বেঁচে থাকতে ‘বিহারের ত্রাস’ বলে পরিচিত ছিলেন রণবীর সেনার প্রধান ব্রহ্মেশ্বর সিংহ ওরফে মুখিয়া। একাধিক গণহত্যাতে জড়িত ছিল তাঁর নাম। তাঁর শেষযাত্রাকে কেন্দ্র করেও ছড়িয়ে পড়ল হিংসা। উত্তপ্ত হয়ে উঠল রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা।
কাল সকালে ভোজপুরের নওয়াদা থানার কাতিরা এলাকায় ছয় দুষ্কৃতীর গুলিতে খুন হন ব্রহ্মেশ্বর। আজ তাঁর মরদেহ নিয়ে শেষযাত্রায় বের হন সমর্থক-অনুগামীরা। সেই শেষযাত্রা যত এগিয়েছে, ততই বেড়েছে হিংসার ঘটনা। পুলিশ ফাঁড়ি, বাসে আগুন লাগানো থেকে শুরু করে যানবাহন ভাঙচুর, পথ অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ—কোনও কিছুই বাকি রাখেননি মুখিয়ার অনুগামীরা। রাজ্যবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। তিনি জানান, ব্রহ্মেশ্বরের খুনিদের ধরতে তদন্ত চলছে।
বিহার বিজেপি-র সভাপতি সি পি ঠাকুর এবং বেশ কয়েক জন বিজেপি বিধায়ক ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান ব্রহ্মেশ্বরকে। তার পরে তাঁরা যোগ দেন প্রাক্তন রণবীর সেনাপ্রধানের অন্তিম যাত্রায়। |
পটনায় জ্বলছে গাড়ি। নেভানোর চেষ্টায় ব্যস্ত এক পুলিশকর্মী। ছবি: পি টি আই |
এক সময়ে সি পি ঠাকুরকে গাড়ি থেকে টেনে নামায় ক্ষুব্ধ জনতা। শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। সি পি ঠাকুরের গাড়ি লক্ষ্য করে পাথর ছোড়া হয়। এ ছাড়াও ক্ষুব্ধ সেনা সমর্থকরা বিভিন্ন রাস্তা অবরোধ করেন। কয়েক ঘণ্টার জন্য অবরোধ করা হয় বেলি রোডও। বিহটা, দানাপুর, সাগুনায় সমস্ত যানবাহন থামিয়ে দেওয়া হয়। বহু পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন লাগানো হয়। ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বহু গাড়িতে। পুলিশ সূত্রের খবর, একটি সরকারি বাসেও আগুন লাগানো হয়েছে।
ব্রহ্মেশ্বরের মৃহদেহ বংশঘাট শ্মশানে পৌঁছতে সেখানেও ছড়িয়ে পড়ে হিংসা। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন রণবীর সেনার কর্মী-সমর্থকরা। ডেপুটি পুলিশ সুপারের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়।
ব্রহ্মেশ্বর খুন হওয়ার পরেই পরিস্থিতি সামাল দিতে আরায় কার্ফু জারি করা হয়। পরে কার্ফু তুলে নেওয়া হলেও জারি করা হয় ১৪৪ ধারা। গোটা রাজ্য জুড়েও জারি রয়েছে চূড়ান্ত সতর্কতা। কিন্তু যাবতীয় সতর্কতা সত্ত্বেও রাজ্যজুড়ে হিংসার ঘটনা রোখা যায়নি কিছুতেই। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ বৈঠকে বসেন ডিজি-সহ রাজ্যের উচ্চপদস্থ পুলিশকর্তারা। মৃত্যুর পরেও বিতর্ক পিছু ছাড়ল না মুখিয়ার। |