|
|
|
|
|
|
|
মনোরঞ্জন ২... |
|
দেদার দরাদরি, মীর ও মজা |
সানন্দা টিভিতে ‘জবাব কিনতে চাই’। পরশু থেকে। কেমন সে আসর? আগাম সন্ধান। দিচ্ছেন শমীককুমার ঘোষ |
যাকে বলে লা জবাব! বলা ভাল, লাও জবাব!
নিউ মার্কেট-গড়িয়াহাট-হাতিবাগানের ফুটপাথ, মানিকতলার মাছের বাজার বা গড়িয়ার সব্জি বাজার ছেড়ে বাঙালির প্রিয় দরাদরি এ বার টিভির পর্দায়। দরদাম করে কিনতে হবে জবাব। বলতে হবে, তোমরা আমাকে জবাব দাও, আমি তোমাদের টাকা দেব।
যেমন, শুভদীপ দত্ত চৌধুরী বা শতরূপা নিয়োগী। বিশ্বাস করার দরাদরিতে তেমন দক্ষ নন। তাই তাঁদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে, ভুল জবাব দিয়ে হাসতে হাসতে টাকা জিতে নিতে পারেন সৌরভ মণ্ডল বা পল্লবী সিংহরা।
কিংবা কল্যাণীর গৃহবধূ সাবিনা ইয়াসমিন। দরাদরি তাঁর হৃদয়ে। বিকিকিনির হবিতে রেয়াত করেন না খোদ স্বামীকেও। সগর্ব ঘোষণা, স্বামীকে কিপটে বললে তবেই তার পকেট থেকে টাকাপয়সা বেরোয়। আর তাই একশো টাকার জিনিস বাড়িয়ে পাঁচশো টাকা বলে জিতে যান দাম্পত্য দরাদরিতে।
হাসতে চান, নাকি, কিনতে চান, জিততে চান ? রাস্তা একটাই- মীর আফসর আলি।
সানন্দা টিভিতে সিদ্ধার্থ বসুর নতুন ক্যুইজ শো ‘জবাব কিনতে চাই’-এর উপস্থাপক তিনিই। শুরু ২৮ মে। রেডিও জকি থেকে লাফটার মাস্টার হয়ে মীর এ বার ক্যুইজ মাস্টার।
তার মানে তো সে দিন থেকে রেডিও-টিভি মীর-ময় হয়ে যাবে? সকাল ৭টা থেকে ১১টা তিনি এফএমে, রাত ৮.৩০ থেকে সানন্দা টিভিতে ‘জবাব কিনতে চাই’-এ এবং ৯.৩০ থেকে আর এক চ্যানেলে আর এক লাফটার শো-এ। “হিসেবটা শুনে সত্যি বলছি, ভয় লাগছে। আমার মেয়ে আমার শো-গুলোর সবচেয়ে বড় সমালোচক। তার ক্ষোভ, এ বার টিভিতে সন্ধে থেকে খালি বাবাকেই দেখতে হবে, কার্টুন দেখা হবে না। তাই ঠিক করেছি, এই দু’টো শোয়ের পরে এক বছর আমি টিভিতে মুখ দেখাব না। অজ্ঞাতবাসে যাব,” হা হা করে হাসছেন মীর। |
|
বিদেশি রিয়েলিটি গেম শো ‘সেল মি দ্য আনসার’-এর আদলে ভারতে এমন গেম শো এই প্রথম, তা-ও আনন্দবাজার গোষ্ঠীর বাংলা বিনোদন চ্যানেলে। ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’ না ‘জবাব কিনতে চাই’, আপনার মনের কাছাকাছি কোনটাকে রাখবেন? সিদ্ধার্থ বসু বলছেন, “আমি সামনের দিকে তাকাতে ভালবাসি। এই মুহূর্তে আমার পাখির চোখ ‘জবাব কিনতে চাই’। নানারকম প্রতিযোগী, উত্তেজনার চড়াই-উৎরাই, হরেক মজা। সবার ওপরে মীর এখানে ওর বিনোদনজীবনের অন্যতম সেরা ফর্মে।”
