হলদিয়ায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পরিচালিত মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা ফার্স্ট এমবিবিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন বলে রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তা সত্ত্বেও দুশ্চিন্তা কাটছে না ওই কলেজের ৮৮ জন ছাত্রছাত্রীর। কারণ, রাজ্য সরকার ওই রায় পুনর্বিবেচনা করার আবেদন নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। সেই আবেদনের নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত ওই ছাত্রছাত্রীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়।
সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠ ওই মেডিক্যাল কলেজের পরিচালন সমিতির প্রধান। পরিকাঠামোর অভাবে ওই বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেয় মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া। কয়েক লক্ষ টাকা ক্যাপিটেশন ফি দিয়ে ভর্তি হওয়া ছাত্রছাত্রীরা অগাধ জলে পড়েন। পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবিতে সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করেছিলেন তাঁরা। সেই মামলায় রায়ে কিছু দিন আগেই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়, পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই তাঁদের পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। অবিলম্বে ওই ছাত্রছাত্রীদের নাম নথিভুক্ত করিয়ে অ্যাডমিট কার্ড দেওয়ার জন্যও পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ।
কিন্তু রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর ও স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ বুধবার জানান, এখনই সুপ্রিম কোর্টের ওই রায় কার্যকর হচ্ছে না। ওই রায়ের বিরদ্ধে অবিলম্বে শীর্ষ আদালতে আবেদন করতে চলেছেন তাঁরা। হলদিয়ার মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা নিয়ে এ দিন বৈঠকে বসেন স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। বৈঠকের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মৃণালকান্তি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজ থেকে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে পারবে না। কারণ, ওই কলেজ স্বীকৃত নয়। কোনও বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রছাত্রীরা সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে পরীক্ষা দিতে পারে না!” তাঁর কথায়, ক্যাপিটেশন ফি দিয়ে ভর্তির আগেই স্বাস্থ্য দফতর নির্দিষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছিল, কোনও সমস্যা হলে সরকার তার দায় নেবে না। বারণ সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হলে সব দায় তাঁদের উপরেই বর্তাবে। সহ-উপাচার্য বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট তো বলেনি যে, ছাত্রছাত্রীদের সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। কোর্টে যাওয়ার আগে তারা সরকার পক্ষকে কিছুই জানায়নি। এই সব কিছু নিয়েই শীর্ষ আদালতে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য আপিল করা হবে।”
রাজ্যের স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, “আমাদের সরকারি মেডিক্যাল কলেজে আসন-সংখ্যা নির্দিষ্ট। তার বেশি ছাত্র নেওয়া যাবে না। তার উপরে ক্যাপিটেশন ফি দিয়ে ভর্তি হওয়া পড়ুয়ারা সরকারি মেডিক্যাল কলেজে পড়তে পারে না। তবে শীর্ষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আমরা কিছু বলব না। আমরা আদালতে একটি আবেদন করতে চলেছি।” |