|
|
|
|
তেল-বিক্ষোভ |
বিজেপির ছোঁয়া এড়াচ্ছে সিপিএম |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে আপাতত বিজেপি-র ডাকা ভারত বন্ধের ছোঁয়া বাঁচাতে তৎপর সিপিএম তথা বামফ্রন্ট। প্রতিবাদ করতে গিয়ে কোনও ভাবেই বিজেপির সঙ্গে এক বন্ধনীতে পড়তে নারাজ বামেরা। বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুর কথায়, “ওদের আগে আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েছি। ওদের কর্মসূচির সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই।” এনডিএ-র ডাকা বন্ধে তাঁদের অবস্থান কী? বিমানবাবুর জবাব, “আমরা এনডিএ-র ডাকা বন্ধের বিরোধিতা বা সমর্থন কিছুই করছি না। আমরা প্রতিবাদ মিছিল করছি। বন্ধ করছি না।”
পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ৩১ মে ভারত বন্ধের ডাক দিয়েছে এনডিএ। একই দিনে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়েছে সিপিএম-সহ চারটি বাম দল। দিল্লিতে চার বাম দলের যৌথ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ রাজ্যেও সেদিন প্রতিবাদে পথে নামবেন বামপন্থীরা। আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করতে শুক্রবার আলিমুদ্দিনে বামফ্রন্টের বৈঠক বসে। সেখানেই ঠিক হয় ২৬ থেকে ৩০ মে জেলায় জেলায় প্রতিবাদ মিছিল ও জমায়েত করার পর ৩১ মে, বৃহস্পতিবার কলকাতায় কেন্দ্রীয় প্রতিবাদ মিছিল করা হবে। বিমানবাবু বলেন, “পেট্রোলের দাম গত দু’বছরে ২৫ টাকা বেড়েছে। এ বারের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করতে হবে।” যদি বর্ধিত দাম আংশিক প্রত্যাহার করা হয়? বিমানবাবু জানান, সেক্ষেত্রেও তাঁদের কর্মসূচি বহাল থাকবে।
সম্প্রতি টেলিকম কেলেঙ্কারি-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সংসদে একযোগে সরব হয়েছে বাম-বিজেপি। তা নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব বামেদের পাল্টা কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি। এ বার কিন্তু পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ করতে গিয়ে বিজেপি-র সঙ্গে ‘দূরত্ব’ রক্ষায় সচেষ্ট বামেরা। একই দিনে দু’পক্ষের ‘প্রতিবাদ’। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে পারে, তা হলে কি নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করেই প্রতিবাদের দিন ধার্য হয়েছিল? এ রাজ্যে পুরভোটের মুখে প্রশ্নটির ‘রাজনৈতিক তাৎপর্য’ রয়েছে। বিশেষ করে যখন পাঁশকুড়া, হলদিয়া ও নলহাটি এই তিন পুরসভা এলাকায় যথেষ্ট মুসলিম ভোট রয়েছে। পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে তৃণমূলও প্রতিবাদ করেছে। আজ, শনিবার মিছিল করছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই প্রেক্ষিতে পুরভোটে বাম-বিজেপি আঁতাত নিয়ে তৃণমূল প্রচার করতে পারে। মূলত এই আশঙ্কা থেকেই বিজেপি-ছোঁয়া বাঁচাতে তৎপর বিমানবাবুরা। ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বলেন, “দিল্লিতে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাটের নেতৃত্বে চার বাম দলের বৈঠকে বৃহস্পতিবার দুপুরেই ৩১ মে দেশে জুড়ে প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিজেপি-র নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র তরফে প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত জানানো হয় বিকেলে। তখনও স্পষ্ট বন্ধের কথা বলা হয়নি। পরে বন্ধের দিন ধার্য হয়।” বিমানবাবুর দাবি, “একই দিনে প্রতিবাদ কর্মসূচি নেওয়া হলেও বামেরা আগে দিন ঠিক করেছিল। বিজেপি পরে।” অর্থাৎ যদি একপক্ষ অন্যকে অনুসরণ করেও থাকে, তার দায় বিজেপি-র। বামেদের নয়।
পেট্রোলের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে তৃণমূলের প্রতিবাদ মিছিলকে কটাক্ষ করে বিমানবাবু বলেন, “মানুষের চোখ অন্য দিকে ঘোরাতে ওরা প্রতিবাদ করছে।” তিনি বিরোধী নেত্রী থাকার সময়ে পেট্রোপণ্যের দাম বাড়লে রাজ্যে কর ছাড়ের দাবি করতেন মমতা। সে কথা উল্লেখ করে বিমানবাবু বলেন, “তাঁর কথা ও কাজে মিল রাখতে হলে রাজ্য সরকারের বর্ধিত কর অবিলম্বে ছাড়া উচিত। একাধিক রাজ্য এ কাজ করেছে।” |
|
|
|
|
|