হাঁসফাস গরমে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ মহকুমার শহর এলাকায় তীব্র জল সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ভোর থেকে উঠে নলকূপের সামনে হাঁড়ি-কলসি বালতি নিয়ে লম্বা লাইন পড়ে যাচ্ছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানীয় জলের সঙ্কট নিয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রশাসন থেকে সর্বত্র জানানো হয়েছে।
রামকৃষ্ণপুর প্রতাপাদিত্য গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এখন সর্বত্র জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের পানীয় জলের পাইপ লাইন পৌঁছয়নি। যে সমস্ত গ্রামে পাইপ লাইন গিয়েছে সেখানেও বেশিরভাগ ট্যাপকল থেকে অত্যন্ত সরু হয়ে জল পড়ে বলে অভিযোগ। এলাকায় বেশ কিছু নলকুপ থাকলেও দীর্ঘদিন তা বিকল হয়ে রয়েছে। এই সব নলকূপ সারাতে প্রশাসন কোনও উদ্যোগই নেয় না বলে অভিযোগ। ফলে অনেক দূরে গিয়ে অন্য পাড়া থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে আনতে হয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় কাশীনগর পাম্প হাউস থেকে জল সরবরাহ করা হয় কাকদ্বীপ শহর লাগোয়া কালীনগর, দাসপাড়া, গণেশপুর, বলগেবপুর, গোবিন্দপুর, নয়াপাড়া-সহ কয়েকটি গ্রামে। ওই সব গ্রামে জলের পাইপ লাইন গিয়েছে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের ধার দিয়ে। বর্তমানে ওই সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ায় মাঝেমধ্যেই পাইপ ফেটে গিয়ে জল সরবরাহ ব্যবস্থা বিঘ্নিত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ট্যাপকলগুলিও। এ ছাড়া আগে মাটির নীচ দিয়ে যে পাইপ লাইন টানা হয়েছিল সেই পাইপ জলের চাপ সহ্য করতে না পারায় ফেটে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে জল। ফলে দিনে তিনবার জল সরবরাহ করা হলেও তার সুফল পাচ্ছেন না স্থানীয় মানুষ। বলদেবপুরের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সরকারের বক্তব্য, “পাইপ লাইনগুলি ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণও করা হয় না।” একই দাবি দেবলা দাস, ডালিম জানায়। তাঁদের বক্তব্য, “বাড়ির সমস্ত কাজ ফেলে সকাল থেকে জলের জন্য লাইন দিতে হচ্ছে। তা-ও ঠিকমতো পাচ্ছি না। রোজ রোজ অন্য জায়গা থেকে এই গরমে জল আনা সম্ভব?”
এলাকায় জলের সমস্যা প্রসঙ্গে স্থানীয় বিধায়ক মণ্টুরাম পাখিরা বলেন, “আয়লা আক্রান্ত সুন্দরবন এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে এটা সত্যি। প্রচণ্ড গরমে জলস্তর নেমে যাওয়ায় নলকূপগুলিতেও ঠিক মতো জল উঠছে না। তবে জলের সমস্যা মেটাতে ইতিমধ্যেই প্রায় ৫০টি গভীর নলকূপ বসানো হয়েছে। আরও বসানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। তাতে জলের সমস্যা অনেকটা মিটবে বলে আশা করছি।”
জনস্বাস্থ্য কারিগরী দফতরের সহকারী বাস্তুকার সুখময় মহাপাত্র বলেন, “গরমের সময় জলস্তর নেমে যাওয়ার কারণে একটু সমস্যা হচ্ছে। জাতীয় সড়কের ধার থেকে পাইপলাইন সরিয়ে কিছুটা দূরে বসানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। জল সরবরাহ যাতে ঠিক তাকে সে জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে।” |
