উন্নতমানের ইস্পাত উৎপাদনের লক্ষ্যে রাজ্যে নতুন একটি কারখানা গড়ে তুলবে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সেল। বর্ধমানের কুলটিতে প্রকল্পটি গড়ে তুলতে তারা আলাদা ভাবে ৬-৭ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করতেও তৈরি। অভিজ্ঞ কোনও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকল্পটি গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন সেলের চেয়ারম্যান সিএস ভার্গব।
বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রেলের যন্ত্রাংশ নির্মাণের কারখানা গড়ার ব্যাপারে একটি সমঝোতা চুক্তি করতে শুক্রবার মহাকরণে এসেছিলেন ভার্গব। চুক্তি শেষে তিনি বলেন, “কুলটির প্রস্তাবিত কারখানায় বছরে ১০ লক্ষ টনেরও বেশি ইস্পাত উৎপাদন করা হবে। উন্নতমানের সেই ইস্পাত প্রতিরক্ষায় লাগানো হবে।”
রাজ্যের বিভিন্ন ইস্পাত কারখানার সম্প্রসারণ খাতে পর্যায়ক্রমে ২১ হাজার কোটি টাকা লগ্নির পরিকল্পনা করেছে সেল। অনেকগুলোর কাজ শেষ পর্যায়ে। বার্নপুরে ইসকো-র উৎপাদনক্ষমতা বৃদ্ধির কাজে ১৩ হাজার কোটি ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে। তবে কুলটির প্রস্তাবিত প্রকল্পে সেল লগ্নি করবে সম্পূর্ণ আলাদা ভাবে। এবং এ ক্ষেত্রে জমিও কোনও বাধা হবে না বলে সংস্থার দাবি। সংস্থা-সূত্রের বক্তব্য: কুলটিতে সেলের হাতে প্রায় ছ’শো একর জমি রয়েছে। তাতে নতুন একটি প্রকল্প গড়ার কথা সেল-কর্তৃপক্ষ গত ক’বছর ধরেই ভাবছিলেন। নিছক পরিকল্পনার স্তর ছেড়ে বিষয়টি সম্প্রতি ক’ধাপ এগিয়েছে বলে জানিয়েছেন সেল-কর্তারা।
দুর্গাপুরে জাপানি সংস্থা কোবে-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে লৌহ আকরিকভিত্তিক (আয়রন ওর নাগেটস) একটি প্রকল্প গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেল। তাতে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা লগ্নি হবে। ভার্গবের দাবি, দেশে এটাই হবে এ ধরনের প্রথম কারখানা। প্রকল্পটিতে পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্রের জন্য ইতিমধ্যে আবেদনও করা হয়েছে।
নতুন প্রকল্প রূপায়ণে সেলের ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী বেণীপ্রসাদ বর্মা। এ সম্পর্কে ভার্গব জানান, চলতি অর্থবর্ষের (২০১২-১৩) শেষে তাদের হট মেটাল উৎপাদনক্ষমতা বেড়ে ১ কোটি ৯০ লক্ষ টনে দাঁড়াবে। আর কারখানা সম্প্রসারণের সুবাদে আগামী দেড় বছরের মধ্যে তা আড়াই কোটি টনের কাছাকাছি চলে আসবে। “ইস্পাত শিল্পে সারা দেশে আমরা মোট ৭২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তার ৩৬ হাজার কোটি ইতিমধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে।” বলেন ভার্গব। |