টানা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য দফতরের গাড়ি ভাঙচুর করে কর্মীদের আটকে রাখার অভিযোগ উঠল চাষিদের বিরুদ্ধে। শনিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে মালদহের দক্ষিণ নৈকান্দায়। বাসিন্দাদের একাংশ বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির কর্মীদের নিগৃহীত করেন বলেও অভিযোগ। দু’ঘন্টা ধরে আটক হয়ে থাকার পর পুলিশ গিয়ে ওই কর্মীদের উদ্ধার করে। বোরো চাষি সহ বাসিন্দাদের অভিযোগ, বোরো চাষের ভরা মরসুমে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লাগাতার বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার দাবিতে কয়েকদিন আগে ৫ ঘন্টা ধরে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান চাষিরা। সেই সময় আশ্বাস দেওয়া হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার টানা দু’দিন ধরে গোটা এলাকায় লোডশেডিং হয়। শনিবার রাত ৯টা নাগাদ ওই এলাকায় যান বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির ৪ কর্মী। সেখানেই কর্মীদের সামনে পেয়ে গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন বাসিন্দারা। চাঁচলের আইসি জ্যোতিষ রায় বলেন, “বোরো চাষের মরসুমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে বহু এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যেই ক্ষোভ রয়েছে। রাতে কর্মীরা এলাকায় গেলেও আমাদের কিছু জানানো হয়নি। পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। ছাড়া পেয়েই কর্মীরা পুলিশে কিছু না জানিয়েই কার্যত পালিয়ে যান।” পুলিশে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি বলেও আইসি জানিয়েছেন। বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির মালদহের ডিভিশনাল ম্যানেজার দীপক মন্ডল বলেন, “রাতে যারা ওই এলাকায় গিয়েছিলেন তারা এখনও আমাদের কিছু জানাননি। ওদের কাছে বিস্তারিত জানার পর পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে। আর রাতে ওই এলাকায় কেন পুলিশকে না জানিয়ে ওরা গেলেন, স্টেশন ম্যানেজারের কাছে তা জানতে চাইব।” বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির গাড়ির চালক প্রশান্ত দাস, কর্মী চঞ্চল মন্ডল বলেন, “সমস্যা মেটাতেই আমরা ওখানে যাই। বাসিন্দারা বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কথা বলে আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করে। সবাইকে আটকে রেখে ধাক্কাধাক্কি করে। আমরা দফতরকে সব জানাব।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, দু’প্তাহের মধ্যে বোরো ধানের শিষ বের হবে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেচের অভাবে বিঘার পর বিঘা ধান লাল হয়ে শুকোতে বসেছে। কিছুদিন ধরে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল। সমস্যা মেটাতে রাতে কর্মীরা রাতে ওই এলাকায় যান। বোরো চাষের মরসুমে কেন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা হল তা নিয়েই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বাসিন্দারা। বাসিন্দা ও বোরো চাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান ও জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ দফতরের কর্মাধ্যক্ষও। প্রধান মহবুবুল হক বলেন, “বোরো ধানের জমি ফেটে গিয়েছে। পাশাপাশি গরমে বাড়িতে থাকাও দায়। জমিতে জল দিতে না পেরে বোরো চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। ফলে ক্ষোভ হওয়াটাই স্বাভাবিক।” জেলা পরিষদের বিদ্যুৎ দফতরের কর্মাধ্যক্ষ মানজারুল ইসলাম বলেন, “চাষিদের কথা বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির মাথায় রাখা উচিত।” |