অধিকাংশ নলকূপ বিকল, নোংরা লোহা-জলে ছড়াচ্ছে পেটের রোগ
স্তর নামছে, তীব্র জলকষ্ট বাহিনে
রমের প্রকোপ বাড়তেই রায়গঞ্জ ব্লকের বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ওই পঞ্চায়েত এলাকার বেশিরভাগ সরকারি নলকূপ বিকল হয়ে গিয়েছে। ব্যক্তিগত নলকূপগুলি থেকে আয়রন ও দুর্গন্ধযুক্ত জল বার হচ্ছে। বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে ওই জল খাচ্ছেন। পাশাপাশি রান্নায় ব্যবহার করছেন। ফলে প্রতিদিনই বাসিন্দারা পেটের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ। সম্প্রতি, বাসিন্দাদের একাংশ পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ভাবে এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন। সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন কংগ্রেস পরিচালিত বাহিন গ্রাম পঞ্চায়েতের কৃষি ও প্রাণিসম্পদ কর্মাধ্যক্ষ দূর্গেশ ঘোষ। তিনি বলেন, “গরমের প্রকোপ বাড়তেই পঞ্চায়েত এলাকায় পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। পঞ্চায়েত এলাকার বেশির ভাগ সরকারি নলকূপ বিকল হয়ে গিয়েছে। বাকি সরকারি ও ব্যক্তিগত নলকূপগুলি দিয়ে আয়রন ও দুর্গন্ধযুক্ত জল বার হচ্ছে। বাধ্য হয়ে বাসিন্দারা ওই জল পান করে পেটের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। আমরা সমস্যার কথা উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” তিনি জানান, বাসিন্দাদের দাবি মতো সম্প্রতি পঞ্চায়েতের তরফে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের কাছে ওই পঞ্চায়েত এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোক্তার আলি সর্দার বলেন, “সংখ্যালঘু দফতরের উদ্যোগে সম্প্রতি ওই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। এ ছাড়াও বিকল হয়ে পড়া একাধিক নলকূপ মেরামত করা হয়েছে। পাইপ লাইনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের প্রস্তাবটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ওই পঞ্চায়েত এলাকায় মোট ১৩টি সংসদে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার পরিবারের বসবাস। মোট বাসিন্দার সংখ্যা ৩৫ হাজার। তারমধ্যে ৫ হাজার বাসিন্দাই বিপিএল তালিকাভুক্ত। প্রায় ৭০ শতাংশ বাসিন্দারই মূল পেশা কৃষিকাজ ও দিনমজুরি। প্রায় ৩ হাজার পরিবারের ব্যক্তিগত নলকূপ রয়েছে। পানীয় জলের সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে গত কয়েক বছর ধরে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ ওই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন সংসদ এলাকায় পর্যায়ক্রমে প্রায় ২৫টি সরকারি গভীর নলকূপ বসিয়েছেন। সম্প্রতি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ একটি সমীক্ষা চালিয়ে জানতে পেরেছেন, ওই পঞ্চায়েতের কুমারজোল, শঙ্করপুর, সোহারই, নারায়ণপুর, ঝিটকিয়া, কুমরোল ও বালিরপর সংসদে সবচাইতে বেশি পানীয় জলের সঙ্কট তীব্র আকার নিয়েছে। জলস্তর নেমে যাওয়ায় ও প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ২৫ টি সরকারি গভীর নলকূপের মধ্যে ২০ টি নলকূপই বিকল হয়ে গিয়েছে। বাকি ৫ টি নলকূপ থেকে আয়রণ ও দুর্গন্ধযুক্ত জল বার হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ৩ হাজার পরিবারের ব্যক্তিগত নলকূপের মধ্যে ৮০ শতাংশ নলকূপ দিয়েই আয়রণ ও দুর্গন্ধযুক্ত জল বার হচ্ছে। বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে বাসিন্দারা বাধ্য হয়ে আয়রণ ও দুর্গন্ধযুক্ত জল পান করার পাশাপাশি রান্নায় ব্যবহার করছেন। ফলে বাসিন্দারা পেটের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ওই জল দিয়ে স্নান ও জামাকাপড় ধোওয়ার কাজও চলছে। ফলে বাসিন্দাদের হাত, পা ও জামাকাপড় লাল হয়ে যাচ্ছে। দূর্গেশবাবু বলেন “সমস্যার কথা আমরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। এর পর সংখ্যালঘু দফতর পঞ্চায়েত এলাকায় বেশকিছু নলকূপ বসালেও তা পর্যাপ্ত নয়। বিকল বেশকিছু নলকূপ মেরামত করা হলেও পানীয় জলের সঙ্কট মেটেনি। জেলা পরিষদ খুব শীঘ্রই বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের ব্যপারে স্থায়ী কোনও উদ্যোগ না নিলে বাসিন্দারা অপরিশোধিত জল ব্যবহার করে ডায়রিয়া ও চর্মরোগে আক্রান্ত হতে পারেন বলে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি।” পঞ্চায়েতের সোহারই সংসদের বাসিন্দা নীলু বর্মন ও ঝিটকিয়া সংসদের বাসিন্দা শম্ভু দাসরা বলেন, “পঞ্চায়েত এলাকার ৮০ শতাংশ বাসিন্দাই চাষবাস ও দিনমজুরি করে সংসার চালান। বাজার থেকে ফিল্টার কিনে অপরিশোধিত জল শোধন করে ব্যবহার করার ক্ষমতা আমাদের নেই। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের দাবি জানিয়েছি।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.