ঢাকুরিয়ায় আমরি হাসপাতালের পুড়ে যাওয়া অংশে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ বা আধিকারিকেরা ঢুকতেই পারেন। তবে আমরির অগ্নিদগ্ধ ‘অ্যানেক্স বিল্ডিং’-এ বর্তমান অবস্থার কোনও রদবদল করা যাবে না বলে আলিপুরে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সুপর্ণা রায় মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন।
একই সঙ্গে বিচারক এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, আমরি মামলায় অভিযুক্তেরা চাইলে ওই তল্লাটে যেতে পারেন। হাসপাতালের যন্ত্রপাতি, সাজসরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণের কাজও চলবে। কিন্তু মামলা শেষ না-হওয়া পর্যন্ত যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামের কোনও রকম অদলবদল করা যাবে না।
ঢাকুরিয়ার ওই হাসপাতালের ‘অ্যানেক্স বিল্ডিং’-এ গত ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতের অগ্নিকাণ্ডে ৯২ জন মারা যান। তার পরেই হাসপাতালের ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি ‘সিল’ করে দিয়ে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। কিন্তু পুলিশ হাসপাতালের ভিতরে ঢুকতে ‘অহেতুক বাধা’ দিচ্ছে বলে আদালতে
জানান আমরি-কর্তৃপক্ষ। এই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশের কাছে রিপোর্ট চেয়েছিল আদালত।
গত ৩০ এপ্রিল হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের তরফে অগ্নিদগ্ধ অংশে প্রবেশাধিকার চেয়ে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। আদালত বিষয়টি খতিয়ে দেখে পুলিশকে একটি রিপোর্ট দিতে বলে। বুধবার সেই রিপোর্ট আদালতে পেশ করা হয়েছে। সরকারি আইনজীবী শক্তি ভট্টাচার্য আদালতে আমরিতে পুলিশি পাহারার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরির অগ্নিকাণ্ডে পরে ওই তল্লাটে বহু লোকে জমায়েত হত। তাজমহল দেখার মতো ঘণ্টার পরে ঘণ্টা ঠায় দাঁড়িয়ে দেখত জনতা। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্যই পুলিশ মোতায়েন করা হয়।” তাঁর দাবি, হাসপাতালের লোকজনকে ভিতরে ঢুকতে বা বেরোতে কখনওই বাধা দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। আমরি হাসপাতাল ফের কবে খুলবে, তা অবশ্য রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর এবং মেডিক্যাল কাউন্সিল ঠিক করবে বলে শক্তিবাবু এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন।
আমরি-কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবী অশোক মুখোপাধ্যায়, সেলিম রহমানদের অভিযোগ, অ্যানেক্স বিল্ডিংয়ে চিকিৎসার দামি দামি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণ করা যাচ্ছে না। ওই সব যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামের রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে বলে এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন বিচারক।
আমরি-কাণ্ডে অভিযুক্ত ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জনের হদিস পেয়েছে পুলিশ। দুই ডিরেক্টর রাহুল তোদি ও আদিত্যবর্ধন অগ্রবাল এখনও গা-ঢাকা দিয়ে আছেন। ন’জন ডিরেক্টর-সহ ১৩ জন অভিযুক্ত কিছু দিন আগে জামিন পেয়েছেন। অন্যতম ডিরেক্টর প্রীতি সুরেখা মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন। প্রীতিদেবী-সহ ১৪ জন অভিযুক্তই এ দিন বিচারক সুপর্ণা রায়ের এজলাসে হাজির হন। ৩ জুলাই তাঁদের আবার আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। |