সেই মীর জানাচ্ছেন, সিদ্ধার্থবাবুর সঙ্গে কাজ করা ভাগ্যের ব্যাপার। এই শোয়ের মুড ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’র মতো সিরিয়াস নয়, আবার ফচকেমিও নয়। বাঙালির সহজাত প্রতিভা সর্বত্র দেদার দরাদরি করার এবং বাঙালির সাধারণ জ্ঞানের দক্ষতারও নামডাক আছে। ‘জবাব কিনতে চাই’ এই দুইয়ের মিশ্রণ। রয়েছে বিশ্বাস কেনাবেচাও। সঙ্গে মীর এবং তাঁর তাৎক্ষণিক রসিকতার ভাণ্ডার।
একজন খেলোয়াড়, তাঁর উল্টো দিকে ৬০ জন ট্রেডার বা জবাব-বিক্রেতা। এই ৬০ জন যেনতেন প্রকারেণ দরাদরির মাধ্যমে ভুল বা ঠিক, যা হোক একটা জবাব বিক্রি করে টাকা রোজগার করতে মুখিয়ে আছেন। আর খেলোয়াড় বুদ্ধি করে, ট্রেডারকে বিশ্বাস করে, দরদাম করে ঠিক জবাবটা কিনে জেতার চেষ্টা করছেন। “আমি নিরপেক্ষ। চোখের সামনে দেখছি, একজন খেলোয়াড় এক লাখ টাকার ওপর জিতে আছেন, কিন্তু ট্রেডার তাঁর সঙ্গে দরদাম করে এক লাখ টাকা জিতে নিয়েও ভুল উত্তর বেচছেন। ট্রেডার ঢপ দিচ্ছেন, খেলোয়াড়কে বোকা বনছেন। রাগে গা চিড়বিড় করছে, তাও কিছু বলতে পারছি না,” বলছেন মীর। ট্রেডারের দোষে হেরে বেরিয়ে যাওয়া এক প্রতিযোগীর দাবি, “উত্তর ভুল হলে যেমন খেলোয়াড়কে বেরিয়ে যেতে হচ্ছে, ভুল উত্তর দিলে ট্রেডারকেও সে ভাবে শো থেকে বার করে দেওয়া উচিত।” আর ক্যুইজ সঞ্চালনা করতে গিয়ে মীরের উপলব্ধি,“আমরা বলি, ভদ্রলোক কত জানেন, তবু কোনও
অহংকার নেই। এই শোয়ে দেখলাম, কিচ্ছু জানে না, তবু কোনও লজ্জা নেই।”
ইউনিটের একজন জানালেন, দরদামের পারদ মাঝেমধ্যে এমন চড়ছে যে হাতাহাতির উপক্রম ঘটছে। এবং ক্যুইজ মাস্টার তাঁর স্বভাবসুলভ রসিকতা দিয়ে সামাল দিচ্ছেন পরিস্থিতি। আবার কেউ ভুল জবাব দিলে তাকে তুমুল চাটতেও ছাড়ছেন না মীর।
মীর সচেতন, তাঁর রসিকতা যেন বাড়াবাড়ি হয়ে না যায়। ‘জবাব কিনতে চাই’-তে ক্যুইজ শোর ফরম্যাট মেনে, শো সঞ্চালনার সঙ্গে গতি আনা আমারই দায়িত্ব, সঙ্গে মুডটাকে হাল্কা রাখাটাও। ২৫ লাখ টাকা ইনভলভড এই গেম শোয়ে।”
লাফটার মাস্টার আর ক্যুইজ মাস্টার মীরের সংঘাত হচ্ছে না তো? মীর বলছেন, “এর জবাবটা আমিই কিনতে চাই দর্শকদের কাছ থেকে।”
দরাদরি করতে তৈরি তো আপনি?
চোখ রাখুন সানন্দা টিভিতে, সোমবার থেকে শনিবার। রোজ রাত সাড়ে আটটায়। |
|
|
|
|
|