অসাধারণ সৌজন্যে সেরার শিরোপা
দেবব্রতকে দিয়ে দিলেন গম্ভীর
|
বজ্রপাতের মতো এই সময় গম্ভীরকে স্লোয়ারে তুলে নিলেন ডোয়েন ব্র্যাভো। ঠিক তখনই প্রবেশ দেবব্রত দাসের। প্রথম বলেই ব্র্যাভোর ফুলটস তিনি পত্রপাঠ পাঠিয়ে দিলেন বাউন্ডারিতে। সেই চারেও পুরোপুরি মেঘ কাটল না। উনিশতম ওভারে হল ১০ রান। শেষ ওভারে চাই ৭। ইউসুফ পাঠান আজ পর্যন্ত কেকেআর-কে একটা ম্যাচও জিতিয়েছেন কি না মনে করা যাচ্ছে না। আজও ব্যর্থ হলেন। শেষ ওভারের প্রথম বলে ইউসুফ নিলেন ২। দ্বিতীয় বল ডট। তৃতীয় বলে ইউসুফ আউট। সবাই ধরে নিয়েছে, চেন্নাইয়ের মাঠ থেকে জিতে ফেরার অধরা স্বপ্ন এ বারও অধরাই থেকে গেল। ভাগ্য ভাল যে, ইউসুফ আউট হয়ে গেলেও ‘ক্রস’-টা সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। যার জন্য দেবব্রত স্ট্রাইক নেওয়ার সুযোগ পেলেন। আর অশ্বিনের চতুর্থ বলটাই তিনি সটান পাঠিয়ে দিলেন মিডউইকেট বাউন্ডারিতে। সবাই এতক্ষণ টেনশনে নড়াচড়া পর্যন্ত করতে পারছিলেন না। দেবব্রতর শটে মেঘ কেটে গেল। তৎক্ষণাৎ নাইটদের ডাগ-আউট থেকে সবাই দৌড়ে এলেন।
গম্ভীর তখনও প্যাড খোলেননি। সেই অবস্থায় দৌড়ে এলেন। এ বারের আইপিএলে প্রথম থেকে কেকেআর অধিনায়কের চোখে পড়েছেন দেবব্রত। বাংলা ক্রিকেটে তিনি নিয়মিত সুযোগ পাননি। কিন্তু গম্ভীর তাঁকে নিয়মিত খেলিয়ে যাচ্ছেন। দেবব্রত এ দিন করেছেন ৪ বলে ১১। গম্ভীরের ৫২ বলে ৬৩ না থাকলে ম্যাচ এতটা গড়াত কি না তাই সন্দেহ। একে তো কঠিন পিচ। স্ট্রোক নেওয়াই যাচ্ছে না। অথচ ম্যাচের সেরা হয়ে প্রিয় সতীর্থের হাতে পুরস্কার তুলে দিলেন কেকেআর অধিনায়ক। আদর করে যাঁকে কেকেআর টিমে ডাকা হয় ‘দাসি’ বলে। গম্ভীর বললেন, “আমি বরাবর মনে করেছি, কী ভাবে শুরু করলে সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। আসল হচ্ছে কী ভাবে শেষ করলে। আর দাসি আজ যে ভাবে মাথা ঠান্ডা রেখে শেষ করল তাতে ওই আসল ম্যান অব দ্য ম্যাচ।” পাশে দাঁড়ানো দেবব্রত বললেন, “সিনিয়ররা আমাকে খুব উৎসাহ দিয়েছে। সমর্থন করেছে।” জানিয়ে দিলেন গম্ভীরই তাঁর ‘মেন্টর’। |
৫ মে ইডেনে দাদা বনাম খান মঞ্চস্থ হওয়ার আগে পরপর দু’টো বড় জয়। গেইলদের রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। এর চেয়ে ভাল প্রস্তুতি আর কী হতে পারে? গম্ভীর এ দিন যে ভাবে বলে গেলেন, “কে বলল ৫ তারিখেরটা বড় ম্যাচ? আমার কাছে ওটা শুধু আর একটা ম্যাচ,” তাতেই টিমের মনোভাব পরিষ্কার। কেকেআর তাদের কাজ সম্পন্ন করে রাখল। ১০ ম্যাচ থেকে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে তারা পয়েন্ট টেবিলে দু’নম্বরে। ৯ ম্যাচ থেকে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পুণে সেখানে সাত নম্বরে। বল এখন সৌরভের যোদ্ধাদের কোর্টে। চাপটা তাদের উপর। মঙ্গলবার মে দিবসে কটকে ডেকান চার্জার্সকে হারাতে পারলে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা মেরামত হবে। না হলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে।
চেন্নাইয়ের মাঠে বসে আবার মনে হচ্ছে, পরিস্থিতি তো মহেন্দ্র সিংহ ধোনির জন্যও কঠিন হয়ে গেল। কী সব করুণ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ভারত অধিনায়ক হিসেবে বিদেশে ০-৮ টেস্ট হারের লজ্জা। আইপিএল অধিনায়ক হিসেবে সৌরভের কাছে প্রথম হার। এ দিন কেকেআরের কাছে ঘরের মাঠে প্রথম হার। তার উপর হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে খেলে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
২ এপ্রিল, ২০১১-র ওয়াংখেড়ে যখন ঘটছিল তখন যদি বলা হত এই লোকটার ভাগ্যে পরের এক বছর এ সব লেখা আছে কেউ বিশ্বাস করত?
|