার (আর্সেনাল), ব্যাডস্টুবের ও লাম (বায়ার্ন) (অধিনায়ক)
মিডফিল্ডার: সোয়াইনস্টাইগার (বায়ার্ন), খেদিরা ও ওজিল (রিয়াল মাদ্রিদ), পোদোলস্কি (কোলন), মুলার (বায়ার্ন)
ফরোয়ার্ড: গোমেজ (বায়ার্ন)
|
|
বেঞ্চে থাকবেন যাঁরা |
গোলকিপার: উইয়েজ (ব্রেমেন), জিয়েলার (হ্যানোভার) ডিফেন্ডার: স্মেলজার (ডর্টমুন্ড), হাউয়েডেস (শালকে), হুমেলস (ডর্টমুন্ড) মিডফিল্ডার: গুন্ডোগান (ডর্টমুন্ড), ক্রুস (বায়ার্ন), বেন্ডার (লেভারকুসেন), গোতজে (ডর্টমুন্ড), রেউস (মনচেনগ্ল্যাডবাখ) ফরোয়ার্ড: স্কার্লে (লেভারকুসেন), ক্লোজে (লাজিও) |
|
|