|
|
|
|
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
‘অসঙ্গতি’তে স্থগিত শিক্ষক-প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রক্রিয়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে তিন সপ্তাহ আগে। এত দিন পরে সেনেট, স্নাতক সংসদে শিক্ষক-প্রতিনিধি নির্বাচনের প্রক্রিয়ায় ‘অসঙ্গতি’ ধরতে পারলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। অসঙ্গতি নজরে আসায় আপাতত নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। শুক্রবার সিন্ডিকেটের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট, স্নাতক সংসদ, স্নাতকোত্তর সংসদ (পিজি কাউন্সিল)-এ শিক্ষক-প্রতিনিধি নির্বাচন হওয়ার কথা সেপ্টেম্বরে। তার জন্য ৪ জুনের মধ্যে ভোটারদের নাম নথিভুক্ত করার কথা ছিল। গত ২ মে এই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করেন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে গেল।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পরে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিভিন্ন সংস্থার নির্বাচন এক দফা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজভবন থেকে নির্দেশ পাঠিয়ে বলা হয়েছিল, উচ্চশিক্ষার উন্নয়নে সরকার বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়েছে। মনে করা হচ্ছে, তারা নানা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ করবে। তাই রুটিন কাজ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব গুরুত্বপূর্ণ কাজই স্থগিত রাখতে বলা হয়।
সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পরে নতুন আইন তৈরি করা হয়েছে। সেই অনুসারে ‘স্ট্যাটিউট’ বা বিধিও বদল করা দরকার। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় বিধি বদল না-করেই শিক্ষক-প্রতিনিধি নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করে। গোল বেধেছে সেখানেই। আইন অনুযায়ী বিধি পরিবর্তন না-করে কী ভাবে নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হল, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সিন্ডিকেটের সদস্যেরা। বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, আইনি পরামর্শ নিয়েই যা করার করা হয়েছিল।
শুক্রবার ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি এবং ২ মে-র বিজ্ঞপ্তির মধ্যে অসঙ্গতি রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনার জন্য পাঁচ সদস্যের স্ট্যাটিউট কমিটি তৈরি করেছে সিন্ডিকেট। সেই কমিটির রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা হচ্ছে।
বামপন্থী শিক্ষকেরা অবশ্য এই ঘটনার ব্যাখ্যা করেছেন অন্য ভাবে। প্রাক্তন উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সুদর্শন রায়চৌধুরীর বক্তব্য, এক বার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাওয়ার পরে নির্বাচনী প্রক্রিয়া স্থগিত রাখা কার্যত নজিরবিহীন। তিনি বলেন, “আসলে তৃণমূল বুঝতে পারছে, তিন-চার মাসের মধ্যে নির্বাচন হলে তাদের ঘনিষ্ঠ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জেতার সম্ভাবনা কম। রবীন্দ্রভারতীর কোর্ট-কাউন্সিলে পর্যুদস্ত হওয়ার পরে ওরা ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই এখন এ ভাবে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব ঘটাচ্ছে।” যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজের অধ্যক্ষ তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ মানিক ভট্টাচার্য অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, “কিছু অসঙ্গতির কারণেই নির্বাচনী প্রক্রিয়া পিছিয়ে দিতে হয়েছে।” |
|
|
|
|
|