জমি বিবাদের জেরে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে খুন হন কুমেদ ঘোষ। তাঁকে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে প্রতিবেশী ভুটু ঘোষের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ৫ বছরের মাথায় বৃহস্পতিবার রাতে ৩৫ বছর বয়সী ভুটুবাবুকে গুলি করে কুপিয়ে খুনের ঘটনা ঘটল। মালদহের রতুয়ার কাহালা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিবপুর ঘাটের ঘটনা। পুলিশ জানায়, ভুটুবাবুকে খুনের অভিযোগ উঠেছে নিহত কুমেদ ঘোষের আত্মীয় দীনেশ ঘোষ সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে। এর আগেও তিনবার ভুটুবাবুর উপরে হামলা চালানো হয়েছে। তবে জমি বিবাদ হলেও যুযুধান দুটি পরিবার ভিন্ন দলের সমর্থক হওয়ায় তা নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যেও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। এলাকার কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি ভুটুবাবু তাঁদের দলের কর্মী। সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে। সিপিএম নেতৃত্ব ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। মালদহের পুলিশ সুপার জয়ন্ত পাল বলেন, “জমি নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদের জেরে খুনের ঘটনাটি ঘটেছে। এখানে রাজনীতির কিছু নেই। দেড় বছর আগে বিপক্ষের একজন খুন হন। সেই খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত ভুটু ঘোষ জামিনে ছিলেন। তাঁর উপরে আগে তিনবার হামলা হয়েছে। এ বার খুনের ঘটনায় অভিযুক্তরা ওই হামলা চালায় বলে অভিযোগ। তাঁদের বিরুদ্ধেও মামলা চলছে। তাঁরা পুরানো মামলায় জামিন পেয়েছেন।” |
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দেড় বিঘা জমি নিয়ে নরোত্তমপুর দিয়ারা এলাকার দুই প্রতিবেশী ভুটুবাবু ও দীনেশবাবুর পরিবারের মধ্যে গত ১০ বছর ধরে বিবাদ চলছে। ২০০৯ সালে ভুটুবাবুর উপরে দীনেশবাবুর পরিবারের লোকজন হামলা চালায় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনার পরে বিবাদ চরমে ওঠে। ওই সময় ভুটুবাবু কোনও মতে রক্ষা পান। ২০১০ সালের ১৯ অক্টোবর খুন হন দীনেশ ঘোষের খুড়তুতো ভাই কুমেদ ঘোষ। অভিযোগ, কয়েক মাস বাদে কুমেদবাবু খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ভুটুবাবুর উপরে হামলা করেন বিপক্ষের লোকজন। কিছুদিন বাদে একা পেয়ে ফের হাঁসুয়া দিয়ে কোপানো হয় ভুটুবাবুকে। পুলিশ জানায়, বাড়ি ফুলহারের ওপারে ভুটুবাবুর বাড়ি। এ পারে শিবপুর ঘাটে নৌকা পারাপারের কাজ লিজে নেন তিনি। রাত পর্যন্ত সেখানে থাকতেন। বৃহস্পতিবার রাতে মাচায় বসে দুই মাঝির সঙ্গে গল্প করার সময় মুখে কাপড় বেঁধে নৌকায় চেপে হাজির হয় একদল দুষ্কৃতী। ভুটুবাবুর উপরে চড়াও হয়ে পাইপগান থেকে পেটে ও কানে পরপর দুটি গুলি চালায়। মাঝিরা ভয়ে পালিয়ে যান। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাঁধে কোপানো হয়। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা সৌমিত্র রায় অভিযোগ করেন, সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালিয়ে কংগ্রেস কর্মী ভুটুবাবুকে খুন করে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। দীর্ঘদিনের বিবাদ মেটাতে সিপিএমকে বারবার আলোচনায় বসতে অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু ওঁরা গুরুত্ব দেয়নি। সিপিএমের মালদহ জেলা কমিটির সদস্য তথা স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত সিংহ বলেন, “দীনেশবাবু ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে গত দু’বছর ধরে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। এ ছাড়াও দুটি পরিবারকে নিয়ে বেশ কয়েকবার আলোচনা হয়েছে। কেউ এক ইঞ্চি মাটি ছাড়তে রাজি নয়। |