এক দিন আগেই বিদ্যাসাগর পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান স্থগিত রাখতে অনুরোধ জানিয়েছিলেন অধ্যাপক শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মত বদলে গেল তাঁর। শুক্রবার ওই পুরস্কার গ্রহণ করেছেন তিনি। তবে নিজে নয়, প্রতিনিধি পাঠিয়ে।
বিদ্যাসাগর পুরস্কার দেওয়াকে কেন্দ্র করে মহাশ্বেতা দেবীর সঙ্গে রাজ্য সরকারের ‘মতপার্থক্য’ সামনে আসার পরে, বৃহস্পতিবার দুপুরে পুরস্কারের জন্য মনোনীত শিবাজীবাবু সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলেন, যত দিন না পুরস্কার প্রাপক বাছাইয়ের পদ্ধতিগত দিকটি স্বচ্ছ হচ্ছে, তত দিন যেন ২০১২ সালের বিদ্যাসাগর পুরস্কার দেওয়া না-হয়। হলেও তাঁকে যেন ‘অব্যাহতি’ দেওয়া হয়। এ দিন নজরুল মঞ্চে কাজী নজরুল ইসলামের জন্মদিবস উদ্যাপন উপলক্ষে রাজ্য সরকার আয়োজিত অনুষ্ঠানে নিজে উপস্থিত না-হলেও ছাত্র সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে বিদ্যাসাগর পুরস্কার নেন শিবাজীবাবু। এর আগে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলা অ্যাকাডেমির তরফ থেকে বিবৃতি দিয়ে ওই পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে ‘স্বচ্ছতা’ ব্যাখ্যা করা হয়। সমালোচনা করা হয় অ্যাকাডেমির চেয়ারপার্সন মহাশ্বেতা দেবীর ভূমিকার। |
ফিরোজা বেগমকে নজরুল পুরস্কার দিয়ে সম্মান জানাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র |
এ দিন শিল্পী, কবি, লেখক, গায়ক, অভিনেতা-সহ মোট ২৫ জনকে বিভিন্ন সরকারি পুরস্কার দেওয়া হয়। বিশেষ নজরুল পুরস্কার দেওয়া হয় ফিরোজা বেগমকে। প্রত্যেকের হাতেই পুরস্কার তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে।
বিদ্যাসাগর পুরস্কার সংক্রান্ত বিতর্ক নিয়ে এ দিন একটি বাক্য খরচ না-করলেও নজরুল অ্যাকাডেমি নিয়ে তৈরি বিতর্ক সম্পর্কে মুখ খোলেন মমতা। আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, সল্টলেকে ইন্দিরা ভবনে অ্যাকাডেমি গড়ার ক্ষেত্রে যে-ধরনের ‘রাজনীতি’ হচ্ছে, নজরুলের মতো ব্যক্তিত্বকে তিনি সেই ‘কলুষতা’য় জড়াতে চান না। এ দিন নিজের বক্তব্যেও সে-কথাই আবার বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতার কথায়, “প্রথমে ঠিক করেছিলাম, ইন্দিরা ভবনে নজরুল অ্যাকাডেমি হবে। ওখানে জ্যোতিবাবু (জ্যোতি বসু) থাকতেন। ওটা গেস্ট হাউস ছিল। জায়গাটা অনেক দিন পড়ে ছিল। কিছুই হত না ওখানে। ওটা কারও নামে ছিল না। কিন্তু কেউ কেউ আপত্তি তুলেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে কোনও ভাবে কলঙ্কিত হতে দেব না। ঠিক করেছি, রাজারহাটে হিডকো ভবনের উল্টো দিকে নজরুল অ্যাকাডেমি গড়া হবে। সবাই জেনে রাখুন, শুধু অ্যাকাডেমি নয়, ওটা হবে নজরুল-তীর্থ। সেখানে গবেষণাগার, আর্কাইভ সব থাকবে।” মুখ্যমন্ত্রী এ দিন অভিযোগ করেন, চুরুলিয়ায় নজরুলের জন্মস্থান এত দিন অবহেলিত ছিল। তাঁর কথায়, “চুরুলিয়াকে রেলপথ দিয়ে জোড়া হবে। তা ছাড়া নজরুলের নামে গড়া হবে একটি বিশ্ববিদ্যালয়।” |