নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
নেপালের ২৫ জন কিশোরকে কাজের টোপ দিয়ে অপহরণ করে ভিন রাজ্যে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার ঘটনাটি ঘটে শিলিগুড়ি থানার মহানন্দা সেতু লাগোয়া মাড়ে। ধৃতদের নাম মহাদেব প্রসাদ শর্মা, রাম পরিহার এবং হরিনাথ বর্মন। মহাদেববাবুর বাড়ি গ্যাংটকে। দ্বিতীয় জনের নেপালের মরং জেলায় এবং তৃতীয় জনের বাড়ি মাটিগাড়ায়। উদ্ধার হওয়া কিশোরদের বাড়ি নেপালের মরং জেলায়। বর্তমানে তাঁরা শিলিগুড়ি পুলিশের হেফাজতে। আদালতের মাধ্যমে তাঁদের হোমে পাঠানো হবে। শিলিগুড়ি থানার আইসি পিনাকী মজুমদার বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে।” এ দিন শিলিগুড়ির দিকে যাওয়া একটি বাসে ওই কিশোরেরা এবং ধৃতেরা ছিলেন। ওই বাসেই নকশালবাড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মকর্তা প্রেম কুমার ছিলেন। ধৃতদের কথাবার্তায় সন্দেহ হওয়ায় তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। বাসটি মহানন্দা সেতু লাগোয়া মোড়ে পৌঁছতেই পুলিশ কিশোরদের উদ্ধার করে। অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। প্রেমবাবু শিলিগুড়ি থানায় একটি এফআইআর করেছেন। পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে গ্রেফতার করে। প্রেমবাবু বলেন, “ফুঁসলিয়ে কিশোরদের ভিন রাজ্যে নিয়ে গিয়ে পাচার করার ঘটনা বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে। এভাবে কিশোরদের নিয়ে গিয়ে খারাপ কোনও কাজে লাগানোর পরিকল্পনা ধৃতদের রয়েছে বলে আমার ধারণা।” ধৃতরা অবশ্য পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় শ্রমিক নিয়োগের কাজ করেন। নেপালের মরং জেলার ওই কিশোররা খুব গরিব ঘরের। তাঁদের অভিভাবকদের অনুমতি নিয়েই সিকিমের শ্রীবাদামে পূর্ত দফতরের রাস্তা তৈরির কাজে নিয়োগের জন্য তাঁদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বেশি বয়সের শ্রমিকদের ৪৫০টাকা দৈনিক হাজিরা এবং দু’বেলা খাবারের ভিত্তিতে তাঁদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। একটু কম বয়সের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে দু’বেলা খাওয়ার সঙ্গে দৈনিক ২০০ টাকা হাজিরার আশ্বাস দেন। শ্রমিক হিসেবে ওই ঠিকাদাররা টাকা পান বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। এবারে শ্রমিক নিয়ে যেতে পারলে তাঁরা ১২ হাজার ৫০০ টাকা পেতেন বলে জানিয়েছেন। উদ্ধার হওয়া কিশোর পূর্ণ বাহাদুর, তেরা অধিকারী, ভরত চৌধুরীরা বলেন, “রাম পরিহারকে আমরা চিনি। তিনি মরং জেলায় থাকেন। মাঝে মধ্যে জেলার বাইরেও থাকেন। তিনি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। বাড়ির এলাকায় কাজ নেই। তাই ওনার কথায় রাজি হয়ে সিকিমে যাচ্ছিলাম।” শিলিগুড়ির পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সিকিম পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ঠিকাদারদের কথার সত্যতা খতিয়ে দেখা হবে।” |