দশ মিনিটের আগুনে লন্ডভন্ড হাওড়া স্টেশন
কেবল লাইনে আগুন লেগে বিপত্তি বাধল হাওড়া স্টেশনে।
পূর্ব রেল সূত্রের খবর, শনিবার দুপুরে হাওড়া স্টেশনের পুরনো কমপ্লেক্সের এক নম্বর গেটের উপরে কেবললাইনে আগুন লেগে যায়। এর জেরে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে স্টেশন চত্বর। বন্ধ হয়ে যায় কম্পিউটারাইজড টিকিট সংরক্ষণ ব্যবস্থা। স্টেশনের সমস্ত ডিসপ্লে বোর্ড ও টিভি-ও বন্ধ হয়ে যায়। স্টেশন সুপার, ডেপুটি স্টেশন সুপার-সহ অন্য দফতরেও আলো ছিল না। ঠিক ওই সময়ই তিন তলার যাত্রী প্রতীক্ষালয় থেকে নামার সময় লিফটের মধ্যে আটকে পড়েন তিন যাত্রী। প্রায় আধ ঘণ্টা পর তাঁদের উদ্ধার করা হয়। অন্ধকারে মোমবাতি জ্বালিয়ে কাজ শুরু করেন রেল কর্মীরা। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রেল দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় ট্রেন চলাচলে কোনও বিঘ্ন ঘটেনি।
হাওড়া স্টেশনের পূর্ব দিকের দেওয়ালের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত রয়েছে বিভিন্ন দফতরের প্রায় শতাধিক কেবললাইন। এর মধ্যে বিদ্যুতের কেব্লও রয়েছে। এ দিন দুপুর পৌনে দু’টো নাগাদ এক নম্বর গেটের উপর ওই কেবলদিয়ে প্রথমে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেখান দিয়ে আগুনের ফুলকি বেরোতে শুরু করে। মূহুর্তের মধ্যে কালো ধোঁয়া আর পোড়া গন্ধে ভয়ে যায় স্টেশন চত্বর। এ দিন এমনিতে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় ছিল বেশি। আগুন লাগার পরই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তাঁরা। অনেকেই ভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন।
নেই বিদ্যুৎ। অন্ধকারেই দাঁড়িয়ে যাত্রীরা। শনিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
সেই সময় এক নম্বর গেট দিয়ে বড়বাজার যাওয়ার জন্য লঞ্চ ধরতে যাচ্ছিলেন বাউড়িয়ার বাসিন্দা হালিম মল্লিক। তাঁর কথায়, “যে ভাবে শব্দ করে আগুনের ফুলকি ঝরছিল তাতে সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। কালো ধোঁয়ায় শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তবে রেল রক্ষী বাহিনী ও রেল কর্মীরা ১০ মিনিটের মধ্যে আগুন নিভিয়ে ফেলেন।” প্রায় একই অভিজ্ঞতা লিফটের মধ্যে আটকে থাকা কোচবিহারের বাসিন্দা দেবাশিস চৌধুরীর। তিনি বলেন, “প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে অন্ধকার লিফটে আটকে থেকে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। আর কিছু ক্ষণ ও ভাবে থাকলে হয়তো বাঁচতামই না।”
পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, দশ মিনিটের মধ্যে আগুন নিভে গেলেও এর প্রভাব পড়ে গোটা স্টেশন চত্বর জুড়ে। আগুন নেভার পরে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টিকিট কাউন্টারের সামনে শ’য়ে শ’য়ে যাত্রীর ভিড় জমেছে। প্রায় আধ ঘণ্টা কম্পিউটারাইজড টিকিট সংরক্ষণ ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় এই বিপত্তি। স্টেশনের ডিসপ্লে বোর্ডগুলি তখনও বন্ধ। যাত্রীরা বুঝতে পারছেন না কোন ট্রেন, কোন প্ল্যাটফর্মে থেকে কখন ছাড়ছে বা আসছে। টিভি চলছে না, জ্বলছে না আলো-পাখাও।
আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধানের জন্য পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষ একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করছে বলে জানিয়েছেন স্টেশন সুপার সমীর চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “ঠিক কী কারণে এই আগুন লাগল তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে তবেই কারণ বলা যাবে।”
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.