ঢাকুরিয়ার আমরি হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে এখনও পুলিশি পাহারা বহাল আছে। হাসপাতালের ‘অ্যানেক্স বিল্ডিং’ বা সংলগ্ন ভবন থেকে সেই পুলিশি পাহারা তুলে নেওয়ার জন্য সোমবার আলিপুর আদালতে আবেদন জানালেন আমরি-কর্তৃপক্ষ।
গত ৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে আমরি হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। তার পরেই ওই বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়। সামনে বসানো হয় পুলিশ। আমরি-কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওখানে অনেক জরুরি নথিপত্র রয়ে গিয়েছে। সেগুলি তাঁদের প্রয়োজন। অথচ তাঁরা সেখানে ঢুকতে পারছেন না। হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষের আর্জি, ওই হাসপাতাল ভবনের সামনে থেকে পুলিশি পাহারা তুলে নেওয়ার জন্য আদালত তদন্তকারী দলকে নির্দেশ দিক। আমরি-কর্তৃপক্ষের এই আবেদন খতিয়ে দেখে মামলার তদন্তকারী অফিসারকে ৩০ মে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ভারপ্রাপ্ত বিচারক এস এম শাহনাওয়াজের এজলাসে আমরি-কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবী অশোক মুখোপাধ্যায়, সেলিম রহমানেরা বলেন, এই মামলায় চার্জশিট হয়ে গিয়েছে। পুলিশ যে-সব জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে, তা তাদের হেফাজতেই রয়েছে। তা সত্ত্বেও আমরির কাউকেই ওই ভবনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ওখানে থেকে যাওয়া অনেক জরুরি কাগজপত্র কর্তৃপক্ষের হাতে পাওয়া দরকার। আবেদনকারীরা আদালতে আরও জানান, ওই ভবনে বেশ কয়েক জন চিকিৎসকের চেম্বার রয়েছে। বহু রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত অনেক কাগজপত্রও আটকে আছে সেখানে। আগুন লাগার পর থেকে ওই সব চিকিৎসকও ওখানে তাঁদের চেম্বারে ঢুকতে পারছেন না। তাঁদের ওখানে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি। তা ছাড়াও চিকিৎসার বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জাম ওখানে পড়ে রয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেগুলো নষ্ট হচ্ছে। বিমা সংস্থার লোকেরাও ওই ভবনে ঢুকতে পারছেন না বলে অভিযোগ আমরি-কর্তৃপক্ষের।
এই মামলায় জামিনে মুক্ত অভিযুক্তেরা এ দিন মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হন। অন্যতম অভিযুক্ত, অসুস্থ রাধেশ্যাম অগ্রবাল এসেছিলেন অ্যাম্বুল্যান্সে শুয়ে। আমরির যে-সব কর্তা গ্রেফতার হয়েছিলেন, তাঁদের সকলেই জামিন পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের রাতে হাসপাতালের নাইট-ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা সাজিদ হোসেন এখনও জামিন পাননি। তাঁকে এ দিন পুলিশি পাহারায় জেল-হাজত থেকে আদালতে আনা হয়। ৪ মে জেলা ও দায়রা জজের আদালতে তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি রয়েছে। আমরির তিন ডিরেক্টর অবশ্য এখনও ফেরার। তাঁদের হাতে পাওয়ার জন্য হুলিয়া জারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। আদালতের নির্দেশেই সেই হুলিয়া স্থগিত আছে। হুলিয়া নিয়ে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার জন্যও ইতিমধ্যে আর্জি জানানো হয়েছে। |