কর্মসংস্থানের পরিসংখ্যানে হতাশা
মার্কিন শেয়ার বাজারের পতনে উদ্বেগ ভারতের
মনিতেই স্বস্তির শ্বাস ফেলার সামান্যতম জমি খুঁজে পেতে হন্যে ভারতীয় অর্থনীতি। ঘরে-বাইরের সঙ্কটজনক পরিস্থিতির কারণে দ্রুত পারা নামছে এ দেশের শেয়ার বাজারেরও। এই পরিস্থিতিতে বাজার তথা দেশীয় অর্থনীতির রক্তচাপ আরও বাড়িয়ে দিল শুক্রবার মার্কিন শেয়ার বাজারের পতন।
তাই এক রাশ উদ্বেগ আর পতনের সম্ভাবনাকে সঙ্গী করেই সোমবার ভারতে স্টক এক্সচেঞ্জের দরজা খুলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কৃষি ছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে (মূলত শিল্প) নতুন কত কর্মসংস্থান হচ্ছে, প্রতি মাসেই সেই পরিসংখ্যান প্রকাশ করে মার্কিন শ্রম দফতর। বিশেষজ্ঞদের মতে, মে মাসের সেই পরিসংখ্যানই মূলত হতাশ করেছে শেয়ার বাজারকে। কারণ, শুক্রবার ওবামা প্রশাসনের প্রকাশ করা ওই তথ্য অনুযায়ী, গত মাসে মাত্র ৬৯ হাজার নতুন কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে আমেরিকায়। যা আগের কয়েক মাসের সংখ্যার থেকেও বেশ নীচে।
সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিনে মার্কিন শেয়ার বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়েছে হতাশাজনক এই পরিসংখ্যান। যে কারণে ওই দিন এক ধাক্কায় ২ শতাংশেরও বেশি নেমে গিয়েছে আমেরিকার তিন প্রধান সূচক। ডাও জোন্স (২.২২ শতাংশ), এসঅ্যান্ডপি-৫০০ (২.৪৬ শতাংশ) এবং নাসড্যাক (২.৮২ শতাংশ)। যার প্রভাব আগামী সপ্তাহে এশিয়া এবং ইউরোপের বাজারেও টের পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন অনেকে।
কিন্তু মার্কিন মুলুকে নয়া কর্মসংস্থানের সংখ্যা কমার সঙ্গে ভারতীয় অর্থনীতির সমস্যা বাড়ার সম্পর্ক কোথায়? কী ভাবেই বা ওবামার দেশের শেয়ারে লগ্নিকারীদের আস্থা-অনাস্থার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভারতীয় অর্থনীতির ভবিষ্যৎ?
অর্থনীতিবিদ এবং বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এই যোগসূত্র মূলত তিনটি
, ঋণ সঙ্কটে জেরবার ইউরোপ এখন ধুঁকছে। উৎপাদন শিল্প এবং তার সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক বৃদ্ধির গতিতে ভাঁটা পড়ছে চিনেরও।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন অর্থনীতির দিকেই কিছুটা আশা নিয়ে তাকিয়ে রয়েছে ভারত-সহ সারা বিশ্ব। কারণ, গত কয়েক মাসে কিছুটা হলেও পরিস্থিতি শোধরানোর ইঙ্গিত দিয়েছিল ওবামার দেশ। সকলেরই আশা ছিল, মার্কিন মুলুকই যেহেতু বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য ও পরিষেবার বৃহত্তম ক্রেতা, তাই তার অর্থনীতির হাল ফিরলে দুনিয়াজোড়া মন্দা কিছুটা তাড়াতাড়ি ফিকে হওয়ার সম্ভাবনা। কিন্তু এখন সেখানে কাজের সুযোগ কম তৈরি হওয়া মানে উৎপাদন হ্রাস পাওয়া। সেই সঙ্গে কমে যাওয়া চাহিদাও। যা হলে বিশ্ব জুড়ে মন্দার ছায়া আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা।
, ২০০৮ সালে লেম্যান ব্রাদার্সের পতন যে মন্দাকে ত্বরান্বিত করেছিল, তার সূত্রপাত হয়েছিল মূলত মার্কিন আর্থিক ক্ষেত্রের ডামাডোল থেকে। এর পর গত ৩-৪ বছর ধরেই সঙ্কটে রয়েছে ইউরোপীয় অর্থনীতি। এখন ফের তার প্রভাবে মার্কিন অর্থনীতি মন্দায় ফিরে গেলে ভারতের পক্ষে আরও কঠিন হবে এই দুষ্টচক্রের প্রভাব থেকে বেরিয়ে আসা।
বিশেষত বর্তমান পরিস্থিতিতে। যেখানে শেষ ত্রৈমাসিকে ৫.৩ শতাংশে নেমে এসেছে ভারতের বৃদ্ধির হার। হালে পানি পাচ্ছে না অর্থনীতির প্রায় কোনও সূচকই।
, বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, কোনও দেশের অর্থনীতি সম্পর্কে আশা ও আস্থার কিছুটা হলেও প্রতিফলন ঘটে সেই দেশের শেয়ার বাজারে। পরবর্তীকালে তার
প্রভাব পড়ে সে দেশের অর্থনীতির উপরেও। কারণ, বাজার থেকে লগ্নিকারীরা মুখ ঘুরিয়ে নিলে তার প্রভাব পড়ে সরকারি বন্ডের দাম এবং সুদের হারের উপর। আর চড়া সুদের জমানায় কল-কারখানায় উৎপাদনের চাকা কী ভাবে বসে যায়, এখন তা বেশ হাড়ে হাড়েই টের পাচ্ছে এই দেশের অর্থনীতি।
আর এই সব কারণেই ভারতের শেয়ার বাজার, এমনকী তার অর্থনীতির শিরদাঁড়াতেও ঠাণ্ডা স্রোত বইয়ে দিচ্ছে শুক্রবার মার্কিন বাজারে ওই পতন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.