|
|
|
|
মেদিনীপুরে এসে আপ্লুত ও-পার বাংলার বিদেশমন্ত্রী |
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
শতাব্দী প্রাচীন বাড়িটার সামনে দাঁড়িয়ে আবেগ-বিহ্বল হয়ে পড়লেন তিনি। এই কি সোহরাওয়ার্দি সাহেবের বাড়ি? নিশ্চিত হয়ে মাথাটা খানিক নিচু করলেন বিনম্র শ্রদ্ধায়। ছুঁয়ে দেখলেন দেওয়ালের পুরনো নকশার জাফরি। ব্যক্তিগত সফরে সোমবার আচমকাই মেদিনীপুরে এসেছিলেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি। সঙ্গে স্বামী তৌফিক নওয়াজ, ছেলে তৌকির, মেয়ে দীপাবলি। মেদিনীপুর শহরেই থাকেন তৌফিক সাহেবের মামারা। দীপুদেবী সেই সূত্রে ২০০১-এও এই শহরে এসেছিলেন। আত্মীয় বাড়িতে যাওয়ার পাশাপাশি হোসেন সহিদ সোহরাওয়ার্দির বাড়িটি দেখে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল তাঁর। |
|
সোহরাওয়ার্দি সাহেবের বাড়ির সামনে দীপু মণি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল |
১৯৪৬-এ বাংলার মুসলিম লিগ মুখ্যমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দি সাহেব ১৯৫৬ থেকে ’৫৭ অবধি ছিলেন অবিভক্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। আওয়ামি লিগের প্রার্থী হিসাবেই জিতেছিলেন সংসদে। দলের গোড়ার দিককার সেই নেতার বাড়ি ঘুরে যাওয়া অনেকটাই যেন তীর্থের মতো দীপুদেবীর কাছে। তবে মির্জাবাজারে কুমোরপাড়ার সেই বাড়ি অনেক দিনই হাতবদল হয়ে গিয়েছে। ’৮০ সালে বাড়িটা কেনেন মৃণালকান্তি মজুমদার। সেখানে পৌঁছতেই মজুমদার পরিবারের ছোট্ট ছেলে পরাগ ফুলের তোড়া তুলে দেয় বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর হাতে। পরাগের মুখে ‘ওয়েলকাম’ শুনে অভিভূত দীপুদেবী বলেন, “এখানে এসে খুব ভাল লাগছে। আত্মীয়-বাড়ি এসেছিলাম। তার ফাঁকেই সোহরাওয়ার্দি সাহেবের বাড়িটা দেখে গেলাম।” মন্ত্রী যখন ইতিহাসে ডুব দিচ্ছেন, তাঁর ছেলে তৌকির তখন ব্যস্ত ক্যামেরা নিয়ে। বাড়ির এখনকার বাসিন্দাদের সঙ্গে সপরিবার ছবিও তুললেন বাংলাদেশের মন্ত্রী।
মাদার টেরিজা আন্তর্জাতিক সম্মান নিতে রবিবার কলকাতায় এসেছিলেন দীপুদেবী। আজ, মঙ্গলবার ফিরবেন দেশে। তার আগে সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ পৌঁছন মেদিনীপুরে। প্রথমেই যান শহরের বড়বাজারে তৌফিক সাহেবের ছোটমামা আহম্মেদ জানের বাড়ি। সে বাড়ির এক জন বললেন, “আমাদের বৌদি বাংলাদেশের মন্ত্রী। ভাবলেই গর্ব হয়।” এর পরে তৌফিক সাহেবরা যান শেখপুরায় সেজোমামা খলিলুর রহমানের বাড়িতে। পরে আরও এক আত্মীয়ের বাড়ি ঘুরে যান মির্র্জাবাজারে। মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুরপ্রধান নাজিম আহমেদ। তিনি বলেন, “দেশ ভাগ হয়েছে। আমাদের ভাষা-সংস্কৃতি অভিন্ন। ভারত-বাংলাদেশে মৈত্রী আরও সুদৃঢ় ও গভীর হবে, সেটাই আমাদের সবার আশা।” আত্মীয়দের জন্য দেশ থেকে ইলিশ এনেছিলেন মন্ত্রী। ছোট-মামার বাড়িতে দুপুরের খাওয়া সেরে কলকাতা ফেরেন তৌফিক সাহেবরা। সঙ্গে নিয়ে ফেরেন এমন স্মৃতি, যা হয়তো ভোলার নয়।
|
|
|
|
|
|