তৃণমূলের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগ তুলে গোপালনগরের শ্রীপল্লি প্রিয়নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াল সিপিএম। এই পরিস্থিতিতে ৬টি আসনেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। একই অভিযোগ তুলে বাগদার আমডোব হাইস্কুলেও ভোট প্রক্রিয়া থেকেও সরে দাঁড়ায় সিপিএম। এখানেও সব ক’টি আসনে জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে তৃণমূল প্রার্থীদের। দু’টি ক্ষেত্রেই সন্ত্রাসের অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূল নেতৃত্ব।
শ্রীপল্লি প্রিয়নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটি গত প্রায় তিরিশ বছর ধরে সিপিএমের হাতে। বিরোধীরা পরাজয়ের পরে বরাবর সিপিএমের বিরুদ্ধে এখানে ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগ তুলে এসেছে। এ বার পরিস্থিতি একেবারে উল্টো। সন্ত্রাসের অভিযোগ করছে সিপিএমই!
ভোটকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষই ‘প্রস্তুতি’ নিয়েছিল যথেষ্ট। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার, পথসভা কিছুই বাদ পড়েনি। সিপিএমের অভিযোগ, শুক্রবার থেকে বাইরের সমাজবিরোধীদের এলাকায় জড়ো করে তৃণমূল। সিপিএমের বনগাঁ জোনাল কমিটির সম্পাদক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, “শুক্রবার রাতে ওই স্কুলের পরিচালন কমিটির বিদায়ী সম্পাদক তথা আমাদের জোনাল কমিটির সদস্য দীনবন্ধু চক্রবর্তীর বাড়িতে গিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়।” ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার থানায় স্মারকলিপি দিয়েছিল সিপিএম। সিপিএম নেতৃত্ব দাবি করেছেন, শনিবার রাত থেকে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে। স্কুলের সামনে ১৪৪ ধারা ভেঙে এ দিন সশস্ত্র সমাজবিরোধীদের নিয়ে মিছিলও করে তৃণমূল। সিপিএমের পোলিং এজেন্ট ব্রজগোপাল সর্দারকে ‘অপহরণ’ করা হয় বলেও অভিযোগ। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য দুলাল মণ্ডল বলেন, “দুষ্কৃতীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে স্কুলের গেটের সামনে দখল নেয়। এই পরিস্থিতিতে আমরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যোগ দিলে প্রাণনাশের আশঙ্কা ছিল। সে কারণে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হই।”
পুলিশ অবশ্য সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছে। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার চম্পক ভট্টাচার্য বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেট, এসডিপিও-সহ র্যাফ এলাকায় ছিল। যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।” ১৪৪ ধারা ভাঙার মতো কোনও ঘটনা ঘটেছে বলেও মানতে চাননি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অরবিন্দ ঘোষ।
বনগাঁ উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “সন্ত্রাসের কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে শুনিনি। হারের ভয়ে ওরা পালিয়ে গিয়েছে।” বিধায়কের অভিযোগ, ইতিপূর্বে ওই স্কুলের ভোটে বরাবর সন্ত্রাস করে এসেছে সিপিএম। বোমাবাজি করা হত। ভোটারদের গ্রাম থেকে বেরোতেই দেওয়া হত না।
আমডোব হাইস্কুলের প্রসঙ্গে সিপিএমের বাগদা লোকাল কমিটির সম্পাদক সুনীল করের বক্তব্য, “ভোট শুরুর আগে থেকেই জমায়েত করেছিল তৃণমূল। গাড়ি থেকে আমাদের ভোটারদের জোর করে নামিয়ে নেওয়া হয়।” বাগদার তৃণমূল নেতা তরুণ ঘোষ বলেন, “সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। ভোট দিতে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত আবেগ দেখে ওরা ভয় পেয়েছে।” |