দক্ষিণ কলকাতা
শান্তিলালের বাগান
রাতেও সূর্য
ক সময়ে দিনেও পাশ দিয়ে যেতে গা ছমছম করত। এখন সেখানে রাতেও সূর্যের আলো। ছবিটি নাকতলার শান্তিলালের বাগানের।
সম্প্রতি নাকতলার শান্তিলালের বাগানে কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে বসানো হয়েছে সৌরশক্তির আলো। তৈরি হয়েছে একটি কমিউনিটি সেন্টারও। এই কমিউনিটি সেন্টার পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে পাড়ার মহিলাদের হাতেই।
পুরসভার উদ্যান বিভাগ সূত্রে খবর, শহরের সব ক’টি পার্কেই সৌরশক্তির আলো বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত দু’টি জায়গায় পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে। একটি দক্ষিণ কলকাতার নাকতলায় শান্তিলালের বাগান। অন্যটি উত্তর কলকাতার কলেজ স্কোয়ার।
নাকতলা এলাকার প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, শ্রীগুরু আশ্রমের পিছনে শান্তিলাল জৈনের বিরাট বাগান ছিল। তাঁর পরিবার পরে অন্যত্র চলে গেলেও বাগানটি থেকে যায়। আটের দশকের শুরুতে বাগান সংলগ্ন এলাকায় বেশ কিছু পরিবার বাস করতে শুরু করে। এই সব পরিবারের মহিলারা কয়েক বছর আগে ‘উত্তরণ’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেন।
এই সংগঠনের প্রবীণ সদস্য সুকান্তা গুহরায় বলেন, “বাড়ির পাশের বাগানটিকে সুন্দর করে সাজানোর জন্য আমরা অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন জায়াগায় আবেদন করেছিলাম। শেষে ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে আবেদন জানালে তিনি আমাদের আশ্বাস দেন। এর পরে বাগানটির সৌন্দর্যায়ন শুরু হয়।” আর এক বাসিন্দা সুস্মিতা রাহার কথায়: ‘‘আমরা দীর্ঘ দিন ধরেই চেষ্টা করছিলাম। সেই চেষ্টা বাস্তবায়িত হওয়ায় খুব ভাল লাগছে।’’
শান্তিলালের বাগানে সৌরশক্তির আলো বসানোর পাশাপাশি কমিউনিটি সেন্টারও তৈরি হয়েছে। সেখানেও সৌরশক্তির আলো ব্যবহার করা হয়েছে। এখন সমাজের পিছিয়ে পড়া মহিলা ও তাঁদের সন্তানদের নাচ, গান, আঁকা, সেলাই এবং পড়াশোনা শেখাচ্ছেন উত্তরণের সদস্যরা। সংগঠনের সম্পাদক ছায়া ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের এখানে বিনা খরচে ৪০ জন নানা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।”
১০০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তৃণমূলের অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়: ‘‘পুরসভার পরিকল্পনা অনুসারে বাগানটি সাজানো হয়েছে। স্থানীয় মহিলারা বাগানটি সাজানোর জন্য আবেদন করেছিলেন। তাঁদেরই রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনুমতি নিয়ে শান্তিলালের বাগানের কমিউনিটি সেন্টারটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য যে কেউ ব্যবহার করতে পারবেন।”
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, বাগানটি সাজাতে প্রায় বারো লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে বাগান সাজাতে এবং কমিউনিটি সেন্টার করতে প্রায় নয় লক্ষ টাকা। সৌরশক্তির আলো বসাতে তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে।
মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “কলকাতার বিভিন্ন পার্কে সৌরশক্তি ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কলেজ স্কোয়ার আর শান্তিলালের বাগানে সেই কাজ হয়েছে।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.