ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের সাধারণ সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহকে বরণ অনুষ্ঠানে শনিবার বিশেষ ‘ত্রাতা’র ভূমিকায় দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানের মঞ্চে এক দিকে রাখা ছিল বিজ্ঞান কংগ্রেসের প্রথম সভাপতি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের প্রতিকৃতি। অনুষ্ঠানের ঘোষিকা এক সময় জানান, প্রধানমন্ত্রী মালা দেবেন ওই প্রতিকৃতিতে। কিন্তু মালা কোথায়? তা নেই। এবং প্রধানমন্ত্রী দৃশ্যত অপ্রস্তুত। |
সেই মুহূর্ত। টেবিলে রাখা ফুল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। রয়েছেন রাজ্যপাল
এম কে নারায়ণনও। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিকী হলে শনিবার। —নিজস্ব চিত্র |
পরিস্থিতি সামাল দিলেন তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মমতা। মালা নেই তো কী, মমতার চোখে পড়ল অনুষ্ঠানে সাজানো টেবিলে রয়েছে কাঠিতে বাঁধা গোলাপ ফুল। দ্রুত তা-ই তিনি এগিয়ে দিলেন মনমোহন সিংহের হাতে।
আর প্রধানমন্ত্রীও সেই ফুলটিই রাখলেন আশুতোষের প্রতিকৃতির সামনে।
পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরঞ্জন দাস পরে বলেন, “মালা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ নিরাপত্তারক্ষীরা তার অনুমতি দেননি। তাই শেষ পর্যন্ত আর মালা রাখা হয়নি।”
অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেন, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে কলকাতায় একটি বিশেষ বিজ্ঞান মিউজিয়াম গড়ে তোলা হোক। পশ্চিমবঙ্গে জেলায় জেলায় বিজ্ঞানকেন্দ্র গড়ে তোলার আশাও ব্যক্তি করেন তিনি। মমতা বলেন, “এ দেশের বিজ্ঞানীরা আজ তাঁদের প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন বিশ্ব জুড়ে। ভারতীয়রা আছেন নাসা থেকে ভাষা পর্যন্ত সব জায়গায়।” মুখ্যমন্ত্রী বোঝাতে চেয়েছেন, ভারতীয়রা বিজ্ঞানে যেমন, সাহিত্যেও তেমনই সারা পৃথিবীতে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখছেন। |
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাচ্ছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
কলকাতা বিমানবন্দরে শনিবার অশোক মজুমদারের তোলা ছবি। |
জগদীশচন্দ্র বসু, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, সত্যেন্দ্রনাথ বসু এবং মেঘনাদ সাহার কৃতিত্ব স্মরণ করে মমতা বলেন, “ওই সব মনীষীর অবদানেই আজ বাঙালিরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে।” এ রাজ্যে প্রতিভার যে বিশাল ভাণ্ডার আছে, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে রাজ্যবাসীরা যে সব কৃতিত্ব দেখিয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যের, দেশের এমনকী পৃথিবীর নানা সমস্যার সমাধানে পথ দেখাতে পারেন বিজ্ঞানীরাই। বাঙালি বিজ্ঞানীরাও তাঁদের সাফল্যের মাধ্যমে ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে নেতৃত্ব দিন। |