জমির জটে ‘ফ্লাড সেন্টার’ তৈরি থমকে
মি-জটে চার বছর ধরে আটকে আছে আরামবাগের মলয়পুর ২ পঞ্চায়েতের একটি ‘ফ্লাড সেন্টার’ তৈরির কাজ।
মুণ্ডেশ্বরী নদী থেকে কয়েকশো ফুট দূরে কেশবপুর গ্রামীণ লাইব্রেরি-সংলগ্ন প্রায় তিন শতক জমির উপরে ‘ফ্লাড সেন্টারে’র হাত পাঁচেক গাঁথনির কাজ হয়ে তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই কাজে বরাদ্দ প্রায় ৫ লক্ষ টাকা পড়ে আছে পঞ্চায়েত সমিতিতে। ওই এলাকায় ‘ফ্লাড সেন্টার’ তৈরির দাবি অবশ্য দীর্ঘ দিনের। ডিভিসি একটু বেশি জল ছাড়লেই এলাকাটি প্লাবিত হয়। আশপাশের এলাকায় বহু দরিদ্র মানুষের বাস। সামান্যতম বৃষ্টিতেও তাঁদের মাটির বাড়ি ধসে পড়ে এমন নজির আছে। আর বেশি বৃষ্টি বা বন্যা হলে তো কথাই নেই। দুর্গতির চূড়ান্ত। ‘ফ্লাড সেন্টার’ তৈরি হলে এই সব দুর্গত মানুষ সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন।
কিন্তু কোন সমস্যার জন্য আটকে আছে কাজ?
মলয়পুর ২ পঞ্চায়েত ও আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি দু’তলা ‘ফ্লাড সেন্টার’টি তৈরির অনুমোদন মেলে জেলা থেকে। এ জন্য বরাদ্দ হয় ৫ লক্ষ টাকা। জায়গা খুঁজতে গিয়ে ১৯৫৭ সালের পরচা অনুযায়ী কেশবপুর গ্রামীণ লাইব্রেরির দখলে থাকা প্রায় ৩ শতক জমি চিহ্নিত করা হয়। এ জন্য লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষের অনুমোদনও মেলে। ২০১০ সালের শেষের দিকে এই জমিকে কেন্দ্র করে বিতর্ক দেখা দেয়। জানা যায়, ১৯৮৬ সালের একটি আইন মোতাবেক জায়গাটি স্থানীয় দত্ত পরিবারের। তাঁদের আপত্তিতেই আটকে যায় কাজ।
সম্প্রতি ‘ফ্লাড সেন্টার’ গড়ার স্বপক্ষে বিডিও-র কাছে গণ-স্বাক্ষর সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন স্থানীয় মানুষ। আরামবাগের বিডিও মৃণালকান্তি গুঁই এবং স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা প্রকল্প রূপায়ণে উদ্যোগী হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। বিডিও বলেন, “জায়গাটি নিয়ে যাঁরা আপত্তি তুলেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।” বিধায়কের কথায়, “পূর্বতন সরকারের ভুলে বা জোর-জবরদস্তি করে জমি নেওয়ার চেষ্টার জন্যই বিষয়টি আটকে আছে। বামফ্রন্ট সরকারের হয়ে আমি ক্ষমা চেয়ে নিয়ে সামান্য ওই জমিটুকু গ্রামোন্নয়নের কাজে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেছি।”
সমস্ত বিষয়টি নিয়ে মলয়পুর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের সহদেব সামন্ত, আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সিপিএমেরই অসীমা কুণ্ডুদের বক্তব্য, “জমি নিয়ে জোর-জবরদস্তি করার প্রশ্নই নেই। একেবারেই অজান্তে কোনও ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকতে পারে। আমাদের আশা, বন্যা-পীড়িত মানুষের স্বার্থে ওই পরিবারটি জমিটি দান করে সাহায্য করবেন।”
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দত্ত পরিবারের এক সদস্য সুখেন্দু দত্ত বলেন, “জায়গাটি আমাদের পরিবারের দেবোত্তর সম্পত্তি হিসাবে পরচায় আছে। লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ সেটি নিয়ে নিজেদের অনুনতি-দখল বলে দাবি করেছিলেন। সেই যুক্তিতেই জমিটি ওঁরা ফ্লাড সেন্টারের জন্য ছেড়ে দেন। মাপজোক করে দেখা যায়, লাইব্রেরির জায়গা মোট ৩২ শতক। যে জায়গাটি ফ্লাড সেন্টারের জন্য দেওয়া হয়েছে, তা ওই জমির বাইরের এবং তা আমাদের পরিবারের।” সুখেন্দুবাবু জানান, এ ব্যাপারে জমির পারিবারিক অংশীদারেরা নিজেরা আলোচনা করে বিধায়ক ও বিডিওকে সিদ্ধান্ত জানাবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.