জেলাশাসকের আশ্বাসে অবসরের আগের দিন দফতরে গেলেন উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অসিত দাস। আজ, শনিবার উপাচার্য হিসাবে অসিতবাবুর মেয়াদ শেষ হবে। ওই দিন ছুটি থাকায় শুক্রবার ছিল তার কর্মজীবনের শেষ ‘অফিস ডে’। অসিতবাবু বলেন, “উপাচার্য হিসাবে শেষ অফিস ডে কামাই করতে চাইনি। কিন্তু গত রাতে ঘেরাও আন্দোলনের ঘটনার জন্য চিন্তা হচ্ছিল। জেলাশাসক আশ্বাস দেওয়ায় দফতরে পৌছে যাই।” বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্মীদের একাংশ উপার্চাযকে দিনভর ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। রাতে তিনি বুকে ব্যাথা অনুভব করেন। বাড়ে রক্তচাপ। ওই পরিস্থিতিতেও প্রায় দুই ঘন্টা ঘেরাও আন্দোলন চলে। অবশেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে অসুস্থ উপাচার্য ঘেরাও মুক্ত হন। ওই ঘটনায় উদ্বিগ্ন উপাচার্য শুক্রবার সকালে কোচবিহারের জেলাশাসককে ফোন করে সমস্যার কথা জানান। এর পরেই জেলাশাসক মোহন গাঁধী তাঁকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। জেলাশাসক বলেন, “ফের ঘেরাও অথবা অন্য কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে না-হয় সেটা দেখার জন্য উপাচার্য অনুরোধ করেছিলেন। আমি নিশ্চিন্তে দফতরে যেতে বলেছি। সমস্যা হলে যেন দ্রুত কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয় সেই বিষয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গেও কথা হয়েছে।” উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮ সালের ২৭ মে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন অসিতবাবু। কয়েক বছরে একাধিক ইস্যুতে ছাত্র, শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠনের ঘেরাও আন্দোলনের মুখে তাঁকে পড়তে হয়েছে। এমনকী তার বাংলোর সামনেও শিক্ষকদের একাংশ অবস্থান অনশন আন্দোলন করেছেন। বৃহস্পতিবার নিজের দফতরে ঘেরাও হন। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, অসিতবাবুর আমলে ২০১০ সালে এক নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন বিভিন্ন কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্মীদের ভারতীয় কৃষি অনুসন্ধান পরিষদের বেতনক্রম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনক্রমে আনা হয়। ফলে অনেকের বেতন কমেছে। ওই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিতে তাঁরা উপাচার্যকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। আন্দোলনকারীদের তরফে নারায়ণ সরকার বলেন, “আশা করছি নতুন উপাচার্য এলে দাবি পূরণ হবে। তাই শেষ দিনে অসিতবাবুকে ঘেরাও করা হয়নি। বরং তাঁকে আমরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।” বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অসিতবাবু চলে যাওয়ার পরে অন্তবর্তীকালীন উপার্চাযের দায়িত্ব নিচ্ছেন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শস্য বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অসীমচন্দ্র সিংহ। |