রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বন্ধ-বিরোধী অবস্থানের জেরে কি এ বার ‘চাপে’ পড়ছে বামেরাও? পেট্রোলের ‘নজিরবিহীন’ মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক এক রাজ্যে সিপিএম তথা বামফ্রন্টের এক এক রকম কৌশলই এমন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।
পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে আজ, বৃহস্পতিবার ত্রিপুরায় বন্ধের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। সংলগ্ন রাজ্য অসমেও বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। কেরলে সিপিএমের ডাকে বন্ধ হয়েছে দাম বৃদ্ধির পরের দিনই। কিন্তু এ রাজ্যে বামেদের ডাকে কোনও বন্ধ হচ্ছে না। উল্টে আজ, রাজ্যে বিজেপি-র ডাকা ১২ ঘণ্টার বন্ধের বিরোধিতা করছে বামেরা!
এই উলট-পুরাণের কারণ কী? বাম নেতারা বলছেন, এ রাজ্যে লাগাতার প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তাই তাঁরা বন্ধের রাস্তায় যাচ্ছেন না। কিন্তু রাজনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা অন্য রকম। বাস্তবে পশ্চিমবঙ্গবাসীরা বন্ধ-রাজনীতিতে ক্লান্ত। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্ধের বিরোধিতায় যে অবস্থান নিয়েছেন, তাতে জনতার সাড়াও মিলছে। যা বাম নেতারাও ঘরোয়া আলাপচারিতায় অস্বীকার করতে পারছেন না। সেই জন্যই পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির মতো বিষয় হাতের কাছে পেয়েও এ রাজ্যে বন্ধের রাস্তায় যেতে পারেনি বামফ্রন্ট। মমতার দৃঢ় অবস্থান-জনিত ‘চাপ’ বাম রাজনীতিতেও এ বার ‘প্রভাব’ ফেলছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ব্যাখ্যা।
কলকাতায় আজ বিকালে কেন্দ্রীয় প্রতিবাদ মিছিল হবে রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ থেকে মৌলালির রামলীলা ময়দান পর্যন্ত। নেতৃত্ব দেবেন বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। কলকাতা জেলা ফ্রন্টের তরফে সাংসদ প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মিছিল করলেও আমরা বন্ধ করছি না। বিজেপির বন্ধের বিরোধিতা করছি।”
বিষয়টি বিশদে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রবীন দেব বলেন, “রাজ্য বামফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ রাজ্যে ধর্মঘট করা হবে না। পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকারের উপরে চাপ সৃষ্টির জন্য লাগাতার কর্মসূচি নেওয়া হবে। তাই আমরা কোনও ধর্মঘটের পথে যাচ্ছি না। যদিও ত্রিপুরা এবং অসমে বামফ্রন্টের পক্ষ থেকে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।” রবীনবাবু আরও জানান, পেট্রোলের দাম না-কমা পর্যন্ত বামেরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। সিটু অবশ্য জানিয়ে রেখেছে, ডিজেলের দাম বাড়ানো হলে তারা পরিবহণ ধর্মঘটের পথে যাবে। |