তাঁরা মাওবাদীদের ‘নিশানা’। এ কারণেই সাবধানে থাকা দরকার। বিহারে মাওবাদী প্রভাবিত ৮টি জেলার পুলিশ সুপারকে এ কথা জানিয়ে সতর্ক করে দিল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা শাখা। এ অবস্থায় কী করতে হবে, তার নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে তাঁদের কাছে।
এডিজি (সদর) রবীন্দ্র কুমার বলেন, “মাওবাদী প্রভাবিত জেলার কয়েকজন পুলিশ সুপারের কাছে সতর্কতার ব্যাপারে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। এর বেশি কিছু বলা যাবে না।” এই সতর্কতা কেন তা নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও পুলিশের এক উচ্চপদস্থ অফিসার জানান, রাজ্যে মাওবাদীদের কয়েকজন শীর্ষ নেতার গ্রেফতার এবং স্কোয়াড সদস্যের মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতেই সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকতে
বলা হয়েছে।”
সম্প্রতি ছত্তীসগঢ়ের সুকমার জেলাশাসক অপহৃত হওয়ায় বিহার সরকার প্রশাসনের কর্তাদের ব্যাপারে ‘অতি সতর্কতা’ চাইছে। বিহারের ৩৮ জেলার মধ্যে ৩৩টি মাওবাদী প্রভাবিত। এদের মধ্যে ৮ পুলিশ সুপারকে নিয়ে রাজ্য সরকার বিশেষ ভাবে উদ্বিগ্ন। রাজ্যের মাওবাদী শীর্ষ নেতাদের যে ভাবে ওই পুলিশ সুপাররা ধরপাকড় করেছেন তাতেই এই সতর্কতার প্রয়োজন বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজ্য গোয়েন্দা দফতর জানতে পেরেছে, সীতামঢ়ী এবং শেওহর জেলার পুলিশ সুপার যথাক্রমে বিবেক কুমার ও নাতাশা গুড়িয়ার বিরুদ্ধে মাওবাদীরা তাদের বক্তব্য রীতিমতো ছাপিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে প্রচার করেছে। ওই দু’জনের প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়েছে। নাতাশাকে ইতিমধ্যে শেওহর থেকে গোপালগঞ্জ জেলায় বদলি
করা হয়েছে।
রাজ্য গোয়েন্দা দফতর থেকে জানানো হয়েছে, গয়া, বাঁকা, জামুই, রোহতাস, ঔরঙ্গাবাদ, অরওয়াল, শেওহর এবং সীতামঢ়ী জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে নির্দেশিকা পাঠানো হয়ছে। তাতে বলা হয়েছে, মাওবাদীরা এই সব পুলিশ সুপারদের ‘নিশানা’ করেছে। মাওবাদীদের রাজ্যের শীর্ষ নেতা জগদীশ মাস্টার ওরফে মাস্টারজিকে গয়ার পুলিশ সুপার বিনয় কুমার গ্রেফতার করার পরে তিনি ওই সংগঠনের ‘লক্ষ্য’ হয়ে উঠেছেন। উল্লেখ্য, রাজ্য সরকার মাস্টারজির মাথার দাম ২ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছিল।
রোহতাসের পুলিশ সুপার মনু মহারাজ মাওবাদীদের খতম তালিকার প্রথম দিকে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে মাওবাদীদের তিন স্কোয়াড সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল। গত এক বছরে এই জেলা থেকে ১২০ জন মাওবাদী সমর্থক এবং ১৫ জন নেতাকে জেল-বন্দি করা হয়েছে। সম্প্রতি রোহতাস পুলিশ কৈমুর থেকে মাওবাদী মুছে ফেলার জন্য ‘অপারেশন বিশ্বাস’ নামে একটি অভিযান শুরু করেছে। যার নেতৃত্বে আছেন
মনু মহারাজই।
এ বাপারে মনু মহারাজের প্রতিক্রিয়া, “গোয়েন্দা দফতর মাঝে-মধ্যেই আমদের সতর্ক করে। এটাও তাই। আমরা সকলেই সতর্কতার সঙ্গে কাজ করি।” অন্য দিকে, ঔরঙ্গাবাদের পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ জৈন বলেন, “ভয়ে তো আমরা অফিসে বসে থাকতে পারি না। কাজ করতে হবে। সতর্ক হয়েই কাজ করছি।” |