গাড়ি শিল্পকে বাঁচাতে এ বার ডিজেলের দাম অন্তত কিছুটা বাড়ানোর জন্য সওয়াল করল সিয়াম। তাদের দাবি, গত ১১ মাসে যে ভাবে ডিজেলের দাম এক রেখে পেট্রোলের দর বেড়েছে, তাতে দু’য়ের মধ্যে ফারাক দাঁড়িয়েছে অনেকখানি। ফলে নড়ে গিয়েছে চাহিদার ভারসাম্য। এতে এক দিকে পেট্রোল গাড়ি বিক্রি করা যেমন সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তেমনই ডিজেল গাড়ির বাড়তি চাহিদা সামাল দিতে নাজেহাল হচ্ছে সংস্থাগুলি। আর এই কারণেই ডিজেলের দাম বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছে গাড়ি সংস্থাগুলির এই সংগঠন। একই সঙ্গে, কেন্দ্রকে সুষ্পষ্ট জ্বালানি নীতি তৈরির জন্যও আবেদন জানিয়েছে তারা। যাতে তাতে ভিত্তি করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করতে পারে গাড়ি শিল্প।
এ প্রসঙ্গে জেনারেল মোটরস ইন্ডিয়ার কর্তা পি বলেন্দ্রনের দাবি, দামের ফারাকের কারণে অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েছে ডিজেল গাড়ির চাহিদা। অথচ ঠিক ততটাই কঠিন হয়ে পড়ছে মজুত থাকা পেট্রোল গাড়ি বিক্রি করা। অথচ হঠাৎ করে ডিজেল গাড়ির উৎপাদন বাড়িয়ে যে এই বাড়তি চাহিদা সামাল দেওয়া যাবে, তেমন সম্ভাবনা কম। কারণ, এত দিন ডিজেল গাড়ি ও তার যন্ত্রাংশের দাম বেশি হওয়ায়, পেট্রোল গাড়িই (বিশেষত ছোট গাড়ি) বেশি কিনতেন সাধারণ মানুষ। কারখানাতেও পরিকাঠামো তৈরি রয়েছে সেই অনুযায়ীই। তাই এখন হঠাৎ করে এই চাহিদা মেটানো শক্ত। তা ছাড়া, এখন বিভিন্ন সংস্থা এই পরিকাঠামো গড়তে উদ্যোগী হলেও, তার ফল মিলতে সময় লাগবে। যেমন, পেট্রোল প্রযুক্তির জন্য পরিচিত হোন্ডার ডিজেল গাড়ি আগামী বছরের আগে বাজারে আসা শক্ত। সংস্থা কর্তা জ্ঞানেশ্বর সেন এ নিয়ে জাপানের সদর দফতরে গবেষণার কথা মানলেও, গাড়ি বাজারে আসা নিয়ে মুখ খোলেননি।
কম দামি ডিজেল গাড়ি নেই হুন্ডাই মোটর ইন্ডিয়ারও। দামি গাড়ির ডিজেল ইঞ্জিন তারা আমদানি করে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। সংস্থার কর্তা অরবিন্দ সাক্সেনা জানান, ভারতেই নতুন কারখানা হবে কিনা তা সপ্তাহ তিনেকের মধ্যেই ঠিক হবে। আপাতত পরিস্থিতি সামাল দিতে সহযোগী সংস্থাকে বাড়তি ডিজেল ইঞ্জিন তৈরির বরাত দিয়েছে মারুতি-সুজুকিও। দীর্ঘ মেয়াদে ডিজেল গাড়ি তৈরির জন্য এ দেশে মোটা লগ্নি করতে তৈরি অধিকাংশ সংস্থাই। কিন্তু আখেরে ডিজেলের দাম কেন্দ্র কতটা বাজারের হাতে ছাড়বে, আগে তা দেখতে চায় তারা।
কিন্তু তত দিন কী হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সংস্থাগুলি। তাই টাকার দাম পড়ার সমস্যা দ্রুত মিটুক, তা চাইছে তারা। মারুতি-সুজুকির কর্তা ময়াঙ্ক পারেখের দাবি, টাকার পতনে বাড়ছে যন্ত্রাংশ আমদানির খরচ। সমস্যা দীর্ঘমেয়াদি হলে গাড়ি শিল্পের ভিত নড়ে যাবে, আশঙ্কা ফোর্ড ইন্ডিয়া কর্তা নাইজেল ওয়ার্কের। |