প্যান্টালুন্স-এর বিপণিগুলির সিংহভাগ মালিকানা হাতে নেওয়ার পথে পা বাড়াল আদিত্য বিড়লা ন্যুভো।
সোমবার এক বিবৃতিতে আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীভুক্ত সংস্থাটির দাবি, দেশ জুড়ে প্যান্টালুন্সের খুচরো বিপণিগুলির নিয়ন্ত্রণ হাতে নেওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে ১,৬০০ কোটি টাকা লগ্নি করছে তারা। এর মধ্যে ৮০০ কোটি
টাকা বিনিয়োগ করা হবে ঋণপত্রে (ডিবেঞ্চার)। মালিকানা হাতবদলের জন্য যা ইস্যু করবে কিশোর বিয়ানির ফিউচার গোষ্ঠীর সংস্থা প্যান্টালুন্স রিটেল ইন্ডিয়া (পিআরআইএল)। বর্তমানে প্যান্টালুন্স ব্র্যান্ড-নামের বিপণিগুলি রয়েছে এই সংস্থার অধীনেই। একই সঙ্গে, প্যান্টালুন্সের ওই সব বিপণির ৮০০ কোটি টাকা দেনার দায়ও ঘাড়ে নেবে আদিত্য বিড়লা ন্যুভো (এবিএনএল)। ফলে প্রাথমিক লগ্নির অঙ্ক দাঁড়াবে ১,৬০০ কোটি টাকা। |
|
|
কুমারমঙ্গলম বিড়লা |
কিশোর বিয়ানি |
|
এর পর পিআরআইএল থেকে বেরিয়ে আসবে প্যান্টালুন্স ব্র্যান্ড-নামের বিপণিগুলির এই ব্যবসা (প্যান্টালুন্স ফর্ম্যাট)। এবং তখন ৮০০ কোটির ডিবেঞ্চার ওই নতুন সংস্থার শেয়ারে বদলে নিতে পারবে এবিএনএল। একই সঙ্গে, সংস্থাটির আরও ২৬% শেয়ার কেনার জন্য খোলা প্রস্তাব দেবে তারা। এই সব কিছুর পর নয়া সংস্থায় তাদের মালিকানা অন্তত ৫০.০১ শতাংশে দাঁড়াবে বলে কুমারমঙ্গলম বিড়লার সংস্থাটির দাবি। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে ৮ থেকে ১০ মাস সময় লাগবে বলে মনে করছে দুই সংস্থাই। তবে ফিউচার গোষ্ঠীর দক্ষতা বিচার করে পরিচালনার ক্ষেত্রে তাদের যুক্ত রাখা হবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে এবিএনএল।
চেয়ারম্যান কুমারমঙ্গলম বিড়লা জানান, ফ্যাশনদুরস্ত ব্র্যান্ডেড জামা-কাপড় বিক্রির ক্ষেত্রে দেশের অন্যতম প্রধান সংস্থা হয়ে ওঠার লক্ষ্যেই অধিগ্রহণের এই উদ্যোগ। বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, ইতিমধ্যেই লুই ফিলিপ, ভ্যান হিউসেন, অ্যালেন সোলি, পিটার ইংল্যান্ডের মতো ব্র্যান্ড রয়েছে এবিএনএলের ঝুলিতে। ব্যবসা ছড়িয়ে রয়েছে মোট ১৬ লক্ষ বর্গ ফুটের বিপণিতে। এ বার তার সঙ্গে যোগ হবে প্যান্টালুন্সের প্রায় ২০ লক্ষ বর্গ ফুটের বিপণি-এলাকা (রিটেল স্পেস) এবং ওই ব্র্যান্ডের ক্রেতারাও। ফলে এ দেশে জামা-কাপড়ের খুচরো ব্যবসায় আরও বড় শক্তি হিসেবে উঠে আসবে তারা।
উল্টো দিকে, প্যান্টালুন্স বিক্রির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে শেয়ার বাজার। এই খবরে এ দিন পিআরআইএলের শেয়ার দর এক লাফে বেড়েছে ৯.২৫%। বিশেষজ্ঞদের মতেও, ফিউচার গোষ্ঠীর তরফ থেকে তাদের কোনও ব্যবসা বা কোনও ব্যবসার অংশীদারি বিক্রির ঘোষণা ছিল প্রায় সময়ের অপেক্ষা। কারণ, এখন প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার ঋণের বোঝা চেপে রয়েছে বিয়ানির ফিউচার গোষ্ঠীর মাথায়। যার মধ্যে ৪,৮০০ কোটি রয়েছে শুধু খুচরো ব্যবসাতেই। তাই তাদের যথেষ্ট স্বস্তি দেবে এবিএনএলের এই বিনিয়োগ। যাকে এ দিন স্বাগত জানান বিয়ানি-ও।
১৯৯৭ সালে গড়িয়াহাটে প্যান্টালুন্সের বিপণি খুলেই খুচরো ব্যবসায় প্রথম পা রেখেছিলেন কিশোর বিয়ানি। পরে তাঁর হাত ধরেই একে একে এসেছে বিগ বাজার, ফুড বাজার, ই-জোন, সেন্ট্রাল, হোম টাউনের মতো রিটেল চেন। অনেকেরই মতে, ভারতের খুচরো ব্যবসার ছবি বদলে গিয়েছে ফিউচার গোষ্ঠীর হাত ধরে। আর মাঝের এই সময়ে ৩৫টি শহরে ছড়িয়ে গিয়েছে প্যান্টালুন্সের বিপণি। ৬৫টি বিপণি এবং ২১টি ফ্যাক্টরি আউটলেট খুলেছে ২০ লক্ষ বর্গ ফুট জুড়ে। আর আজ এই বিপণি-চেনেরই নিয়ন্ত্রণ পকেটে পুরতে পা বাড়িয়ে দিল কুমারমঙ্গলমের এবিএনএল। |