কয়লাখনি বণ্টন দুর্নীতি প্রসঙ্গে অণ্ণা শিবিরকে ‘জবাব’ দিতে শুরু করল কেন্দ্র। এ দিনই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায় অণ্ণা শিবির। তার পরেই প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কয়লা মন্ত্রক থাকাকালীন কীভাবে খনি বণ্টন করা হয়েছে তা সবিস্তারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে সেই বিবৃতিতে। সেই সঙ্গে সচিবালয় জানায়, নিলামের মাধ্যমে কয়লাখনি বণ্টন করে বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য কেন্দ্রের কখনও ছিল না। কারণ তাতে কয়লার দাম বাড়বে ও তা শিল্প এবং পরিকাঠামো উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
মঙ্গলবারই প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ জানিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন। যে কোনও শাস্তিও মাথা পেতে নেবেন। কংগ্রেস নেতৃত্বও আজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, মনমোহনের বিরুদ্ধে সংবাদমাধ্যমের কাছে অভিযোগ না করে সাহস থাকলে আইনি পদক্ষেপ করুক অণ্ণা শিবির। এর পরেই নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে অণ্ণা শিবিরের অন্যতম অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলে আমরাই সবথেকে খুশি হব। কিন্তু সেটি প্রমাণিত হবে কী ভাবে? তাই নিরপেক্ষ তদন্তের কথা বলছি।” তবে অণ্ণা শিবিরের আর এক সদস্য প্রশান্ত ভূষণের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য আজ ক্ষমা চান অরবিন্দ। গত কালই প্রধানমন্ত্রীকে ‘শিখণ্ডী’ বলেছিলেন প্রশান্ত।
এ দিকে প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয়ের তরফে কয়লাখনি বণ্টন নিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করা নিয়ে কংগ্রেসের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কংগ্রেসের একটা বড় অংশের মতে, অণ্ণাদের আনা অভিযোগের জবাব দিয়ে অহেতুক তাঁদের গুরুত্ব বাড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, গত শনিবার সিএজি রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে অণ্ণা শিবিরের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী-সহ ১৫ জন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে খনি বণ্টন দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনেন। কিন্তু কংগ্রেসের তরফে তখন বলা হয়েছিল, এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানানো প্রয়োজন বলে তারা মনে করে না। কিন্তু কংগ্রেস সেই অবস্থান নিলেও প্রধানমন্ত্রী গত কাল অণ্ণাদের অভিযোগ সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। সেই মন্তব্য নিয়েও টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। কেননা অণ্ণা শিবির প্রধানমন্ত্রী-সহ ১৫ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাঁর সতীর্থদের সমর্থনে কোনও মন্তব্য করেননি। শুধু নিজের সততা, নিষ্ঠার কথাই তুলে ধরেছেন।
প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি আক্রমণের প্রশ্নে অণ্ণা শিবিরও দ্বিধাবিভক্ত। খুশি নন খোদ অণ্ণাও। অণ্ণা-ঘনিষ্ঠ সন্তোষ হেগড়ে আজ বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে অনেক দিন দেখছি। তিনি কোনওরকম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন, এটা বিশ্বাস করা কঠিন। কিন্তু অভিযোগ যখন উঠেছে, তখন তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।” |