সম্পাদক সমীপেষু...
শাশুড়ির বাধা ছিল, বিদ্যাসাগরের স্ত্রী পড়তে পারেননি
যা দেখি যা শুনি, একা একা কথা বলি’ (১৮-৪) সম্পাদকীয় নিবন্ধে শ্রদ্ধেয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সুলিখিত ‘ও বিদ্যাসাগর...দরকার’ প্রসঙ্গে একটি প্রয়োজনীয় তথ্য সংযোজনের লোভ সামলাতে পারলাম না। তিনি লিখেছেন, ‘আমার মতে, মেয়েদের শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য বিদ্যাসাগরের অনলস পরিশ্রমের কীর্তিও অন্য কিছুর থেকে কম নয়।’ আদ্যন্ত সত্য। কিন্তু যে বিদ্যাসাগর দেশে স্ত্রী-শিক্ষা বিস্তারের প্রাণপুরুষ ছিলেন, তাঁর নিজের ঘরেই তো ছিল প্রদীপের নীচে অন্ধকার।
কল্যাণী দত্ত তাঁর ‘পিঞ্জরে বসিয়া’য় (পৃ: ৪৬-৪৭) কী লিখেছেন দেখা যাক। ‘ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মাতৃভক্তি তাঁর জীবনে একটি আলোকস্তম্ভের মতো। ভগবতী দেবীই ঈশ্বরচন্দ্রকে বহু যত্নে কারুণ্য ও কোমলতায় মণ্ডিত করেছিলেন বলে শোনা যায়। কথাটি অসত্য নয়। কিন্তু পুত্রবধূ দিনময়ী দেবীর কোনও স্থানই ওই বৃহৎ সংসারে ছিল না। রান্না আর ভাঁড়ার, যেখানে মেয়েদের জীবন কেটে যেত বলা চলে, সেখানে তিনি আজ্ঞাবাহী মাত্র ছিলেন। তরকারি কুটতেন, মানে আলু-পটলের খোসা ছাড়াতেন সেগুলো ডুমো ডুমো হবে না ফালি ফালি হবে, তা ভগবতী দেবী বলে দিতেন। থোড় আর মোচা দুটোর কোনটা রান্না হবে, তাও তিনি এসে নিজে স্থির করতেন। এই সব সংসারের তুচ্ছ খুঁটিনাটি বিদ্যাসাগরের পালিতা কন্যা শিবমোহিনীর মুখে আমরা বহু বার শুনেছি।’
দিনময়ী দেবী ভগবতী দেবী
তিনি আরও লিখেছেন, ‘এই বিদ্যাসাগরের সঙ্গ দিনময়ী দেবীর কপালে বিশেষ জোটেনি। বনফুলের বিদ্যাসাগর নাটকে দিনময়ী দেবীর নিঃসঙ্গতা ফুটে উঠেছে। দিনময়ী দেবী লেখাপড়া শিখবার ইচ্ছা প্রকাশ করা মাত্রই তৎক্ষণাৎ বিদ্যাসাগর সম্মত হন। আর পরদিনই শোওয়ার ঘরে বইখাতা জড়ো করেন। দিনের বেলায় অতি অল্প সময় বিদ্যাসাগর মশাই বাড়ি থাকতেন, তাই শোওয়ার ঘরে সকাল সকাল বউ-ছেলেকে একসঙ্গে দেখা মাত্রই ভগবতী দেবী বলে ওঠেন, সেই ভাল, ছেলে-বউ শেলেট-খড়ি নিয়ে মেতে থাকুক, আর আমি তাদের সংসার ঠেলি। বিদ্যারম্ভের শুরুতেই বিঘ্ন, ব্যাপারটা আর এগোতে পারেনি।
এখনও লাইনধারে!
স্মৃতি। এবং বর্তমান। লাইনচ্যুত জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের পাশে
ছুটে চলেছে ট্রেন। সরডিহা, ২০১১। ছবি: অমিত দত্ত
এপ্রিলের মাঝামঝি কিছু কাজে সম্বলপুর যাতায়াতের পথে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সরডিহা (বা সারদিয়া) স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসের দোমড়ানো-মোচড়ানো কোচগুলি লাইনের ধারে মাঠে পড়ে থাকতে দেখে মর্মাহত হলাম। ২৮-৫-’১০ তারিখে দুর্ঘটনা ঘটার এত দিন পরেও কোচগুলি এ ভাবে পড়ে আছে। রেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন রাখছি যে, এখনই যেন কোচগুলিকে লোকচক্ষুর আড়ালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
‘অতি ছিবলা ওই জিহ্বা...’
শ্রদ্ধেয় অশোক মিত্র মহাশয়ের বাগাড়ম্বর বিষয়ক লেখাটি (৩-৪) পাঠ করে রবীন্দ্রনাথের একটি লেখা থেকে কয়েকটি ছত্র স্মরণ করতে চাই। ‘জিহ্বা আস্ফালন’ শীর্ষক নিবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘...তাঁহারা মনে করেন পেট্রিয়ট হইতে হইলে হঠাৎ অত্যন্ত উন্মাদ হইয়া উঠিতে হইবে, হাত-পা ছুড়িতে হইবে, হুটোপাটি করিতে হইবে, যাহাকে যাহা না-বলিবার তাহা বলিতে হইবে। তাঁহারা মনে করেন, সফরীপুচ্ছের ন্যায় অবিরত ফরফরায়মান তাঁহাদের অতি লঘু, অতি ছিবলা ওই জিহ্বাটির জুরিসডিকশন সর্বত্রই আছে...।’
বিস্মৃত যামিনী রায়
গত ১৪ এপ্রিল যামিনী রায়ের জন্মের ১২৫ বছর পেরিয়ে গেল নিঃশব্দে। তাঁকে আমাদের মনে পড়ল না। যোগেন চৌধুরী ওই দিনই প্রকাশিত নিবন্ধে (চারটি তারার তিমির) ভারতশিল্পে আধুনিকতার অগ্রগণ্য বলতে চারটি নাম করেছেন রবীন্দ্রনাথ, রামকিঙ্কর, বিনোদবিহারী এবং নন্দলাল। অমৃতা শেরগিল ও অবনীন্দ্রনাথেরও উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আদ্যন্ত বাঙালি শিল্পী যামিনী রায়কে তাঁরও মনে পড়ল না। অথচ, ভারতশিল্পে আধুনিকতার ইতিহাসে তাঁর অবদান বহু-স্বীকৃত। তিনি গড়ে তুলেছিলেন স্বতন্ত্র এক শৈলী। যা রঙের জোরে আর রেখার বলিষ্ঠ টানে আদ্যন্ত আধুনিক এবং সে জন্যই স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের স্বীকৃতিলাভে ধন্য।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.