গরম পড়তেই শুরু হয়ে যায় পানীয় জলের হাহাকার। ফি বছর দক্ষিণ ২৪ পরগনার মন্দিরবাজারের আচনা পঞ্চায়েতের গ্রামগুলোর এটাই চেনা ছবি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পানীয় জল সরবরাহের জন্য কয়েক বছর আগে গ্রামে গ্রামে মাটির নিচে পাইপ লাইন বসানো হলেও এখনও তা চালু হয়নি। এ দিকে, জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপ থেকে জল উঠছে না। ফলে নিত্য জলের সমস্যায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৬ সালে ওই জল প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল। প্রকল্পের জন্য ৪৬ লক্ষ টাকা অনুমোদনও হয়েছিল। বিদ্যাধরপুর, নিলাম্বরপুর, আচনা, সুতাবেচা এই গ্রামগুলিতে পাইপ লাইন বসানোর কাজও হয়েছিল। কিন্তু বছরখানেক পরেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কোনও পাম্প স্টেশন তৈরি না হওয়ায় পাইপ লাইন থাকলেও চালু করা যায়নি জল প্রকল্প।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নলকূপের সমস্যায় জল আনতে যেতে হয় একপাড়া থেকে অন্যপাড়ায়। জলের পরিমাণও কমে গিয়েছে বলে জানান তাঁরা। এ অবস্থায় পাম্প মেশিন বসানো না হলে সমস্যা মিটবে না বলে বাসিন্দাদের দাবি।
আচনা পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের তপন পুরকাইত অবশ্য জানান, সব গ্রামেই নলকূপ আছে এবং কোনওটা খারাপ হওয়ার খবর পেলেই সারিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়। তবে প্রকল্পের কাজ থমকে যাওয়ায় তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন সিপিএমের বিরুদ্ধে। বলেন, “অনুমোদন হওয়া টাকা আত্মসাৎ করেছে পূর্বতন সিপিএম পরিচালিত পঞ্চায়েত। কিছু টাকার কাজ করেই থেমে গিয়েছে কাজ।” বিস্তারিত তদন্তের জন্য প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও সুরাহা হয়নি বলেও তাঁর অভিযোগ। তবে ওই অভিযোগ সম্পূর্ণ ‘ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছেন সিপিএমের মন্দিরবাজার জোনাল কমিটির সম্পাদক অলক রায়। তাঁর জবাব, “বেনিফিসারি কমিটি তৈরি করেই প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু তৃণমূলের বাধায় সেই কাজ সম্পূর্ণ করা যায়নি।”
মন্দিরবাজারের বিডিও শেখ বাকিবুর রহমান বলেন, “জল প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ পাওয়ার পরে আচনা গ্রাম পঞ্চায়েতের সহায়ককে শো-কজ করা হয়েছিল। এ বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।” |