|
|
|
|
এমএএমসি থেকে শেষমেশ সরেই গেল সিআইএসএফ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুর্গাপুর |
বন্ধ হয়ে পড়ে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা মাইনিং অ্যান্ড অ্যালায়েড মেশিনারি কর্পোরেশনের (এমএএমসি) পাহারার দায়িত্ব থেকে শেষ পর্যন্ত সরে গেল সিআইএসএফ। আর তার পরেই ‘চোর’ ঢুকল কারখানায়।
বুধবার ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ কারখানার গেট ‘সিল’ করে দিয়ে সিআইএসএফ জওয়ানেরা চলে যান। দুপুরেই বেশ কয়েক জন লোহাচোর সেখানে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। পুলিশের হাতে এক জন আটকও হয়েছে। কারখানার প্রাক্তন কর্মী তাপস সরকার, আদিত্য মণ্ডলদের মতে, “সিআইএসএফের প্রহরা ছিল বলে যাবতীয় যন্ত্রপাতি ঠিকঠাক ছিল। এ বার কী হবে কেউ জানে না।” |
|
দীর্ঘদিন রুগ্ণ হয়ে পড়ে থাকার পরে সবে কারখানা খোলার প্রক্রিয়া ফের শুরু হয়েছে। এর মধ্যে সিআইএসএফ চলে গেলে যন্ত্রপাতি সব চুরি হয়ে যাবে বলে বরাবরই তাঁদের আশঙ্কার কথা জানিয়ে এসেছেন প্রাক্তন কর্মী তথা স্থানীয় বাসিন্দারা। এর আগে ওই কেন্দ্রীয় বাহিনী উঠে যাওয়ায় আর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত অপথ্যালমিক গ্লাস লিমিটেডের সমস্ত যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গিয়েছিল। এমএএমসির-ও একই হাল হতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে কারখানা খোলার ব্যাপারে প্রশ্নচিহ্ন উঠে যাবে আশঙ্কা করে প্রাক্তন কর্মীরা সিআইএসএফ সরানোয় প্রবল আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। তার জেরে একাধিক বার বিষয়টি পিছিয়েও গিয়েছে। কিন্তু এ বার আর আটকানো গেল না।
এমএএমসি কারখানা নতুন করে খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বছর পাঁচেক আগেই। ২০০২ সালে কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। পরে কারখানা অধিগ্রহণে আগ্রহ দেখিয়ে ২০০৭ সালের ১ জুন তিন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড (বিইএমএল), কোল ইন্ডিয়া লিমিটেড (সিআইএল) এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) ‘মউ’ সাক্ষর করে। হাইকোর্টে নিলামে সর্বোচ্চ ১০০ কোটি টাকা দর দিয়ে এমএএমসি-র দায়িত্ব পায় ওই তিন সংস্থার কনসোর্টিয়াম। ২০১০ সালের ১৮ অগস্ট তারা লিক্যুইডেটরের থেকে কারখানার দায়িত্ব বুঝে নেয়। গত ৩১ জানুয়ারি মহাকরণে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, বিইএমএল চেয়ারম্যানকে দ্রুত কারখানা খোলার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। কয়েক দিন আগে সিটি সেন্টারে পুরভোটের প্রচারে এসেও তিনি জানান, কারখানা খোলার ব্যাপারে বেশ কয়েক বার বৈঠক হয়েছে। সামনের সপ্তাহে আবার বৈঠক হবে। সিআইএসএফ প্রহরা রাখা-সহ কারখানা খোলার ব্যাপারে সমস্ত বিষয়েই সিদ্ধান্ত হয়ে যাবে। শিল্পমন্ত্রীর কথা শুনে নুতন করে আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছিলেন দুর্গাপুরবাসী। কিন্তু এ দিন সিআইএসএফ চলে যাওয়ার খবরে তাঁরা হতাশ। সিটু নেতা বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তীর অভিযোগ, “কেন্দ্রে এনডিএ সরকার থাকাকালীন ২০০১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুরে এসে একটি ফ্যাক্সবার্তা দেখিয়ে বলেছিলেন, এমএএমসি বন্ধ হবে না। পরের বছরই কারখানা বন্ধ হয়ে যায়।” তাঁর মতে, কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম প্রধান শরিক তৃণমূল উপযুক্ত ‘চাপ’ সৃষ্টি করলে সিআইএসএফ প্রহরা উঠত না। আইএনটিইউসি নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এলাকার মানুষ হতাশ। জানি না, কয়েক দিন পরে আর কারখানা খোলার মতো পরিস্থিতি থাকবে কি না।” আইএনটিটিইউসি নেতা শঙ্করলাল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা নিজেরা আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করব।” |
|
|
|
|
|