ছবি না এঁকে ক্লাসের অন্যদের বিরক্ত করছিল সে। সেই ‘অপরাধে’ তাকে স্কেলের বাড়ি মেরে রক্তপাত করার অভিযোগ উঠল অঙ্কনশিক্ষকের বিরুদ্ধে। বসিরহাট থানার ভ্যাবলা-তাঁতিপাড়ায় রবিবার সকালে ওই ঘটনায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছেন দেবজ্যোতি রপ্তান নামে চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রের কাকা। আহত ওই ছাত্রকে চিকিৎসার জন্য বসিরহাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সুদীপ হালদার নামে ওই অঙ্কনশিক্ষক বসিরহাটের ট্যাঁটরায়। ছোটদের আঁকা শেখানোই পেশা। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা শতাধিক। দেবজ্যোতি ও তার কাকার ছেলে ইন্দ্রাভ ওখানে আঁকা শেখে। এ দিন ক্লাসে সুদীপবাবু সবাইকেই ‘সিনারি’ আঁকতে দেন। ছাত্রদের আঁকতে দিয়ে তিনি পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করছিলেন। অভিযোগ, নিজে না এঁকে দেবজ্যোতি অন্যদের বিরক্ত করছিল। সুদীপবাবুর বক্তব্য, “কয়েকবার বারণ করা সত্ত্বেও কথা শুনছিল না দেবজ্যোতি। বাধ্য হয়ে ওকে স্টিলের স্কল দিয়ে চার-পাঁচ ঘা মারি। |
প্রহৃত ছাত্র। ছবি: নির্মল বসু। |
তাতে হাতে কালশিটে পড়লেও রক্ত বের হয়নি। পরে শুনেছি সাইকেল থেকে পড়ে ওর হাত কেটে গিয়েছে। তবে ওকে ওভাবে মারাটা আমার অন্যায় হয়েছে। কাজটা ঠিক হয়নি। আমি এ জন্য অনুতপ্ত।”
যদিও দেবজ্যোতির বাবা-মা সে কথা মানতে নারাজ। ঘটমার পরে দুই ভাইকেই ওই স্কুলে থেকে ছাড়িয়ে আনেন কাকা পরিতোষবাবু। পেশায় শিক্ষিকা দেবজ্যোতির মা কৌশল্যাদেবী বলেন, “শিক্ষকতার কারণে আমাকে বাইরে থাকতে হয়। ছেলেটা যাতে অন্যদের সঙ্গ পায় সে জন্যই ওকে আঁকার স্কুলে ভর্তি করা। তা বলে শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে কী এই সম্পর্ক হওয়ার কথা।”
মাস্টারমশায় কেন মারলেন প্রশ্ন করায় দেবজ্যোতি বলে, “মাস্টারমশায় আমাদের একটা সিমারি আঁকতে দিয়ে অন্য কাজ করছিলেন। আমি পাশে বসা ইব্রাহিমের কাছে ছবিতে কি রং দেব তা জানতে চাইছিলাম। হঠাৎ মাস্টারমশাই রেগে চিৎকার করে উঠে আমাকে লোহার স্কেল দিয়ে মারতে থাকেন। আমি ‘লাগছে’ বলায় আরও রেগে যান।” পরিতোষবাবু বলেন, “একজন শিক্ষক যদি এতটা অসহিষ্ণু হন, তাহলে ছাত্রেরা কি শিখবে? তাই আমরা ঠিক করেছি ওঁর কাছে আর ছেলেদের পাঠাব না।” |