রাজনৈতিক টানাপোড়েনে জর্জরিত নন্দীগ্রামে এ বার শিল্পের সুরাহা। নন্দীগ্রামের জেলিংহামে রেলের যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা গড়বে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা সেল এবং বার্ন স্ট্যান্ডার্ড। শুক্রবার মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী মুকুল রায়ের উপস্থিতিতে ওই দুই সংস্থার মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়। যৌথ উদ্যোগের ওই প্রকল্পে প্রায় ২০০ কোটি টাকা লগ্নি করা হবে।
চুক্তির পরে মুখ্যমন্ত্রী জানান, কারখানাটিতে ৩০০ মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হবে। আর যন্ত্রাংশ যা তৈরি হবে, অর্ধেকই কিনবে রেল। মমতা বলেন, “রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নের ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি বিশেষ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সেলের মতো একটি বৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা এই প্রকল্পে লগ্নি করতে এগিয়ে এসেছে।”
জেলিংহামে কলকাতা বন্দরের প্রায় ১২৮ একর জমি লিজ নেওয়া আছে বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের। তারই মধ্যে ৫০ একর জমিতে গড়ে উঠবে ওই প্রকল্প। প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কারখানাটিতে বছরে ১০ হাজার ইস্পাতের বগি এবং ১০ হাজার ওয়াগন ‘কাপলার’ তৈরি হবে। উৎপাদন শুরুর পর থেকে রেল টানা ১০ বছর মোট উৎপাদনের অধের্কই কিনে নেবে বলে দুই সংস্থাকে জানিয়ে দিয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা, জেলিংহামে যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানাটিকে ঘিরে অনুসারী শিল্পও গড়ে উঠুক। বিষয়টি তিনি সেল-কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন। সে-ক্ষেত্রে রাজ্যের শিল্প দফতরও প্রকল্পে অংশীদার হতে পারে বলে জানান মমতা।
বার্ন স্ট্যান্ডার্ড রুগ্ণ সংস্থা। এই প্রকল্পে জমিই তাদের আসল মূলধন। কলকাতা বন্দর-কর্তৃপক্ষও যৌথ উদ্যোগের এই প্রকল্পে সম্মতি দিয়েছেন। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড সূত্রের খবর, প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্যেই যেখানে জমি পাওয়াটা অন্যতম সমস্যা, জেলিংহামে সেখানে জমি হাতেই রয়েছে। সেই জন্য সেল এই প্রকল্পের ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছে। সেলের চেয়ারম্যান সি এস ভার্গব এ দিন জানান, প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান ছাড়াও কারখানাটিকে ঘিরে পরোক্ষ ভাবে আরও ৩০০ মানুষের রুজিরোজগারের সুযোগ হবে। ২০১৪ সালের শেষ দিকে কারখানার উৎপাদন শুরু হয়ে যাবে বলে জানান ভার্গব। বার্ন স্ট্যান্ডার্ডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর দয়ানিধি মরান্ডি জানান, সেল ও বার্ন স্ট্যান্ডার্ড ওই প্রকল্পের জন্য ৬০ কোটি টাকার সংস্থান করবে। কিছু টাকা আসবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে। বাকিটা ঋণ নেওয়া হবে বাজার থেকে। |