গুজরাতে নতুন গাড়ি কারখানা গড়া নিয়ে পরিচালন পর্ষদ আগেই অনুমোদন দিয়েছিল। শনিবার জমি কেনার চুক্তি করে ও প্রথম দফায় ৪ হাজার কোটি টাকা লগ্নির কথা জানিয়ে তাতেই পাকাপাকি শিলমোহর দিল মারুতি-সুজুকি। হরিয়ানার বাইরে এটাই এ পর্যন্ত তাদের বৃহত্তম লগ্নি বলে দাবি সংস্থার।
গত ২০১১ সালের ২৯ অক্টোবর মারুতি-সুজুকির পরিচালন পর্ষদ গুজরাতের মেহসানা জেলায় জমি কেনার ব্যাপারে অনুমতি দিয়েছিল সংস্থাকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের ইঙ্গিত, নগদের অভাবেই এত দিন চূড়ান্ত লগ্নি আটকে ছিল এই প্রকল্পে। এ বার সেখানে প্রাথমিক পর্যায়ে ৪ হাজার কোটি টাকা লগ্নির কথা জানিয়ে রাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করল মারুতি-সুজুকি। লগ্নির সময়সীমাও জানিয়েছে সংস্থা। কারখানা ২০১৫-’১৬ সালের মধ্যে চালু হবে বলে সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে। জমি কেনার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে চুক্তিতে সই করেন মারুতি-সুজুকি ইন্ডিয়া-র সিইও শিনজো নাকানিশি এবং গুজরাতের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি (শিল্প ও খনি) মহেশ্বর সাহু। হাজির ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “গাড়ি শিল্পের ক্ষেত্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার লগ্নি-কেন্দ্র হয়ে উঠছে গুজরাত। টাটা ন্যানোকে দিয়ে এই যাত্রার শুরু। তার পর একে একে রাজ্যে পা রেখেছে ফোর্ড, পেজোঁ এবং এখন মারুতি। এ সবই আন্তর্জাতিক লগ্নির গন্তব্য হিসেবে ‘ব্র্যান্ড গুজরাত’-এর গুরুত্বই তুলে ধরছে।” |
অনুষ্ঠানে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নাকানিশি। ছবি: এপি |
মেহসানার কাছে অনগ্রসর মণ্ডল-বেচারাজি তালুকে ৭০০ একর জুড়ে গড়ে উঠবে নতুন কারখানা। বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা ২.৫ লক্ষ গাড়ি। তবে বাজারে গাড়ির চাহিদা অনুযায়ী দফায় দফায় বেড়ে তা ওই পর্যায়ে পৌঁছবে বলে সংস্থার দাবি। প্রাথমিক ভাবে জমি কেনা ও কারখানার নির্মাণ বাবদই বিনিয়োগ করা হবে ওই ৪ হাজার কোটি টাকা। সংস্থার বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, গুড়গাঁও ও মানেসর কারখানা মিলিয়ে বছরে তৈরি হয় ১৭.৫ লক্ষ গাড়ি। গুজরাত যোগ হলে ২০১৫-’১৬-র মধ্যে তা ২০ লক্ষ ছোঁবে। কারখানা চালু হলে সেখান থেকে মুন্দ্রা বন্দর মারফত গাড়ি রফতানি করা হবে।
নতুন কারখানায় সরাসরি ২ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থান হবে বলে সংস্থা জানিয়েছে। পাশাপাশি, কারখানা ঘিরে গড়ে ওঠা সহয়োগী সংস্থাগুলি বাড়তি কর্মসংস্থান তৈরি করবে বলে তাদের আশা। ওই সব সংস্থা মারুতিকেই যন্ত্রাংশ ইত্যাদি সরবরাহ করবে। ইতিমধ্যেই মারুতির কর্মী সংথ্যা ৯,১৪৮ (৩১ মার্চ ২০১২ পর্যন্ত)।
বিশ্ব জুড়ে গাড়ি শিল্পে এই মুহূর্তে চাহিদা কমা সত্ত্বেও নতুন লগ্নি নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার এই সিদ্ধান্ত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়েই নিয়েছে সংস্থা। সাধারণত মাঝারি এবং দীর্ঘ মেয়াদে লাভজনক হবে, এমন লগ্নির সিদ্ধান্তই নেয় সংস্থা। তাদের আশা ভবিষ্যতে বিশ্ব তথা ভারতের অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াবে। সে সময়ে বাজার হাতছাড়া করতে চায় না সংস্থা। ওই সুযোগ কাজে লাগাতে তাই আগেভাগেই নতুন লগ্নির এই সিদ্ধান্ত। |