অবশেষে জলপাইগুড়ি পুরসভার ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সমস্যা মিটতে চলেছে। জঞ্জাল ফেলার জন্য নতুন জমি চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। অনুমোদনের জন্য জমির নথিপত্র রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। পুরসভা ও প্রশাসনের কর্তাদের আশা সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের গোড়ায় ওই জমি ব্যবহারের অনুমতি মিলবে। নতুন করে যেন কোনও সমস্যার সৃষ্টি না হয় সে জন্য অনুমোদনের আগে জমি নিয়ে প্রশাসন বা পুরসভার আধিকারিকেরা অবশ্য বিশদে কিছু জানাতে রাজি হননি। জলপাইগুড়ির সদর মহকুমাশাসক সাগর চক্রবর্তী বলেন, “কয়েক মাস ধরে জলপাইগুড়িতে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের সমস্যা চলছে। তবে এ বার নতুন জমি খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছে। ওই জমিতে পুরসভা ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি করবে। জমি দেখার পরে নথিপত্র তৈরি করে রাজ্য সরকারের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাম্পিং গ্রাউণ্ডের সমস্যার জন্য গত দু’সপ্তাহ ধরে জলপাইগুড়ি শহরের জঞ্জাল অপসারণ প্রক্রিয়া বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শহরের বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহের কাজও অনিয়মিত হয়েছে। বিভিন্ন ব্যস্ত এলাকায় থাকা পুরসভার ভ্যাটে জঞ্জাল উপচে পড়লেও দেখার কেউ নেই। শুধুমাত্র কদমতলা, স্টেশন রোড, হাসপাতাল, বিভিন্ন বাজারের মতো যে এলাকাগুলি থেকে জঞ্জাল না সরালে নয় শুধুমাত্র সেখানকার জঞ্জাল জরুরিভিত্তিতে সরিয়ে পুরসভার নিজস্ব ভ্যাটে জমা করা হচ্ছে। বিকল্প ডাম্পিং গ্রাউন্ড তৈরি না হওয়া পর্যন্ত জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ নিয়মিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানা গিয়েছে। পুরসভার এক কর্তা জানান, এতদিন শহরের জঞ্জাল পাঙ্গা এলাকার ডাম্পিং গ্রাউণ্ডে ফেলা হত। দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে ওই এলাকার বাসিন্দারা আন্দোলনে নামলে জটিলতার সৃষ্টি হয়। প্রশাসন, পুরসভা এবং পাঙ্গার বাসিন্দাদের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সেখানে জঞ্জাল ফেলা বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে মন্ডলঘাট এলাকায় কিছু জমি বিকল্প ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য বেছে নেওয়া হলে সেখানেও একই সমস্যার সৃষ্টি হয়। ফলে শহরের জঞ্জাল সাফাই বন্ধ হয়ে যায়। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জন্য নতুন যে জমি চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানে আশেপাশে জনবসতি নেই। ওই কারণে জঞ্জাল ফেলা নিয়ে সমস্যা হবে না বলে পুরকর্তাদের দাবি। এ দিকে গত দু’সপ্তাহ ধরে জঞ্জাল অপসারণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় শহরে মশার উপদ্রব বেড়ে চলেছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কর্পোরেশন রোড, নিউটাউন পাড়া, পান্ডা পাড়া, সমাজ পাড়া, পুরাতন পুলিশ লাইন, আদর পাড়ার বিভিন্ন গলিতে ময়লার স্তুপ জমে আছে। জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “ডাম্পিং গ্রাউন্ড না থাকায় ময়লা অপসারণে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে জমে থাকা জঞ্জালের জন্য যেন সমস্যা না হয় সে জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এখন জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ চলছে। রাতভর জঞ্জাল সংগ্রহ করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হচ্ছে।” ওই ভাবে যে বেশি দিন চলা সম্ভব নয় তা পুরসভার কর্তারাও মনে করছেন। পুরসভার চেয়ারম্যানের কথায়, “এ ভাবে চলতে পারে না। প্রশাসন ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জমি চিহ্নিত করেছে। ওই জমি পাওয়া গেলে বিজ্ঞানসন্মত ভাবে জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়ে যাবে।” |