দক্ষিণ কলকাতা
যতীন দাস পার্ক
উদ্যানে অবহেলা
কই কাজে দু’বার টেন্ডার ডাকল কলকাতা পুরসভা। হাজরা মোড়ে যতীন দাস পার্কের উন্নয়নে গত বছর কাজ শুরু করে চলতি বছরে নতুন করে টেন্ডার ডেকে পার্কের বাকি কাজ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।
গত বছর পুজোর আগেই ভেঙে ফেলা হয় পার্ক-লাগোয়া সুলভ শৌচাগার। নতুন করে পার্কের চার পাশে রেলিং বসিয়ে রং করা হয়। মাঠে ফেলা হয় ঘাসের বীজ। পরে ঘাস গজিয়ে মাঠ সবুজও হয়ে ওঠে। কিন্তু কাজ আর এগোয়নি। যে ঘাস লাগানো হয়েছিল, তা শুকিয়ে বেশ কিছু জায়গায় মাটি উঠে গিয়েছে। এর ফলে থমকে রয়েছে পার্কের উন্নয়ন। পার্কের কাজ বন্ধের পিছনে পুরসভা অর্থাভাবের কথা বললেও অভিযোগ উঠেছে, আগের সংস্থাকে ঠিকমতো টাকা না দেওয়ার জন্যই এই অবস্থা। যদিও পুরসভার সংশ্লিষ্ট দফতর এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পুরসভার পার্ক ও উদ্যান বিভাগ থেকে জানা গিয়েছে, যতীন দাস পার্কের পুরো উন্নয়ন করে সাজাতে ৩৫ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। কিন্তু গত বছরে ২০ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। পার্কের ধারের সুলভ শৌচাগার ভাঙা এবং চার পাশ রেলিং দিয়ে ঘিরে রং করা, ঘাস বসানোর পরে ওই টাকায় বাকি কাজ করা সম্ভব হয়নি। এ বছর আবার টাকা পাওয়ার পরে নতুন করে টেন্ডার ডাকা হয়েছে।
কিন্তু একই কাজে দু’বার টেন্ডার ডাকা হল কেন?
মেয়র পারিষদ (পার্ক ও উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “কাজের ধরন আলাদা হওয়ায় দু’বার টেন্ডার ডাকতে হয়েছে। তা ছাড়া তখন ফান্ড কম ছিল। তাই তখন যে কাজ হয়েছে সেটি সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে বলেই নতুন ফান্ডের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে।”
পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগ-সূত্রের খবর, যে সব জায়গায় ঘাস উঠে মাটি বেরিয়ে পড়েছে, সেখানে নতুন করে ঘাসের বীজ ফেলা হবে। যদিও পুরসভার এক আধিকারিকের বক্তব্য, ঘাস শুকিয়ে গেলেও জল পড়ার পরে তা আবার সবুজ হয়ে উঠবে। তবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় যে পার্কে নতুন করে মাটি ফেলতে হবে তা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।
আরও জানা গেল, পার্কে বেশ কয়েকটি বসার জায়গা, আটচালা তৈরি করা হবে এবং গাছ লাগানো হবে। পার্কে ঘাস লাগানো হলেও তার চার পাশে হাঁটার জন্য রাস্তাও তৈরি করা হবে। জানা গেল, ইতিমধ্যেই পার্কের ভিতরে আটচালার আকারে যে নির্মাণ ছিল, সেটিকেও নতুন করে নির্মাণ করা হবে।
যতীন দাস পার্কে প্রতি বছরই দুর্গাপুজো হয়। পুজোটি পুরসভারই কর্মীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হয়ে থাকে। এত টাকা খরচ করার পরেও কি পার্কের ভেতরের মাঠের ঘাস নষ্ট করে পুজো করতে দেওয়া হবে? কারণ, পার্কের ঠিক মাঝখানে মণ্ডপ তৈরি হলে সেখানকার ঘাস নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগে পার্কে ঘাস লাগিয়ে উন্নয়নের কাজ শেষ হোক, তার পরে পুজো এলে দেখব কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়।”

ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.