শিলিগুড়ির ইউকো রোডের বর্ধমান রোড শাখায় ফিক্স ডিপোজিট (এফডি)-এর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ নিয়ে তথ্য সংগ্রহে নামল সিবিআই। শুক্রবার সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখার অফিসাররা ব্যাঙ্কে গিয়ে অফিসার-কর্মীদের জেরা করে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, পুলিশি তদন্ত চলছে। বিভাগীয় পর্যায়েও তদন্ত শুরু হয়েছে। পাশাপাশি, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কে নয়ছয়ের অভিযোগ হওয়ায় সিবিআইয়ের ওই শাখা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে তদন্তে নেমেছে বলে ব্যাঙ্কের এক পদস্থ অফিসার জানান। এদিন সিবিআিয়ের অফিসাররা ব্যাঙ্কের জোনাল ম্যানেজার উমেশপ্রসাদ সিংহের সঙ্গে কথাবার্তাও বলেছেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ, যে ভাবে ব্যাঙ্কের অফিসার-কর্মীদের একাংশ মিলে ‘গুছিয়ে’ গ্রাহকদের টাকা দিনের পর দিন নয়ছয় হয়েছে তাতে চট করে ধরা পড়ার কথা অভিযুক্তরা ভাবেননি। কিন্তু, গত ৩১ মার্চ বার্ষিক হিসেবের দিন শক্তিগড়ের বাসিন্দা দিলীপ দেবের কাছ থেকে ১ লক্ষ টাকা নিয়ে ‘ফিক্সড ডিপোজিট’ (এফডি) সার্টিফিকেট দেওয়ার ঘটনায় প্রথম নিজেদের জালে জড়িয়ে পড়ে অভিযুক্তরা। পুলিশের তদন্তকারী অফিসাররা জানান, বার্ষিক হিসেবের দিনে ব্যাঙ্কে সাধারণত কোনও এফডি লেনদেন হওয়ার কথা নয়। অথচ সে দিন ওই এফডি দেওয়া হল কী ভাবে তা নিয়েই সন্দেহ দানা বাঁধে। দিলীপবাবু তাঁর পরিচিত ব্যাঙ্কের চতুর্থ শ্রেণির অস্থায়ী কর্মী চন্দন মণ্ডলকে বিশ্বাস করেই তাঁর ওই টাকা তাঁর হাতে তুলে দেন। তার পরে চন্দন যে এফডি সার্টিফিকেট দেন, তাতে যা সুদের হার লেখা ছিল তা ব্যাঙ্কে চালু নেই। সার্টিফিকেটে তারিখ দেখে সন্দেহ হওয়ায় ব্যাঙ্কে যান। তখন অভিযুক্ত চন্দন ওই সার্টিফিকেট দিলীপবাবুর কাছ থেকে কার্যত কেড়ে নিয়ে ১৭ মে-এর তারিখে কম সুদের নতুন সার্টিফিকেট এনে দেয়। সন্দেহ দৃঢ় দিলীপবাবু দুটি সার্টিফিকেটের জেরক্স সহ ২১ মে ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ওই শাখার ম্যানেজার মদনগোপাল সাহা দেখছি বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলেও দিলীপবাবু সদুত্তর পাননি। এর পরেই ঘটনা পুলিশের নজরে পড়ে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তদন্তে নামলে ধীরে ধীরে সব ঘটনাই সামনে আসে। ওই ম্যানেজার মদনগোপালবাবুও ইতিমধ্যে সাসপেন্ড হয়েছেন। এদিন সকাল থেকেই ওই ব্যাঙ্কে উপচে পড়ে গ্রাহকদের ভিড়। কম্পিউটারে পাশবই, স্থায়ী আমানতের কাগজ মেলানের জন্য লম্বা লাইন পড়ে। বিকাল অবধি ওই কাজ চলে। একাংশ গ্রাহক ওই শাখা থেকে টাকাও তুলে নেন। ব্যাঙ্কের জোনাল ম্যানেজার উমেশ প্রসাদ সিংহ বলেন, “অভিযুক্তরা তো বটেই, ম্যানেজারের গাফিলতিতে ঘটনাটি ঘটেছে। তবে গ্রাহকদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের পাশে রয়েছে।” যে ভাবে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তা ব্যাঙ্কের ইতিহাসে নতুন কিছু নয়। দুই দশক আগে ডুয়ার্সের বীরপাড়ায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের এক কর্মী একই কায়দায় গ্রাহকদের ১৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি, বছর দশেক আগে শিলিগুড়ি স্টেশন ফিডার রোডের আরেকটি ব্যাঙ্কের শাখার আরেক কর্মী টাকা অ্যাকাউন্টে জমা না করে লক্ষ-লক্ষ টাকা গ্রাহকদের ভুয়ো রসিদ দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ চন্দনবাবুর একটি টাটা সুমো গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। এ ছাড়াও অভিযুক্তের আরও সাতটি ছোট গাড়ি ও একটি বাসের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি, ওই ব্যাঙ্ক থেকে চন্দন প্রায় ৭০ লক্ষ টাকার ঋণ তুলেছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। বাস, গাড়ি, নার্সারি মিলিয়ে ওই ঋণ নেওয়া হয়। তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ধৃতেরা ব্যাঙ্কের কম্পিউটারেই গোপনে একটি ফাইলে প্রতারণার সমস্ত হিসাব রাখত। এদিন অভিযুক্তদের শিলিগুড়ির এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। ধৃতদের ১১ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার অনুমতি দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম সন্তোষ পাঠক। শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রাজা বলেন, “অনেক তথ্য মিলেছে। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
নয়া সভাপতি। কংগ্রেসের নকশালবাড়ি ব্লকের সভাপতি মনোনীত হলেন পৃত্থীশ রায়। ব্লক কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারই জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকারের চিঠি পৃত্থীশবাবুর হাতে পৌঁছেছে। ব্লকের কার্যকরী সভাপতি হয়েছেন সুনীল ঘোষ। সুনীলবাবু বলেন, “সাত দিনের মধ্যে নয়া ব্লক কমিটি তৈরি করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।” |