সর্বোচ্চ ন্যাভ (নেট অ্যাসেট ভ্যালু) অনুযায়ী টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া মিউচুয়াল ফান্ড প্রকল্পগুলিকে বাজার থেকে তুলে নেওয়া হবে বলে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিল বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ। অন্য দিকে, পেনশন প্রকল্পের জন্য গ্রাহকের কাছ থেকে অর্থ জমা নিলে, সেই সংস্থাকে অ্যান্যুইটি (প্রতি মাসে পেনশন বাবদ নির্দিষ্ট টাকা) প্রকল্প চালু রাখতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে তারা।
শনিবার কলকাতায় আইআরডিএ আয়োজিত সভায় এই দুই ঘোষণা করেন সংস্থার চেয়ারম্যান জে হরি নারায়ণ। ঝুঁকি কমিয়ে গ্রাহকদের লগ্নি আরও সুরক্ষিত করার পাশাপাশি তাঁদের জন্য উন্নত পরিষেবা নিশ্চিত করতেই এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বাজার ধরতে সর্বোচ্চ ন্যাভ অনুযায়ী টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে বিভিন্ন মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থা। ধরা যাক, কেউ ১০০ টাকায় এ ধরনের পলিসি কেনার পর বাজার বাড়তে থাকায় এক সময়ে ন্যাভ দাঁড়াল ১৫০ টাকা। কিন্তু পরে বাজারের পতনের ফলে মেয়াদ শেষে তা নেমে এল ১২০ টাকায়। সে ক্ষেত্রে ওই সব প্রকল্পে গ্রাহককে টাকা মেটানোর সময় সর্বোচ্চ ন্যাভের ভিত্তিতেই (১৫০ টাকা) পাওনার হিসাব করতে হবে। এই ধরনের প্রকল্পই তুলে নেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত দেন নারায়ণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, মিউচুয়াল ফান্ডের রিটার্ন সব সময়েই শেয়ার বাজারের ওঠা-পড়া নির্ভর। তাই সেখানে সর্বোচ্চ ন্যাভ অনুযায়ী টাকা ফেরতের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অতিরিক্ত ঝুঁকি নিচ্ছে মিউচুয়াল ফান্ড। তা বন্ধ করতেই বিমা নিয়ন্ত্রকের এই উদ্যোগ।
তা ছাড়া, আগে কোনও বিমা সংস্থা ইক্যুইটি-লিঙ্কড পেনশন প্রকল্পের জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিলে, মেয়াদ শেষে অ্যান্যুইটি দিতে বাধ্য ছিল না। অর্থাৎ বাজারের ওঠা-পড়ার উপর ভিত্তি করে এক লপ্তে প্রাপ্য টাকা গ্রাহককে দিয়ে দিলেও, প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অঙ্ক দেওয়ার মতো প্রকল্প চালুর বাধ্যবাধকতা ছিল না। এ বছরের গোড়ায় নয়া নিয়ম চালু করে আইআরডিএ। তার পর থেকেই এই নীতি শিথিল করতে বার বার আর্জি জানিয়েছে বিমা সংস্থাগুলি। কিন্তু এ দিন সেই সম্ভাবনা খারিজ করে চালু নিয়মই বহাল রাখেন নারায়ণ। |