নিলয় দাস ও অনির্বাণ রায় • ধূপগুড়ি |
রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর ধারাবাহিকতা রুখতে সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসও চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতা তথা রেলমন্ত্রী মুকুল রায়। বুধবার ধূপগুড়িতে পুরভোটের শেষ পর্বের প্রচারে গিয়ে মুকুলবাবু প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে সিপিএমের কড়া সমালোচনা করেন। পাশাপাশি, কংগ্রেসও সিপিএমের সুবিধা করে দিতে চেষ্টা করছে বলে তিনি দাবি করেন। মুকুলবাবুর অভিযোগ, “১০ বছর আগে গঠিত পুরসভার উন্নয়নে সিপিএম ব্যর্থ। তার পরেও সিপিএম নানাভাবে মানুষকে ভুল বোঝাতে চাইছে। কংগ্রেসও সিপিএমের সুবিধা করে দেওয়ার অভ্যেস ছাড়তে পারেনি।” |
এর পরেই মুকুলবাবু দাবি করেন, ধূপগুড়ির মানুষ এবার পুরভোটেও পরিবর্তন আনতে বদ্ধপরিকর। পাশাপাশি, সিপিএম-কংগ্রেসের যোগসাজশের অভিযোগের ‘যৌক্তিকতা’ তুলে ধরতে একাধিক দৃষ্টান্ত দিয়েছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, “একটা সময়ে কংগ্রেসিদের উপরে টানা অত্যাচার করেছে সিপিএম। কারও হাত কেটে নিয়েছে। কাউকে খুন করেছে। তা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের কাছে বলতে গেলে তাঁদের কেউ উত্তর দিয়েছেন, দিল্লিতে সিপিএমের সমর্থনে সরকার চালিয়ে রাজ্যে বিরোধিতা করা যাবে না।” মুকুলবাবুর মতে, “এমন অবস্থায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল তৈরি করে সিপিএম-এর অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে না নামলে কংগ্রেসের সহযোগিতায় আজও সিপিএম নামক জগদ্দল পাথর বাংলার বুকে রয়ে যেত।” ধূপগুড়ির ১৬ টি ওয়ার্ডে এবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয়নি তৃণমূলের। তবে কংগ্রেস সব ওয়ার্ডে প্রার্থী দিতে পারেনি। ৫টি ওয়ার্ডে কংগ্রেসের একাংশ তৃণমূল কংগ্রেসের হয়েই প্রচার করছেন বলে খবর। কিন্তু, অন্যান্য ওয়ার্ডে সিপিএম-কংগ্রেসের মধ্যে যোগসাজশ রয়েছে বলে সন্দেহ তৃণমূল নেতাদের অনেকের। দলীয় সূত্রে সে সব রিপোর্ট পৌঁছেছে মুকুলবাবুর কাছেও। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুকুলবাবু আগাগোড়াই সিপিএম ও কংগ্রেসের ‘আঁতাতের’ অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন। সেই সঙ্গে রেলের তরফে ধূপগুড়ি সহ গোটা রাজ্যের জন্য কী ধরনের কাজ করা হয়েছে তারও বিবরণ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী। মুকুলবাবুর কথায়, “প্রথম কেন্দ্রে ইউ পি এ সরকারের আমলে কংগ্রেস বামেদের সঙ্গে হাত মেলায় রাজ্যের মানুষ একটি মাত্র রেল পায়। সেই সময় দ্বিতীয় ইউপিএ-তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী হবার পর ৯৯ টি মেল এক্সপ্রেস উপহার পেয়েছে রাজ্যের মানুষ। পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গে ২-৩ টি র ট্রেনের জায়গায় ১১ টি কলকাতায় যাতায়াতের ট্রেন উপহার দেওয়া হয়েছে।” এ দিন স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির পক্ষে কয়েকটি দূরপাল্লার ট্রেনের দাবি রাখা হয় রেলমন্ত্রীর কাছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব ধূপগুড়িতে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসের স্টপেযর দাবি রাখেন। তিনি বলেন, “রাজ্যে তৃণমূল পরিচালিত সরকার চলছে। এলাকার উন্নয়নের দফতরও তৃণমূলের হাতে। কাজেই ধূপগুড়ির সার্বিক উন্নয়ন কাজ করবে তা মানুষকে ভাবতে হবে।”
এ দিন কেপিপি নেত্রী মিতালি রায় তৃণমূলে যোগ দেন। কংগ্রেস মন্ত্রিসভার প্রাক্তন বিধায়ক ও যুক্তফ্রন্টের আমলে মন্ত্রিত্বের দায়িত্বে ছিলেন তাঁর বাবা জগদানন্দবাবু। মিতালি দেবী অবশ্য কে পি পি র জন্মলগ্ন থেকে ছিলেন। কেপিপির বেশ কিছু ভোট রয়েছে। মিতালি দেবী যোগ দেওয়ায় তা তৃণমূলের পক্ষে পড়বে বলে দলের নেতাদের আশা। |