তৃণমূলের চাপে পুলিশ দলীয় নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় ‘মিথ্যা মামলা’ দায়ের করছে অভিযোগ তুলে আন্দোলনে নামল কংগ্রেস। শনিবার সন্ধ্যায় দলের কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে রায়গঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে। অবিলম্বে দলীয় নেতাদের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে শহর জুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে নামা হবে বলে রবিবার দলের তরফে হুমকি দেওয়া হয়। রায়গঞ্জের ডিএসপি অম্লান ঘোষ বলেন, “পুলিশের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ ওঠা নতুন কিছু নয়। তবে পুলিশ আইন অনুযায়ী কাজ করছে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসূতিকে রেফার করা নিয়ে হেনস্থার অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা হাসপাতালের সহকারী সুপারের ঘরে এক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেসের একদল কর্মী সমর্থক। বিক্ষোভ চলাকালীন রায়গঞ্জ পুরসভার তৃণমূল কাউন্সিলর তথা রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য কেয়া চৌধুরীর সঙ্গে কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকদের বচসা হয়। পরে কেয়া দেবী রায়গঞ্জ বিধানসভা যুব কংগ্রেস কমিটির সভাপতি অভিজিত সাহা, তুষারকান্তি গুহ ও কাউন্সিলর সিগার দাস-সহ ২৫ জন কংগ্রেস কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ওই যুব কংগ্রেস নেতা কর্মীদের ৩৪১, ৩৫৩, ৫০৬ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করে। তার মধ্যে সরকারি কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগে ৩৫৩ ধারা জামিন অযোগ্য। অভিজিতবাবুও কেয়া দেবী ও এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ জানান। পুলিশ কেয়া দেবী-সহ ওই তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে জামিনযোগ্য ৪২৭, ৩৪১, ৩২৩ ও ৫০৬ ধারায় মামলা দায়ের করে বলে অভিযোগ। কেয়া দেবীর দাবি, “মহিলা কমিশনের নির্দেশে ওই দিন রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে বধূ নির্যাতনের মামলায় নির্যাতিতা এক মহিলার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কংগ্রেসের একদল নেতা কর্মী সহকারী সুপারের ঘরে চিকিৎসককে ঘেরাও করে বিক্ষোভের নামে হেনস্থা করছেন দেখতে পাই। কমিশনের সদস্য হিসেবে বিষয়টি জানার জন্য আমি ওই ঘরে ঢুকলে কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকেরা আমাকে হেনস্থা ও গালাগালি করে বাইরে বেরিয়ে যেতে বলে।” অভিজিতবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “বিক্ষোভ চলাকালীন কেয়া দেবী দলের কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সহকারী সুপারের ঘরে অনধিকার প্রবেশ করেছিলেন। তাঁর কিছু জানার থাকলে আমরা হাসপাতাল ছেড়ে বার হয়ে যাওয়ার পরেও সেখানে তিনি যেতে পারতেন। রায়গঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও অভিযুক্তরা শাসক দলের নেত্রী ও কর্মী হওয়ায় পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে লঘু ধারায় মামলা করল। অথচ তৃণমূলের চাপে পুলিশ আমাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করেছে।” রায়গঞ্জ লোকসভা যুব কংগ্রেস কমিটির সভাপতি মানসকুমার ঘোষ বলেন, “পুলিশের পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে এসেছে। অবিলম্বে কংগ্রেস নেতাদের ওপর থেকে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা না হলে রায়গঞ্জে বনধ ডাকার পাশাপাশি অনির্দিষ্টকালের জন্য জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হবে।” |