কংগ্রেসকে সমর্থন নয়, ভোটে
মেরুকরণ চেয়ে বার্তা তৃণমূলের
দুর্গাপুরের ৪২ নম্বর ওয়ার্ড। —নিজস্ব চিত্র
ছয় পুরসভার মধ্যে শুধু দুর্গাপুরেই ঢাক পিটিয়ে ‘জোট’ করতে নেমেছিল সরকারের দুই শরিক কংগ্রেস-তৃণমূল। কিন্তু আসন নিয়ে দর কষাকষিতে তা ভেস্তে গিয়েছে। বামফ্রন্ট ও তৃণমূল সব আসনেই (৪৩টি) প্রার্থী দিয়েছে। কংগ্রেস দিয়েছে ৩৫টিতে। প্রচারে ‘শত্রু’ সিপিএমের চেয়ে ‘শরিক’কেই বেশি আক্রমণ করছে দু’পক্ষ। উদ্দেশ্য, যথাসম্ভব বেশি আসনে ত্রিমুখী (বিজেপি ৩০ আসনে প্রার্থী দিলেও তেমন শক্তি নেই) লড়াইকে কার্যত ‘দ্বিমুখী’ লড়াইয়ে পরিণত করা। ভোট কাটাকাটি এড়ানো।
বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের পক্ষে মেরুকরণই বামফ্রন্টকে হটিয়ে বিরোধী জোটকে ক্ষমতায় এনেছিল। ২০০৭ সালে পুর নির্বাচনে বামফ্রন্ট ৩৭টি আসন পেলেও বিধানসভা ভোটে বাম প্রার্থীরা ‘লিড’ পান মাত্র ১০ ওয়ার্ডে। এ বারও তার পুনরাবৃত্তি দেখতে চান তৃণমূল নেতারা। কিন্তু বিনা জোটে তা কতটা সম্ভব, সংশয় থাকছেই।
সংশয়ের একটা কারণ শ্রমিক সংগঠনে তৃণমূলের ‘একাধিপত্য’ এখনও প্রতিষ্ঠিত না-হওয়া। শহরের ১০টি ওয়ার্ড জুড়ে ডিএসপি টাউনশিপ। সংস্থার কর্মী প্রায় ১১ হাজার। সেপ্টেম্বরে সেখানে ওয়ার্কস কমিটির ভোটে সিটু এবং তৃণমূল প্রভাবিত আইএনটিটিইউসি ৩৯ শতাংশ করে ভোট পায়। কিন্তু ২০ শতাংশ কংগ্রেস প্রভাবিত আইএনটিইউসি-র হাতে রয়ে গিয়েছে। অপর রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিপিএলেও কংগ্রেসের শক্তি রয়েছে। গত এপ্রিলে অ্যালয় স্টিল কো-অপারেটিভ সোসাইটির নির্বাচনে আইএনটিইউসি ৫২ শতাংশ ভোট পায়। বাকিটা সিটু। তৃণমূলের সংগঠন সেখানে এখনও তৈরি হয়নি। প্রদেশ কংগ্রেস সদস্য তথা শ্রমিকনেতা বংশীবদন কর্মকারের দাবি, “বিভিন্ন কারখানায় তৃণমূল এখনও দুর্বল। যারা মেরুকরণের কথা বলছে, তারা বাস্তব অস্বীকার করছে।” আইএনটিটিইউসি-র বর্ধমান জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থায় এখন আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।”
তবে শুধু শ্রমিক সংগঠন দিয়ে কি আর ভোট হয়? টাউনশিপ-সহ প্রায় সব ওয়ার্ডে নাগরিক চাওয়া-পাওয়ার ভিন্ন সমীকরণও আছে। শহরের দুই ‘অভিজাত’ এলাকা বিধাননগর ও সিটি সেন্টারে গত পুরভোটের তুলনায় বিধানসভা ভোটে প্রায় পাঁচ হাজার করে ভোট খুইয়েছে বামফ্রন্ট। পুর-এলাকায় মাত্র ১০টি ওয়ার্ডে ‘লিড’ ধরে রাখতে পেরেছে তারা। এ বার দেওয়াল লিখন থেকে মিটিং-মিছিল প্রচারের দৌড়ে তারা খানিকটা ‘ব্যাকফুটে’। যার কারণ হিসেবে বারবার ‘সন্ত্রাসে’র অভিযোগ করছে সিপিএম। যদিও তৃণমূল তাতে আমল দিতে যথারীতি নারাজ। তবে রাজ্যে পালাবদলের আগে সিপিএমের বিরুদ্ধে যেমন সিন্ডিকেট-দুর্নীতি বা দাদাগিরির অভিযোগ উঠত, নতুন শাসকের বিরুদ্ধে খানিকটা হলেও তা উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য থেকে কার্টুন-কাণ্ড আমজনতার মনে কতটা দাগ কেটেছে তার পরীক্ষাও হবে পুরভোটে। এখনও ‘পরিবর্তনের হাওয়া’ না কি ‘হাওয়ার পরিবর্তন’? উত্তর দেবে দুর্গাপুর।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.