মোবাইলের ব্যবহারে ক্যানসার হতে পারে, এত দিন এই তত্ত্বেই মোটামুটি বিশ্বাস করে এসেছেন বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষ। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন, সর্বক্ষণের এই ‘সঙ্গী’টিকে দূরে রাখুন। তবে এক সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, মোবাইল ব্যবহার করলেই যে ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ে, তা নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না।
কিছু দিন ধরে এই বিষয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছিল ব্রিটেনের একটি স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংস্থা। মোবাইল ব্যবহারের সঙ্গে ক্যানসারের সম্পর্ক নিয়ে এখন পর্যন্ত যে ক’টি সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলিরই পর্যালোচনা করছিলেন এই সংস্থার গবেষকেরা। সেটা করতে গিয়েই বেশ কিছু অসঙ্গতি তাঁদের চোখে পড়ে। দেখা যায়, খুব অল্প সংখ্যক সমীক্ষাতেই ক্যানসার এবং মোবাইল ব্যবহারের মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে। যেমন, বছর দু’য়েক আগে প্রকাশিত ‘ইন্টারফোন’ সমীক্ষাতে দাবি করা হয়েছিল, যাঁরা খুব বেশি মোবাইল ব্যবহার করেন, তাঁদের মধ্যে ‘গ্লিয়োমা’ নামে এক ধরনের ব্রেন ক্যানসারের সম্ভাবনা বাকিদের তুলনায় প্রায় চল্লিশ শতাংশ বেশি। তবে, অধিকাংশ সমীক্ষাই এই ধরনের কোনও সম্পর্ক প্রমাণ করতে পারেনি বলে জানান ওই গবেষকেরা।
সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক অ্যান্টনি সোয়ের্ডলোর মতে, “বিভিন্ন দেশে ব্রেন টিউমারের প্রবণতা কী রকম, সেটা বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে মোবাইল ফোনের সঙ্গে ক্যানসারের কোনও সম্পর্ক আছে কি না।” তাঁর মতে, এ ধরনের সমীক্ষায় আরও দেখা উচিত যে, যাঁরা বেশি মোবাইল ব্যবহার করেন, অন্যদের তুলনায় তাঁদের মধ্যে ব্রেন টিউমার বেশি ধরা পড়ছে কি না। যাঁদের নিয়ে সমীক্ষা করা হচ্ছে, তাঁদের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য কী রকম, তারও উল্লেখ করতে হবে। এই সূচকগুলিই বলে দেবে, মোবাইল এবং ক্যানসারের মধ্যে আদৌ কোনও সম্পর্ক আছে কি না।
আগের মতোই শিশুদের মোবাইল থেকে দূরে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সংস্থার ডিরেক্টর অধ্যাপক জন কুপারের কথায়, “মোবাইলের প্রযুক্তি তুলনামূলক ভাবে নতুন ধরনের। ফলে এর সম্পর্কে বিশদে না জানা পর্যন্ত সাবধানে থাকাই ভাল।” |