জেলা জুড়ে রক্তদাতার সংখ্যা কমায় উদ্বেগ
রক্তশূন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল
ক্তের চরম সঙ্কট চলছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। সমস্যায় পড়ছেন রোগীর পরিজনেরা। এক বোতল রক্তের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হচ্ছে তাঁদের। অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। বুধবার হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে মাত্র এক বোতল রক্ত ছিল। তা-ও এ-নেগেটিভ গ্রুপের। ব্লাড ব্যাঙ্কের মেডিক্যাল অফিসার বাঁশরিমোহন মাইতি বলেন, “এমন পরিস্থিতি আগে হয়নি। এই সময়ে কয়েক বোতল রক্ত থাকতই। এই অবস্থায় রক্তদান শিবিরের সংখ্যা না বাড়লে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।”
ডিসপ্লে বোর্ডে ‘রক্ত-শূন্যতা’। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ
এমনিতে গরম পড়লেই জেলা জুড়ে রক্তের আকাল দেখা দেয়। এপ্রিল থেকে জুন, সঙ্কট তীব্র হয় ঝাড়গ্রাম, ঘাটাল, মেদিনীপুর থেকে খড়্গপুরজেলার প্রায় সব হাসপাতালেই। গত এক সপ্তাহ ধরে মেদিনীপুর মেডিক্যালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্তের অভাব চলছে। বুধবার পরিস্থিতি সবচেয়ে জটিল হয়। ব্লাড ব্যাঙ্কের সামনে রাখা ইলেকট্রনিক বোর্ডে ফুটে ওঠে, এক বোতল এ-নেগেটিভ গ্রুপের রক্ত ছাড়া অন্য কোনও গ্রুপের রক্ত নেই। অথচ, এই সময়ে জেলার মধ্যে সর্বাধিক ‘চাপ’ থাকে মেদিনীপুর মেডিক্যালেই। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, আশপাশের অন্য জেলা থেকেও বহু রোগী এখানে আসেন। এ দিন দুপুরে ব্লাড ব্যাঙ্কে এসেছিলেন জামতলার হারুন রশিদ মল্লিক। তাঁর মা রাজিয়া বিবি মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন। মায়ের চিকিৎসার জন্য বি-গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন। কিন্তু এখানে এসে দেখেন, বি-গ্রুপের এক বোতলও রক্ত নেই। হতাশ হারুন বলেন, “এখন কী করব, কিছুই ভেবে পাচ্ছি না।” রক্তের অভাবে অস্ত্রোপচারে সমস্যা হওয়ার কথা অবশ্য মানতে চাননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে আত্মীয়দেরই রক্ত দিতে বলা হচ্ছে।
হাসপাতালে যখন রক্তের সঙ্কট চলছে, তখন আবার কয়েকটি জায়গায় স্থগিত রাখা হচ্ছে রক্তদান শিবির। ফলে, উদ্বেগ বাড়ছে। আজ, বৃহস্পতিবার এনায়েতপুরে রক্তদান শিবির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা হচ্ছে না। আগামী ৫ জুন ওই শিবির হবে। ব্লাড ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, “শিবিরের সংখ্যা বাড়লেই ভাল। তার বদলে যদি শিবির স্থগিত বা বাতিল করা হয়, তা হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।” তাঁর কথায়, “এ বার শিবিরের সংখ্যা সে ভাবে কমেনি। তবে শিবিরে রক্তদাতাদের সংখ্যা কমেছে। ফলে, রক্ত-সংগ্রহ কম হয়েছে। এটাই উদ্বেগের।” হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত মঙ্গলবার একটি শিবির থেকে ৩৭ বোতল রক্ত সংগৃহীত হয়। সেই রক্ত এসে পৌঁছনোর পরপরই ৩৬ বোতল রক্ত শেষ হয়ে যায়। জুন মাসে অবশ্য ১৩টি শিবির হওয়ার কথা রয়েছে। তবে, এতে প্রয়োজন মিটবে না বলেই জানাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ব্লাড ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বলেন, “এই পরিস্থিতিতে একটি বড় শিবিরের দরকার। যেখানে অন্তত ৩০০ বোতল রক্ত সংগ্রহ হতে পারে।”
প্রায় একই বক্তব্য হাসপাতাল সুপার যুগল করের। তিনি বলেন, “রক্তের অভাব রয়েছে। এই সময়ে শিবিরের সংখ্যা আরও বেশি হলে ভাল হয়।” হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ বার শিবিরের সংখ্যা সে ভাবে না-কমলেও শিবিরে রক্তাদাতাদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি গত কয়েক বছরের থেকে জটিল হয়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্কের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, “২০১০ সালে শিবির প্রতি যেখানে গড়ে ৫৫ জন রক্ত দিয়েছিলেন, ২০১১ সালে সেখানে গড়ে ৪৯ জন রক্ত দেন। এ বার সংখ্যাটা আরও কমছে।” তাঁর কথায়, “শিবির-পিছু গড়ে অন্তত ৫০ জন রক্ত দিলে ভাল হয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.